আসানসোল, 16 জুন: যেকোনও মুহূর্তে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে বাড়িটি। কুলটির সাঁকতোড়িয়ায় ধসপ্রবণ এলাকায় একটি দোতলা পাকা বাড়ি এমনই বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে। যে বাড়িতে বসবাস করছেন 2 মহিলা ও 2 শিশু। কার্যত মৃত্যুর সঙ্গে ঘর করছে পরিবারটি৷ আর্থিক কারণে অন্য কোথাও যাওয়ারও উপায় নেই তাদের। সাহায্যের জন্য প্রশাসনের দরজায় কড়া নেড়েও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ৷
কুলটি সাঁকতোড়িয়া চিরকালই ধসপ্রবণ এলাকা। এর আগে মাটি ফুঁড়ে ধোঁয়া বেরোনোর ঘটনা ঘটেছে। ধসের কবলে ধূলিসাৎ হয়েছে একাধিক বাড়ি। এমনকী বেশ কিছুদিন আগে ধসে তলিয়ে গেছিল এক যুবতি। কেন্দ্রীয় সরকার এখানকার পরিবারগুলির জন্যে পুনর্বাসন প্রকল্প ঘোষণা করেছে। যদিও সরকারি সেই প্রক্রিয়া এখনও সম্পন্ন হয়নি।
সাঁকতোড়িয়ার মাহাতা পাড়ায় একটি দোতলা বাড়িতে থাকেন রিনা মাহাতা, তাঁর মেয়ে শিল্পী মাহাতা ও শিল্পী মাহাতার দুই শিশু সন্তান। সেই দোতলা বাড়িটিই বর্তমানে বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে। গোটা বাড়িতেই বড়সড় ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদ থেকে খসে পড়ছে চাঙড়। এমনকী গোটা বাড়িটি মাটিতে বসে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। ভারী বৃষ্টিপাত হলে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে বাড়ি, আশঙ্কা করছেন রিনা দেবী ও শিল্পী দেবী।
রিনা দেবীর স্বামী মৃত্যুর পরই পরিবারটি আর্থিক অনটনে পড়ে। বর্তমানে কোনওভাবে দিন চলে। অন্যত্র বাড়ি ভাড়া করে চলে যাওয়া বা বাড়ি তৈরির সামর্থ্য নেই। ফলে, কার্যত সব জেনেও ওই বাড়িতে 4 জনের পরিবারটি বসবাস করছে৷ অভিযোগ, এলাকার কাউন্সিলর ও বিধায়কের কাছে সাহায্যের জন্য দরবার করেও কোনও লাভ হয়নি।
শিল্পী মাহাতা বলেন, "আমার বাবা 30 বছর আগে বাড়িটা বানিয়েছিলেন। বাড়িতে দিনদিন ফাটল বাড়ছে৷ ছাদ থেকে বড় বড় চাঙড় খসে পড়ছে। বর্ষাকালে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে।"
রিনা মাহাতো বলেন, "আতঙ্কে ঘুম আসে না। জেগে থাকি। ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমোতে যেতে হয়। প্রতিদিন ভয়ঙ্কর আতঙ্ক নিয়ে শুতে যাই৷" তাঁর করুণ অনুরোধ, "আমাদের আশ্রয় দিন দয়া করে।"
বিষয়টি অজানা নয় এলাকার কাউন্সিলর অভিজিৎ আচার্যেরও। তিনি বলেন, "সত্যিই ওঁরা খুব কষ্টে আছেন। কিন্তু ওঁদের বাড়ির কোনও কাগজপত্র নেই। সেই কারণে মোদি সরকারের আবাস যোজনার বাড়ি ওঁদের জন্য করে দেওয়া যায়নি। পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্য যে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে তার প্রক্রিয়া এখনও চলছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে কর্পোরেশন থেকে বাড়ি ভেঙে দেওয়া হলে ওই পরিবার সঠিক ক্ষতিপূরণ পাবে না৷ তাই বাড়ি ভাঙা হয়নি।"