কৃষ্ণগঞ্জ, 20 এপ্রিল : বাবা মারা গেছেন এক বছর আগে । মা কলকাতায় পরিচারিকার কাজ করেন । লকডাউনের জেরে বাড়ি ফিরতে পারেননি এক মাস হতে চলল। এদিকে মাসের শেষে মা টাকাও পাঠাতে পারেননি। অগত্যা পার্শ্ববর্তী মুদি দোকানে বেড়েছে ধারের অঙ্ক । যার জেরে ধারে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন দোকানদার । গত দু'দিন ধরে পেটে কিছু পড়েনি বছর 18-র জাহিদহোসেন মণ্ডলের। একথা জানতে পেরে তড়িঘড়ি তার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করলেন কৃষ্ণগঞ্জ থানার OC রাজশেখর পাল । সাহায্য পেয়ে জাহিদ বলছে, "এ ক'দিন কীভাবে কেটেছে তা আমিই জানি । বাবার মতো পাশে দাঁড়িয়েছেন । ওঁর সাহায্য কোনওদিন ভুলব না । "
নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বানপুরের বাগানপাড়া সীমান্তবর্তী গ্রামে থাকে জাহিদ । বাবা মারা গেছেন এক বছর আগে । পরিবারের হাল ধরতে তাই তার মা'কে কাজে বেরোতে হয়েছে । কলকাতায় পরিচারিকার কাজ করেন তার মা সাবিনা বেওয়া মণ্ডল । জাহিদ বানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে । কলকাতায় কাজ করলেও ছেলের কাছে প্রতি সপ্তাহেই আসেন সাবিনা । কিন্তু লকডাউনের জেরে এক মাস হতে চলল বাড়ি ফিরতে পারেননি তিনি । আটকে পড়েছেন কলকাতায় । এদিকে, মায়ের দিয়ে যাওয়া টাকাও শেষ হয়ে যায় জাহিদের । বাড়ির পাশের মুদির দোকানে ধারেই চলে ক'দিন । কিন্তু এই লকডাউনে এমনিতেই বিক্রিবাটা কম, তাই ধারে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া বন্ধ করে দেন দোকানদার । প্রতিবেশীরাও কেউ সাহায্য করেননি । ফলে, গত দু'দিন না খেয়েই কাটে জহিদের । বিষয়টি জানতে পারেন কৃষ্ণগঞ্জ থানার OC । বিষয়টি নিয়ে তিনি খবর নেন । তারপর জাহিদের খাবার ব্যবস্থা করে দেন । গতকাল থানা থেকে দু'জন এসে জাহিদকে চাল, ডাল, বিস্কুট, তেল, ডিম দিয়ে যান ।
এবিষয়ে জাহিদ বলে, "এই দুর্দিনে বড়বাবু বাবার মতো আমার পাশে দাঁডালেন । আমি এই ক'দিনে বুঝেছি অনাহারে থাকা কত কষ্টের । ওঁর দানের কথা কোনওদিন ভুলব না ।"
এবিষয়ে OC রাজশেখর পাল বলেন, "এটা তেমন কিছু নয় । এটা শুধু মানুষ মানুষের জন্য কাজ করা ।"