ETV Bharat / state

হার মেনেছে অন্ধত্ব, খুদে পড়ুয়াদের হাত ধরে রোজ স্কুলে যান "মাস্টারদাদু"

অবসরের পরও রোজ স্কুলে যান তিনি । হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তিও । কিন্তু, তাতে কী ? কাঁকসার বিষ্ণুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক রবিলাল গড়াইয়ের কাছে এসব কোনও বাধাই নয় । খুদে পড়ুয়াদের হাত ধরে পায়ে পায়ে পৌঁছে যান স্কুলে । নিয়ম করে ক্লাস নেন তিনি ।

ক্লাসে পড়াচ্ছেন রবিলাল গড়াই
author img

By

Published : Sep 5, 2019, 2:21 PM IST

Updated : Sep 5, 2019, 3:25 PM IST

কাঁকসা, 5 সেপ্টেম্বর : অবসর নিয়েছেন প্রায় 12 বছর আগে । হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি । কিন্তু, তাতে কী? কাঁকসার বিষ্ণুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক রবিলাল গড়াইয়ের কাছে এসব কোনও বাধাই নয় । খুদে পড়ুয়াদের হাত ধরে পায়ে পায়ে পৌঁছে যান স্কুলে । প্রার্থনার পর শুরু হয় ক্লাস । ছাত্র-ছাত্রী নয়, ওদের নাতি-নাতনির চোখে দেখেন "মাস্টারদাদু" ।

দীর্ঘ 27 বছর ধরে ছাত্র পড়িয়েছেন । 2007 সালে অবসর নেন রবিলাল গড়াই । কিন্তু, খুদে পড়ুয়াদের জীবন গড়ার নেশা কাটাতে পারেননি । রোজ আসতেন স্কুলে । পড়াতেন ওদের । এদিকে, অবসরের কিছুদিন পরই শুরু হয় চোখের সমস্যা । চিকিৎসা করিয়েও মেলেনি কোনও সুরাহা । 2011 সালে দৃষ্টিশক্তি হারান । খুদেরা ভেবেছিল, আর বোধহয় আসবেন না মাস্টারদাদু । কিন্তু, সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন রবিলালবাবু । খুদে পড়ুয়াদের হাত ধরে রোজ স্কুলে আসেন তিনি । প্রার্থনার পর শুরু করেন নিয়মমাফিক ক্লাস ।

teacher
পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রার্থনা

অবসরগ্রহণের পর দীর্ঘ 12 বছর ধরে স্কুলে পড়িয়ে যাচ্ছেন । কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই পড়ান ? উত্তরে রবিলালবাবু বলেন, "যা পেনশন পাই তাতেই বেশ চলে যায় । আর ওরা তো আমার ছাত্র-ছাত্রী নয়, ওরা তো নাতি-নাতনি ।"

ভিডিয়োয় শুনুন রবিলাল গড়াইয়ের বক্তব্য

এই সংক্রান্ত খবর : 'ছুটি' দেয়নি পড়ুয়ারা, গরমের ছুটিতেও পড়ান "প্রিয় মাস্টারমশাই"

স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাপি হাজরা বলেন, "মাস্টারমশাই রবিলালবাবু রোজ স্কুলে আসেন । কোনওদিন বাচ্চাদের হাত ধরে আবার কোনওদিন আমরা বাড়ি থেকে নিয়ে আসি । উনি খুদে পড়ুয়াদের খুবই ভালোবাসেন ।"

কাঁকসা, 5 সেপ্টেম্বর : অবসর নিয়েছেন প্রায় 12 বছর আগে । হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি । কিন্তু, তাতে কী? কাঁকসার বিষ্ণুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক রবিলাল গড়াইয়ের কাছে এসব কোনও বাধাই নয় । খুদে পড়ুয়াদের হাত ধরে পায়ে পায়ে পৌঁছে যান স্কুলে । প্রার্থনার পর শুরু হয় ক্লাস । ছাত্র-ছাত্রী নয়, ওদের নাতি-নাতনির চোখে দেখেন "মাস্টারদাদু" ।

