নদিয়া, 9 সেপ্টেম্বর : গঙ্গায় ভাঙন অব্যাহত ৷ তলিয়ে যাচ্ছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি-বাড়ি ৷ সোমবার ফের তলিয়ে গেল বিঘা দশেক জমি ৷ আতঙ্কে দিন কাটছে নদিয়ার শান্তিপুর পৌরসভার 16 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা ৷ ঘণ্টা খানেকের ভাঙনে ফসলি জমি তলিয়ে যেতেই মাথায় হাত চাষিদের ৷
শান্তিপুর পৌরসভার 16 নম্বর ওয়ার্ডের চরসাগর এলাকায় প্রায় 100 টি পরিবার বাস করে ৷ কয়েক মাস আগেও এই এলাকায় তলিয়ে গেছিল কয়েক বিঘা চাষের জমি ৷ সোমবার রাতেও প্রায় ঘণ্টাখানেকের ভাঙনে ফসল-সহ প্রায় বিঘা দশেক জমি তলিয়ে যায় ৷
স্থানীয়দের বক্তব্য, প্রতিবছর বর্ষা শুরু হলেই গঙ্গায় ভাঙনের প্রবণতা বেড়ে যায় ৷ বর্ষায় গঙ্গার জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় জলের তোড়ে পাড় ভাঙতে শুরু করে ৷ প্রতিবছরই নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধি এমন কী প্রশাসনের কর্তারাও ভাঙন পরিদর্শনে আসেন ৷ তারা দেখে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান ৷ কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না ৷ মাঝে মাঝে কয়েকটি বালির বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করা হয় ৷ কিন্তু তাও আবার কয়েকদিনের মধ্যে গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে যায় ৷
আকুল বিশ্বাস নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, 2000 সালের আগে গঙ্গা প্রায় 1 কিলোমিটার দূরে ছিল ৷ প্রতিবছর গঙ্গা ভাঙনে বসতির কাছে চলে এসেছে ৷ আমরা নিজেরই কুড়ি বিঘা জমি গঙ্গা বক্ষে তলিয়ে গেছে ৷ এইভাবে চলতে থাকলে গোটা গ্রামটায় রাতারাতি গঙ্গা গ্রাস করে নেবে ৷ প্রশাসনকে একাধিকবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি ৷ এই ভাঙন রোধ করার জন্য স্থায়ীভাবে প্রশাসন উদ্যোগ নিক ৷ আমরা যাতে নিরাপদে ঘুমোতে পারি ৷
আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা মীরা বিশ্বাসের দাবি, বর্তমানে আমাদের আতঙ্ক নিয়েই বসবাস করতে হয় । বাড়িতে ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে । রাতারাতি গঙ্গা ভাঙন শুরু হলে আমরা বসবাস করবো কিভাবে । আমরা চাই প্রশাসন এবং সরকার উদ্যোগ নিয়ে স্থায়ীভাবে গঙ্গা ভাঙন রোধ করুক ।
শুধু 16 নম্বর ওয়ার্ডের চরসরাগর এলাকায় নয়, এবছর প্রতিনিয়ত শান্তিপুর থানার গয়েশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়, হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নৃসিংহপুর, চৌধুরিপাড়া এবং বেলঘড়িয়া 2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের মঠ পাড়া এলাকাও গঙ্গায় তলিয়ে গেছে ।
এবিষয়ে প্রাক্তন কাউন্সিলর স্বামী বৃন্দাবন প্রামাণিক বলেন, "16 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের দাবি একদম সত্য । যতদিন গড়াচ্ছে গঙ্গা ভাঙনের গতি ততই বেড়ে চলেছে । "