অন্ডাল, 8 ফেব্রুয়ারি: ফের ধসের কবলে খনি অঞ্চল অন্ডাল (Again Landslide hits in Andal) । দীর্ঘদিন ধরে অন্ডালে একের পর এলাকায় ধসের ঘটনা ঘটছে। বছর দু'য়েক ধরে অন্ডালের হরিশপুর গ্রামে ধসের আতঙ্কে ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের ৷ আজও তারা গ্রাম ছাড়া । অভিযোগ, ইসিএলের দরজায় দরজায় ঘুরেও মেলেনি পুনর্বাসন । তাই আজও বাধ্য হয়েই আতঙ্কের মধ্যেই এই সমস্ত এলাকায় বাস করতে বাড়ি ফিরছেন গ্রামের বেশ কিছু মানুষ । এর মধ্যেই অন্ডালের পড়াশকোল এলাকায় ধসের ঘটনা সামনে এল ।
বুধবার আবার ধসের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে অন্ডালের মুকুন্দপুর 4 নম্বর কোড়াপাড়া এলাকায় । স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, মুকুন্দপুর এলাকার একটা পরিত্যক্ত খনি এটি ৷ 2018 সাল থেকে খনিটি বন্ধ রয়েছে ৷ খনির জল নিষ্কাশনের জন্য পাম্প লাগানো হয়েছিল । মঙ্গলবার পাম্প লাগানোর পরে হঠাৎ ধস নামে । গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, পাম্প লাগানোর ফলেই ধসের ঘটনা ঘটেছে এলাকায় । স্থানীয় বাসিন্দা সুমিতা কোড়া, তপন কোড়া ও সীমান্ত কোড়ারা জানান, বন্ধ কোলিয়ারির জল নিষ্কাশনের জন্য যে পাম্প লাগানো হয়েছিল ৷ সে কারণেই এলাকায় ধস হয়েছে ।
অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তারা এই এলাকায় বাস করছেন । কিন্তু এখানে ধসের ঘটনা এই প্রথম সামনে এল। আনুমানিক মুকুন্দপুর 4 নম্বর কোড়া পাড়া এলাকা থেকে মাত্র চল্লিশ মিটার দূরে ধসের ঘটনায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা । ঘটনার জেরে উত্তেজিত গ্রামবাসীরা বুধবার সকালে ইসিএলের অস্থায়ী পাম্প হাউসে এসে ঘেরাও করেন । বন্ধ কোলিয়ারির এজেন্টর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন তাঁরা ৷ কিন্তু তাদের সঙ্গে কেউ দেখা করে না বলেই অভিযোগ । খনি অঞ্চলে বারবার এই ধসের কারণে ইসিএল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠছে । স্থানীয় বাসিন্দারা ইসিএল-এর বিরুদ্ধে আগামিদিনে বৃহত্তর আন্দোলন করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোশীমঠের ঘটনার পর রানিগঞ্জ এলাকার ধস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন । মুখ্যমন্ত্রীর সেই উদ্বেগের পরে পরেই রানিগঞ্জ বিধানসভা এলাকার অন্ডাল অঞ্চলে বারবার ধসের ঘটনা ঘটছে ৷ এর ফলে এলাকাবাসীদের মতে, পর পর ঘটনাগুলি প্রমাণ করছে মুখ্যমন্ত্রীর যে উদ্বেগ তা অমূলক নয় । বুধবার সকাল থেকেই মুকুন্দপুরের বাসিন্দারা ধস কবলিত এলাকা দেখতে যান । অবিলম্বে পরিত্যক্ত খনির জল পাম্প দিয়ে বের করার যে কাজ চলছিল, তা বন্ধ করে দেওয়ার জোরালো আওয়াজ তুলেছেন তারা । ওই অঞ্চলে পরিত্যক্ত কয়লাখনিগুলিতে ঠিকমতো বালি প্যাকিং করা হয় না বলে আশপাশের অঞ্চলগুলিতে বারবার ধস দেখা যায় বলেও অভিযোগ উঠেছে ।
আরও পড়ুন: ধাণ্ডারডিহি গ্রামের পুকুরে আবার ধস, আতঙ্কে গ্রামবাসীরা