দীর্ঘ 27 বছর ধরে ছাত্র পড়িয়েছেন । 2007 সালে অবসর নেন রবিলাল গড়াই । কিন্তু, খুদে পড়ুয়াদের জীবন গড়ার নেশা কাটাতে পারেননি । রোজ আসতেন স্কুলে । পড়াতেন ওদের । এদিকে, অবসরের কিছুদিন পরই শুরু হয় চোখের সমস্যা । চিকিৎসা করিয়েও মেলেনি কোনও সুরাহা । 2011 সালে দৃষ্টিশক্তি হারান । খুদেরা ভেবেছিল, আর বোধহয় আসবেন না মাস্টারদাদু । কিন্তু, সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন রবিলালবাবু । খুদে পড়ুয়াদের হাত ধরে রোজ স্কুলে আসেন তিনি । প্রার্থনার পর শুরু করেন নিয়মমাফিক ক্লাস ।

teacher
পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রার্থনা

অবসরগ্রহণের পর দীর্ঘ 12 বছর ধরে স্কুলে পড়িয়ে যাচ্ছেন । কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই পড়ান ? উত্তরে রবিলালবাবু বলেন, "যা পেনশন পাই তাতেই বেশ চলে যায় । আর ওরা তো আমার ছাত্র-ছাত্রী নয়, ওরা তো নাতি-নাতনি ।"

ভিডিয়োয় শুনুন রবিলাল গড়াইয়ের বক্তব্য

এই সংক্রান্ত খবর : 'ছুটি' দেয়নি পড়ুয়ারা, গরমের ছুটিতেও পড়ান "প্রিয় মাস্টারমশাই"

স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাপি হাজরা বলেন, "মাস্টারমশাই রবিলালবাবু রোজ স্কুলে আসেন । কোনওদিন বাচ্চাদের হাত ধরে আবার কোনওদিন আমরা বাড়ি থেকে নিয়ে আসি । উনি খুদে পড়ুয়াদের খুবই ভালোবাসেন ।"

Intro:দুর্গাপুর:অবসরগ্রহনের দীর্ঘ একদশকের বেশী সময় পরেও দৃষ্টিহীন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আজও প্রতিদিন সময়ে স্কুলের টানে আর ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা শেখানোর টানে বিদ্যালয়ে আসেন।শিক্ষক দিবসের দিনে এমন এক শিক্ষকের খোঁজ ইটিভি ভারত এর।।

