আসানসোল, 8 এপ্রিল: বিস্ফোরণে উড়ে গেল ঘরের চাল ! পশ্চিম বর্ধমানের কুলটি থানার সাঁকতোড়িয়া ফাঁড়ির অন্তর্গত সাঁকতোড়িয়া ময়লাগাদা এলাকার ঘটনা ৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শনিবার ভোর রাতে এই বিস্ফোরণ হয় ৷ শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ ৷ তবে, ঘটনার পর বাড়ির মালিক সুভাষ ঘাসি ও তাঁর ছেলেকে আটক করেছে তারা ৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ডায়নামাইট জাতীয় কিছু ফেটেই ঘটেছে এই ভয়াবহ ঘটনা ৷ এর পিছনে নাশকতা বা অন্য কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে তারা ৷
আসানসোল পৌরনিয়মের 104 নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত এই সাঁকতোড়িয়া ময়লাগাদা অঞ্চল ৷ এই অঞ্চলেরই বাসিন্দা সুভাষ ঘাসি ৷ তিনি পেশায় রিকশাচালক ৷ পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী ও এক ছেলে ৷ সুভাষের ছেলে দিনমজুরের কাজ করেন ৷ সুভাষ ঘাসির স্ত্রী বেবি ঘাসি জানিয়েছেন, শনিবার রাত 2টো নাগাদ প্রচণ্ড শব্দে তাঁদের ঘুম ভেঙে যায় ৷ তাঁরা যে ঘরে শুয়ে ঘুমোচ্ছিলেন, তার পাশেই রয়েছে আরও একটি ঘর ৷ সেটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃয় অবস্থায় পড়ে ছিল ৷ বেবি ঘাসির দাবি, ওই ঘরের অর্ধেকটা টিনের চাল দিয়ে ঢাকা ছিল এবং বাকি অর্ধেক অংশ খোলা অবস্থায় পড়ে ছিল ৷ শব্দের উৎস খুঁজতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ওই অব্যবহৃত ঘরটির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে ৷ উপরের অর্ধেক অংশে যে টিনের চাল ছিল, তা উড়ে গিয়েছে ! দেওয়ালে ফাটল ধরেছে ৷ ঘরের ভিতর সমস্ত জিনিস এখানে-ওখানে ছড়িয়ে, ছিটিয়ে রয়েছে ৷ বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে টিনের চাল উড়ে গিয়ে পড়ে পাশের বাড়ির উঠোনে !
বেবি ঘাসির দাবি, কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা তিনি জানেন না ৷ তবে, তাঁর সন্দেহ, তাঁদের এক নিকট আত্মীয় এই ঘটনার পিছনে থাকতে পারেন ! বেবি জানিয়েছেন, ওই আত্মীয় ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ চলছে তাঁদের ৷ বেবি খাসির দাবি, ওই আত্মীয় না কি একাধিকবার তাঁদের ঘর উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন ! বিষয়টি পুলিশকেও জানিয়েছেন বেবি ৷ কিন্তু, পুলিশ উলটে তাঁর স্বামী ও ছেলেকেই ধরে নিয়ে গিয়েছে ৷
এদিকে, শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশের আধিকারিকরা ৷ যদিও এখনও পর্যন্ত সেখান থেকে বোমার অংশ বা বিস্ফোরক জাতীয় কিছুর অবশেষ মেলেনি ৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷ সুভাষ ও তাঁর ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাবাদ করা হচ্ছে ৷ কথা বলা হচ্ছে আশপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গেও ৷
আরও পড়ুন: নওদায় বোমা বিস্ফোরণে মৃত 1, জখম আরও 1
প্রসঙ্গত, পশ্চিম বর্ধমানের এই এলাকা মূলত কয়লাখনি অঞ্চল ৷ খনি এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটাতে ডায়নামাইট ব্যবহার করা হয় ৷ প্রশ্ন উঠছে, এই ঘটনায় যদি সত্যিই ডায়নামাইট ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তাহলে তা এল কোথা থেকে ? তবে কি খনি বিস্ফোরণের কাজে ব্যবহৃত ডায়নামাইটই বেআইনিভাবে চলে আসছে আমজনতার হাতে ? এই সম্ভাবনাও পুলিশ খতিয়ে দেখছে ৷