কৃষ্ণগঞ্জ (নদিয়া),16 ফেব্রুয়ারি: দলীয় কার্যালয় থাকবে কার দখলে ৷ এই নিয়েই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে (TMC faction fight)। দলীয় কার্যালয়ের তালা খোলা নিয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দল এবার প্রকাশ্যে এল নদিয়ার ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়া এলাকায় । যা আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের ভোট বাক্সে প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের একাংশের ।
জানা গিয়েছে, মাজদিয়ার এই প্রধান কার্যালয়ের দুটি চাবি রয়েছে । একটি চাবি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি লক্ষণ ঘোষ চৌধুরীর কাছে থাকে ৷ অন্য চাবিটি কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতির কাছে থাকে । এদিন নদিয়া দক্ষিণ জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নির্দেশে কৃষ্ণগঞ্জ মাজদিয়া এলাকায় শাসকদলের প্রধান দলীয় কার্যালয়টিতে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি সাংগঠনিক আলোচনা সভা করতে আসেন ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বেরা । অভিযোগ, সেই সময় তাদের কাছে থাকা চাবি দিয়ে দলীয় কার্যালয় ভবনের মূল গেটের তালা খুলতে পারেন না তারা ৷ এর জেরে এক প্রকার হতবাক হয়ে যান তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বেরা । তালা খুলতে না পেরে তাদের গুরুত্বপূর্ণ দলীয় আলোচনা সভার ব্যাঘাত ঘটে ।
অভিযোগ, মুখ্য দলীয় কার্যালয়ের মূল গেটে অন্য তালা লাগানো হয়েছে । তৃণমূলের মাদার সংগঠনের নেতৃত্বে ওই তালা বদল করা হয়েছে বলে অভিযোগ । তালা বদল হলে একটি চাবি ব্লক যুব কংগ্রেস সভাপতির কাছে পাঠানো উচিত ছিল । কারণ দীর্ঘ ছয় মাস ধরে এই নিয়ম রয়েছে বলে দাবি । কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্লক সভাপতি তালাটি বদলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন উপস্থিত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা । পাশাপাশি এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতাকর্মীদের মধ্যে । দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা ।
অভিযোগ, এর আগেও স্থানীয় আইএনটিউসির নেতা কর্মীরা তাদের দলীয় আলোচনা করতে এসে কার্যালয়েটির তালা খুলতে ব্যর্থ হন । যার ফলে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয় ওই এলাকার আইএনটিটিউইসি-সহ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। এছাড়াও মাদার দলের নেতা কর্মীরাই এই ঘটনার জন্য দায়ী বলে দাবি করেন উপস্থিত আইএনটিটিউসি ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ৷ যদিও এ ব্যাপারে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি লক্ষণ ঘোষ চৌধুরী কাছে জানতে চাইলে তিনি ব্যাপারটি নিয়ে ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাননি । তিনি শুধু জানান, চাবিটা তাঁর কাছে আছে ।
তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অশোক হালদার বলেন, "ব্লক সভাপতি এই কাজ করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলছেন ৷ পক্ষান্তরে তিনি বোঝাতে চাইলেন বিজেপির হাত শক্ত করা হচ্ছে । যা ভবিষ্যতে দলের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে ।" বিজেপির প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি প্রণব সরকার বলেন, "এদের গোষ্ঠী কোন্দল নতুন কিছু নয় । সামান্য পার্টি অফিসের তালা খোলা নিয়ে নিজেদের কার কত ক্ষমতা সেটা জাহির করার চেষ্টা হচ্ছে ৷ এটা তেমন কিছু ব্যাপার নয় । তবে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক বিজেপির শক্ত ঘাঁটি ৷ আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি সমস্ত জায়গায় জয়লাভ করবে ।"
আরও পড়ুন: তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিলকে ঘিরে চরম 'গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব' কদম্বগাছিতে