দুর্গাপুরের কাঁকসার জঙ্গলঘেরা মলানদিঘীর প্রত্যন্ত বিষ্ণুপুর বা বিষ্টুপুর গ্রাম।এই গ্রামের বিষ্ণুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আজ থেকে ১২ বছর আগে প্রধান শিক্ষক রবিলাল গরাই চাকুরী জীবন থেকে অবসর গ্রহন করেন।কাঁকসার মলানদিঘীর বিস্টুপুর গ্রামেই বাস করেন এই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।৭০এর গন্ডি পেরিয়েছেন।অবসর গ্রহনের পরে চোখের সমস্যায় ভুগতে থাকেন।এবং তিনি অবসর গ্রহনের ৪ বছরের মধ্যে সম্পুর্ণ দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন।কিন্তু বিরাম নেননি শিক্ষকতা থেকে। স্কুল আর ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি গভীর ভালোবাসার টানে প্রত্যেকদিন যান স্কুলে।অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার আগে থেকেই চোখের সম্যসাই ভুগছিলেন রবিলালবাবু।পরে চিকিৎসা করিয়েও কোনো কাজে আসেনি,ক্রমে ক্রমে একদম দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন অবসর নেওয়ার পর।চোখের দৃষ্টিশক্তি হারালেও তিনি মনের দৃষ্টিশক্তিকে খোয়াননি।সেইজন্য গ্রামের স্কুলের পড়ুয়া ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চা ছেলেদের হাত ধরেই স্কুলে পৌঁছে যান।বাচ্চা ছাত্র ছাত্রীদের পড়ান তাদের সাথে গল্প করেন।তারপর আবার বাচ্চা ছাত্রদের হাত ধরে বাড়ি ফিরে আসেন।তাদেরকে তিনি নিজের নাতী-নাতনী বলেন।বর্তমানে এই স্কুলের শিক্ষকরা জানান মাস্টারমশাই প্রতিদিন স্কুলে আসেন,মাস্টারমশাই সব সময় স্কুলের প্রতি খেয়াল রাখেন।মাস্টারমশাই দৃষ্টিহীন হলেও উনি একদম আমাদের মতোই সচল।তিনি অবসর নিয়েছেন প্রায় ১২বছর আগে কিন্তু স্কুলকে তিনি এক মুহূর্ত্তের জন্যও ভুলতে পারেননি।রবিলালবাবু জানান আমার নাতি নাতনিরা হাত ধরে স্কুলে নিয়ে আসে আবার হাত ধরে বাড়ি নিয়ে যায়।মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া অবসরের পর যেটুকু পেনশন পায় তাতেই চলে যায়।আমি এই স্কুলে ২৭ বছর চাকরি করেছি,তারপর অবসর নেওয়ার পর ও প্রত্যেকদিন স্কুলে এসেছি।অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার চারবছর পর থেকে একদম আমি দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ি।স্কুলের বর্তমান মাস্টারমশাইরা আমাকে খুব শ্রদ্ধা করেন।এই ভাবেই স্কুল ছাত্রছাত্রী ও মাস্টারমশাইদের নিয়ে আমি আমার বাকি জীবনটা পার করতে চাই।সংবাদমাধ্যম আজ আমার এই কথা তুলে ধরার জন্য এগিয়ে এলো এটার জন্য সংবাদমাধ্যমকে অসংখ্য ধন্যবাদ।স্কুলের প্রত্যেকটি গাছ এই শিক্ষকের হাতেই লাগানো।স্কুলের শিক্ষক সংখ্যা কম।এই অবসরপ্রাপ্ত দৃষ্টিহীন হয়ে পড়া প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক যে সেই শিক্ষক সমস্যাও মেটাচ্ছেন সেটাও দেখার।এখন শিক্ষকদের কে সম্মানিত করছে রাজ্য সরকার।কিন্তু গ্রামবাঙলার জঙ্গলের আড়ালে নীরবে রয়ে যাওয়া এমন শিক্ষকদের গৌরবগাঁথা আড়ালেই রয়ে যায়।
বর্তমানের স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাপী হাজরা জানান আমি যখন থেকে এই স্কুলে আসি তার আগে থেকে মাস্টারমশাই রবিলালবাবু এই স্কুলে আসতেন।কোনোদিন বাচ্চাদের হাত ধরে,আবার কোনোদিন আমরা বাড়ি থেকে নিয়ে আসি।রবিলালবাবু ক্ষুদে পড়ুয়াদের ও আমাদের শিক্ষকদেরও খুবই ভালোবাসেন।বর্তমান প্রধান শিক্ষক বাপী বাবু জানান এই স্কুলে পাঁচটা শ্রেনীকক্ষ। শিক্ষকের সংখ্যা ৪। এই অবস্থায় প্রাক্তন শিক্ষক আসেন ও ছাত্রছাত্রীদের পড়ান।বাপী বাবু জানান ওনার হাতে লাগানো বাগানের শান্ত পরিবেশে বাচ্চারা খেলাও করতে পারে।বিশ্বজুড়ে চলছে সবুজ সংকট,আমাদের স্কুলের বাচ্চাদের নিযে কখনো কখনো বৃক্ষরোপন ও করেন মাষ্টারমশাই।স্কুলের যেকোনও উৎসব অনুষ্ঠানে আজও রবিলালবাবুই উদ্যোগ নেন।রবিলাল গরাই এর পড়াশোনার প্রতি আর ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি এই যে নিবিড় টান তা এক দৃষ্টান্ত।Body:হConclusion:গ
Last Updated : Sep 5, 2019, 3:25 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.