কাঁকসা, 5 সেপ্টেম্বর : অবসর নিয়েছেন প্রায় 12 বছর আগে । হারিয়েছেন দৃষ্টিশক্তি । কিন্তু, তাতে কী? কাঁকসার বিষ্ণুপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক রবিলাল গড়াইয়ের কাছে এসব কোনও বাধাই নয় । খুদে পড়ুয়াদের হাত ধরে পায়ে পায়ে পৌঁছে যান স্কুলে । প্রার্থনার পর শুরু হয় ক্লাস । ছাত্র-ছাত্রী নয়, ওদের নাতি-নাতনির চোখে দেখেন "মাস্টারদাদু" ।
দীর্ঘ 27 বছর ধরে ছাত্র পড়িয়েছেন । 2007 সালে অবসর নেন রবিলাল গড়াই । কিন্তু, খুদে পড়ুয়াদের জীবন গড়ার নেশা কাটাতে পারেননি । রোজ আসতেন স্কুলে । পড়াতেন ওদের । এদিকে, অবসরের কিছুদিন পরই শুরু হয় চোখের সমস্যা । চিকিৎসা করিয়েও মেলেনি কোনও সুরাহা । 2011 সালে দৃষ্টিশক্তি হারান । খুদেরা ভেবেছিল, আর বোধহয় আসবেন না মাস্টারদাদু । কিন্তু, সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন রবিলালবাবু । খুদে পড়ুয়াদের হাত ধরে রোজ স্কুলে আসেন তিনি । প্রার্থনার পর শুরু করেন নিয়মমাফিক ক্লাস ।
অবসরগ্রহণের পর দীর্ঘ 12 বছর ধরে স্কুলে পড়িয়ে যাচ্ছেন । কোনও পারিশ্রমিক ছাড়াই পড়ান ? উত্তরে রবিলালবাবু বলেন, "যা পেনশন পাই তাতেই বেশ চলে যায় । আর ওরা তো আমার ছাত্র-ছাত্রী নয়, ওরা তো নাতি-নাতনি ।"
এই সংক্রান্ত খবর : 'ছুটি' দেয়নি পড়ুয়ারা, গরমের ছুটিতেও পড়ান "প্রিয় মাস্টারমশাই"
স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাপি হাজরা বলেন, "মাস্টারমশাই রবিলালবাবু রোজ স্কুলে আসেন । কোনওদিন বাচ্চাদের হাত ধরে আবার কোনওদিন আমরা বাড়ি থেকে নিয়ে আসি । উনি খুদে পড়ুয়াদের খুবই ভালোবাসেন ।"