নদিয়া, 18 জানুয়ারি: কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়ার নলেন গুড় এক সময় ছিল জগৎ বিখ্যাত । শীত এলেই এই এলাকার খেজুর শিউলিরা ব্যস্ত থাকেন খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করতে । এই রস জাল দিয়ে তৈরি হয় নলেন গুড় । কিন্তু নলেন গুড় তৈরি করতে যে পরিমাণ খরচ হয়, সেই তুলনায় লাভ পান না শিউলিরা । তাই আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে গুড়ে ভেজাল দেন ৷ ফল স্বরূপ আসল গুড়ের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন আম জনতা ৷
এক শিউলির কথায় একজন চাষি খেজুর রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করে কেজি প্রতি 300 টাকা দরে বিক্রি করছেন । অথচ মাজদিয়ার খেজুর গুড়ের হাটে কেজি প্রতি 80 টাকায় বিক্রি হচ্ছে খেজুরের গুড় ৷ যার গুণগতমান অত্যন্ত খারাপ ৷ কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে এসব তথ্য অজনা ৷ এই পরিস্থিতির সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়েই আর্থিক ক্ষতির সন্মুখীন হচ্ছেন শিউলিরা ৷ যারা আসল গুড় বিক্রি করেন ৷ শিউলিরা প্রতি গাছ 200 থেকে 250টাকা দরে মহাজনের কাছ থেকে লিজ নিচ্ছেন তারা সেই টাকা শোধ করতে পারছে না ।
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বাধ্য হয়েই এই খেজুর গুড়ের মধ্যে চিনি মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করতে বাধ্য হচ্ছেন খেজুর ঘুরে শিউলিরা। সেই জন্যেই মাজদিয়ার নলেন গুড় তার স্বাদ হারিয়ে ফেলছে । নতুন করে কোনও শিউলি আর এই কাজে নিজেদেরকে যুক্ত করতে চাইছেন না । এই প্রসঙ্গেই এক শিউলি সমীর দাস বলছেন, "এমনিতেই এই বছর শীত খুব পড়েনি ৷ ফলে খেজুরের রস সংগ্রহ করা যাযনি ৷ তাই গুড়ও অল্প পরিমাণে তৈরি হয়েছে ৷ 300 টাকা কেজি দরে বিক্রি করেও আমি সামান্য লাভ করতে পারছি।" অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা কম দামে গুড় কিনতে পারায় আসল গুড়ের দিকে আর নজর দিচ্ছেন না । শিল্পীদের ধারণা এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই হারিয়ে যাবে খেজুরের নলেন গুড় ।
আরও পড়ুন: