নদিয়া, 3 এপ্রিল : পেকে গিয়েছে চুল, শরীরে বার্ধক্যের ছাপ স্পষ্ট ৷ কিন্তু তাতে কী ! ভালবাসার যে কোনও বয়স হয় না তা ফের প্রমাণ করলেন নদিয়ার দুই বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ৷ সাতদিন হল বিয়ে করে সংসার করেছেন তাঁরা ৷
নদিয়ার রানাঘাটের বৃদ্ধাশ্রমের দুই অবিবাহিত আবাসিক (Nadia Oldage Home Marriage) । নদিয়ার চাকদা লালপুরের বাসিন্দা রাজ্য পরিবহণ দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী বছর সত্তরের সুব্রত সেনগুপ্ত ৷ পরিবার বলতে মা, দুই ভাই ও তাদের স্ত্রী-সন্তানরা ৷ নিজে অবিবাহিত হওয়ার পাশাপাশি পারিবারিক সমস্যার কারণে মা তাঁকে বৃদ্ধাশ্রমে চলে যেতে বলেন ৷ মায়ের আদেশ নিয়ে 2019 সাল থেকে রানাঘাটের পূর্ণনগর জগদীশ মেমোরিয়াল বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে শুরু করেন সুব্রতবাবু ৷
এই বৃদ্ধাশ্রমেই প্রায় পাঁচ বছর ধরে থাকতেন বছর পঁয়ষট্টির অপর্ণা চক্রবর্তী ৷ অবিবাহিতা অপর্ণার বাড়ি রানাঘাটের আইসতলায় ৷ দীর্ঘ 30 বছর ধরে কলকাতার বেলেঘাটায় এক অধ্যাপকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেছেন ৷ শেষ জীবনে বাপেরবাড়ির দরজা বন্ধ হয়ে গেলে আশ্রয় নেন রানাঘাটের বৃদ্ধাশ্রমে ৷
আরও পড়ুন : আদালতের হস্তক্ষেপে পরিণতি পেল ভালবাসা, এজলাসের সামনেই এক হল চার হাত
বৃদ্ধাশ্রমেই অপর্ণাদেবীকে প্রথম মনের কথা জানান সুব্রতবাবু ৷ প্রথমে তা প্রতাখ্যান করেন অপর্ণাদেবী ৷ এরপর 2020 সালের মার্চ মাস থেকে বৃদ্ধাশ্রম ছেড়ে ওই এলাকাতেই ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন সুব্রতবাবু ৷ নিজেই রান্না করে দিন চালাচ্ছিলেন ৷ এর মধ্য়ে দিনকয়েক আগে সুব্রতবাবু অসুস্থ হয়ে পড়লে বৃদ্ধাশ্রমের কর্ণধার গৌরমোহন সরকার অপর্ণাদেবীকে ক'দিন রান্না করে দেওয়ার জন্য বলেন ৷ সেই সুযোগে ফের আরও একবার কাছাকাছি আসেন সুব্রতবাবু ও অপর্ণাদেবী ৷ আবার নিজের মনের কথা বলেন সুব্রতবাবু ৷ তবে এবার আর প্রস্তাব ফেরাতে পরেননি অর্পণাদেবী ৷ এরপর গৌরমোহনবাবু দু'জনের সম্মতি নিয়ে আইনি পদ্ধতিতে বিয়ে দেন (Two Old People Get Married at Oldage Home of Nadia) ৷
এই বিষয়ে সুব্রতবাবু বলেন, "বৃদ্ধাশ্রমে অপর্ণাকে প্রথম দেখে মনে প্রেম জেগেছিল ৷ তারপরই ওকে মনের কথা জানাই ৷ এই সাতদিন হল আমরা বিয়ে করেছি ৷"
আরও পড়ুন : গোলাপ : সুন্দর অনুভূতির ভাষা