ETV Bharat / state

ফুরোচ্ছে পুঁজি, অসহায় পরিযায়ীরা এখন সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় - লকডাউনের প্রভাব

এক সময় পুনের হোটেলে মুরগির মাংস রান্না করতেন নদিয়ার রাজু মাহাত । অন্যদিকে বেঙ্গালুরুতে হোটেলে মাছ পরিবেশন করতেন নদিয়ার সঞ্জিত মাহাত । তবে লকডাউনের জেরে বদলেছে জীবিকা । ভিন রাজ্যের কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে একজন মাছ ও অন্যজন মুগরি চাষের চেষ্টা করছেন । তাদের অভিযোগ, ছোটোখাটো কাজ করে কোনও মতে দিন কাটলেও সরকারের তরফ থেকে তেমন কোনও সাহায্য না মেলায় সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা । তবে সরকারের দাবি, পরিযায়ীদের কর্মসংস্থানের জন্য যথা সম্ভব ব্যবস্থা করা হচ্ছে ।

migrant labours problem
migrant labours problem
author img

By

Published : Sep 9, 2020, 10:45 PM IST

নদিয়া, 9 সেপ্টেম্বর : দেশব্যাপী লকডাউনের জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে অর্থনীতি । কর্মহীন হয়েছেন বহু মানুষ । বাড়তি রোজগারের আশায় প্রতি বছর এরাজ্য থেকে বহু শ্রমিক ভিন রাজ্যে কাজে যান । লকডাউনের ফলে কোপ পড়েছে তাঁদের জীবিকাতেও । কাজ হারিয়ে সঞ্চিত অর্থ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা । অন্যান্য জেলার মতো নদিয়াতে প্রায় 70 হাজার শ্রমিক লকডাউনের পর বাড়ি ফিরেছেন । লকডাউনের পর অতিক্রম হয়েছে প্রায় পাঁচ মাস । এতদিনেও মেলেনি কোনও কাজ । শেষ হয়েছে সঞ্চিত পুঁজি । ফলে সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে শ্রমিকদের । সংসার চালানোর তাগিতে অন্য পেশাতেও চলে গিয়েছেন অনেকে ।

এমনই এক পরিযায়ী শ্রমিক হলেন নদিয়ার রাজু মাহাত । প্রায় 22 বছর ধরে তিনি পুনেতে হোটেলের কাজ করতেন । লকডাউনে বন্ধ হয়েছে হোটেল । কাজ হারিয়েছেন রাজু। তিনি বলেন, "পরিবারে 7 জন সদস্য রয়েছেন । তাঁরা সকলেই আমার উপর নির্ভরশীল । কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কাজ না মেলায় সংসার চালাতে নেজাহাল হতে চলচ্ছে । তাই নিরুপায় হয়ে বাড়িতে মাছ চাষ শুরু করেছি ।" জেলার আর এক পরিযায়ী শ্রমিক সঞ্জিত মাহাত । তিনি দু'বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে হোটেলে কাজ করছিলেন । লকডাউনে কাজ হারিয়ে তিনিও এখন ঘরে ফিরেছেন । কিন্তু কাজ হারিয়ে মাসের পর মাস ঘরে বসে মাথায় হাত পড়েছে সঞ্জিতেরও । আপাতত বাড়িতে মুগরি চাষের চেষ্টা করছেন তিনি । পাশাপাশি সরকারের কাছে কর্মসংস্থানের আবেদন জানিয়েছেন ।

অন্যদিকে ভিন রাজ্যের কাজ হারিয়ে অর্থের অভাবে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করতে না পেরে অবশেষে পথে নেমেছেন জেলার বহু পরিযায়ী শ্রমিক । কর্মসংস্থান, সরকারি আর্থিক সাহায্য, বিনামূল্যে পর্যাপ্ত রেশন সামগ্রীর দাবিতে একাধিকবার জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও BDO অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা । বিক্ষোভকারী পরিযায়ী শ্রমিক ইসমাইল শেখ বলেন, "দীর্ঘদিন বাড়িতে বসে রয়েছি । পাইনি কোনও সরকারি অনুদান । সরকার শুধু রেশনের কথা বলছে । রেশন তো গরিব-বড়লোক সকলেই পাচ্ছে । কিন্তু আমাদের জন্য আলাদা কোনও ব্যবস্থা নেই । বর্তমানে যাতে আমরা খেয়ে-পড়ে পরিবারের সকলকে নিয়ে বাঁচতে পারি সে ব্যবস্থা করুক সরকার । না হলে আমরা না খেতে পেয়ে মারা যাব ।"

এই প্রসঙ্গে নদিয়া জেলা সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু, জানিয়েছেন, "প্রশাসনের তরফ থেকে জেলায় ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের ডেটা বানানো হয়েছে । পরিযায়ী শ্রমিকদের 100 দিনের কাজ দেওয়ার জন্য জব কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে । এই কার্ডের জন্য শ্রমিকদের আবেদন করতে হবে । এছাড়াও পরিযায়ী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের জন্য খাদ্য দপ্তরের তরফ থেকে বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।" পাশাপাশি শ্রমিক বিক্ষোভ প্রসঙ্গে রিক্তাদেবী বলেন, "সরকারি কাজের কিছু নিয়ম আছে । এত টাকা খরচ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৎপরতায় তাঁদের জেলায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে । তাঁদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে । কারণ কোরোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যের দিকটাই নজর দিতে হচ্ছে । জেলার মানুষ যাতে সুস্থ ও ভালো থাকেন সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে ।"

সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় শ্রমিকরা

পাশাপাশি জেলা পরিষদের দাবি, জেলায় ফেরা 70 হাজার শ্রমিকের মধ্যে 70 শতাংশ জব কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন । তাঁদের সকলকেই একশো দিনের কাজ দেওয়া হয়েছে ।

নদিয়া, 9 সেপ্টেম্বর : দেশব্যাপী লকডাউনের জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে অর্থনীতি । কর্মহীন হয়েছেন বহু মানুষ । বাড়তি রোজগারের আশায় প্রতি বছর এরাজ্য থেকে বহু শ্রমিক ভিন রাজ্যে কাজে যান । লকডাউনের ফলে কোপ পড়েছে তাঁদের জীবিকাতেও । কাজ হারিয়ে সঞ্চিত অর্থ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তাঁরা । অন্যান্য জেলার মতো নদিয়াতে প্রায় 70 হাজার শ্রমিক লকডাউনের পর বাড়ি ফিরেছেন । লকডাউনের পর অতিক্রম হয়েছে প্রায় পাঁচ মাস । এতদিনেও মেলেনি কোনও কাজ । শেষ হয়েছে সঞ্চিত পুঁজি । ফলে সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে শ্রমিকদের । সংসার চালানোর তাগিতে অন্য পেশাতেও চলে গিয়েছেন অনেকে ।

এমনই এক পরিযায়ী শ্রমিক হলেন নদিয়ার রাজু মাহাত । প্রায় 22 বছর ধরে তিনি পুনেতে হোটেলের কাজ করতেন । লকডাউনে বন্ধ হয়েছে হোটেল । কাজ হারিয়েছেন রাজু। তিনি বলেন, "পরিবারে 7 জন সদস্য রয়েছেন । তাঁরা সকলেই আমার উপর নির্ভরশীল । কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কাজ না মেলায় সংসার চালাতে নেজাহাল হতে চলচ্ছে । তাই নিরুপায় হয়ে বাড়িতে মাছ চাষ শুরু করেছি ।" জেলার আর এক পরিযায়ী শ্রমিক সঞ্জিত মাহাত । তিনি দু'বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে হোটেলে কাজ করছিলেন । লকডাউনে কাজ হারিয়ে তিনিও এখন ঘরে ফিরেছেন । কিন্তু কাজ হারিয়ে মাসের পর মাস ঘরে বসে মাথায় হাত পড়েছে সঞ্জিতেরও । আপাতত বাড়িতে মুগরি চাষের চেষ্টা করছেন তিনি । পাশাপাশি সরকারের কাছে কর্মসংস্থানের আবেদন জানিয়েছেন ।

অন্যদিকে ভিন রাজ্যের কাজ হারিয়ে অর্থের অভাবে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করতে না পেরে অবশেষে পথে নেমেছেন জেলার বহু পরিযায়ী শ্রমিক । কর্মসংস্থান, সরকারি আর্থিক সাহায্য, বিনামূল্যে পর্যাপ্ত রেশন সামগ্রীর দাবিতে একাধিকবার জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও BDO অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা । বিক্ষোভকারী পরিযায়ী শ্রমিক ইসমাইল শেখ বলেন, "দীর্ঘদিন বাড়িতে বসে রয়েছি । পাইনি কোনও সরকারি অনুদান । সরকার শুধু রেশনের কথা বলছে । রেশন তো গরিব-বড়লোক সকলেই পাচ্ছে । কিন্তু আমাদের জন্য আলাদা কোনও ব্যবস্থা নেই । বর্তমানে যাতে আমরা খেয়ে-পড়ে পরিবারের সকলকে নিয়ে বাঁচতে পারি সে ব্যবস্থা করুক সরকার । না হলে আমরা না খেতে পেয়ে মারা যাব ।"

এই প্রসঙ্গে নদিয়া জেলা সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু, জানিয়েছেন, "প্রশাসনের তরফ থেকে জেলায় ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের ডেটা বানানো হয়েছে । পরিযায়ী শ্রমিকদের 100 দিনের কাজ দেওয়ার জন্য জব কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে । এই কার্ডের জন্য শ্রমিকদের আবেদন করতে হবে । এছাড়াও পরিযায়ী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের জন্য খাদ্য দপ্তরের তরফ থেকে বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।" পাশাপাশি শ্রমিক বিক্ষোভ প্রসঙ্গে রিক্তাদেবী বলেন, "সরকারি কাজের কিছু নিয়ম আছে । এত টাকা খরচ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৎপরতায় তাঁদের জেলায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে । তাঁদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে । কারণ কোরোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যের দিকটাই নজর দিতে হচ্ছে । জেলার মানুষ যাতে সুস্থ ও ভালো থাকেন সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে ।"

সরকারি সাহায্যের অপেক্ষায় শ্রমিকরা

পাশাপাশি জেলা পরিষদের দাবি, জেলায় ফেরা 70 হাজার শ্রমিকের মধ্যে 70 শতাংশ জব কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন । তাঁদের সকলকেই একশো দিনের কাজ দেওয়া হয়েছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.