শান্তিপুর, 12 ফেব্রুয়ারি : চা বিক্রি করছেন ৷ তার সঙ্গেই চলছে ভোট প্রচার ৷ দলটা জাতীয় কংগ্রেস ৷ একমাত্র সম্বল অতীতের কংগ্রেসি আবেগ ৷ ছবিটা নদিয়ার শান্তিপুর পৌরসভার 11 নম্বর ওয়ার্ডের (Santipur Municipal Election 2022) ৷
দিনেরবেলায় দোকানে থাকেন দাদা ৷ সন্ধ্যার পর সেই দায়িত্ব বর্তায় বৌদির উপর ৷ কারণ তখন দাদা ব্যস্ত থাকেন প্রচারে অথবা দেওয়াল লিখনে । চা তৈরির ফাঁকেই চলছে শান্তিপুর পৌরসভার 11 নম্বর ওয়ার্ডে জাতীয় কংগ্রেসের প্রচার ৷ এই দাদা হলেন মথুরা কর্মকার ৷শান্তিপুরে পথচলতি মানুষের কাছে তাঁর চায়ের দোকান প্রায় সকলেই চেনেন ৷ পাশাপাশি অসাধারণ দেওয়াল লিখন শিল্পীও তিনি ৷ মথুরা কর্মকার দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপুর শহর কংগ্রেসের কার্যকরী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন । এবারের পৌরভোটে প্রার্থী হয়েছেন তাঁর স্ত্রী ৷ প্রতিটি জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে মহাত্মা গান্ধি, ইন্দিরা গান্ধি, রাজীব গান্ধির মূর্তিতে মাল্যদান করতে ভোলেন না মথুরা ৷ সারা বছরই চা বিক্রির সঙ্গে চলে কংগ্রেসি ইতিহাসের পর্যালোচনা ।
মথুরার স্ত্রী পলি এবার শান্তিপুর পৌরভোটে 11 নম্বর ওয়ার্ডের জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন ৷ সারাদিন সংসার কাজ এবং সন্তানের পিছনে কেটে যায় ৷ তার মধ্যেই চলছে ভোটপ্রচার ৷ বাড়ি বাড়ি যেতে হচ্ছে জনসংযোগে ৷
মথুরা-পলির সংসার চলে চা দোকানের উপার্জনে ৷ তাই দোকান বন্ধ রাখা সম্ভব নয় ৷ পালা করে চলে দোকানদারি ৷ দিনেরবেলায় সামলান মথুরা ৷ আর রাতে প্রার্থী নিজে । সন্ধ্যার পর, কখনও স্ত্রীর ভোট প্রচারে দেওয়াল লিখন আবার কখনও পাড়ার মোড়ে জনসংযোগে ব্যস্ত থাকছেন মথুরা ৷ স্বামী যখন এইসব কাজে ব্যস্ত, পলি তখন গলায় জাতীয় কংগ্রেসের উত্তরীয় নিয়েই সামলাচ্ছেন দোকান ৷ ফাঁকে ফাঁকে সেরে নিচ্ছেন প্রচার-জনসংযোগও ৷ বিজেপি, সিপিএম, তৃণমূলের পাশাপাশি অন্যান্য খরিদ্দারদেরও বাদ দিচ্ছেন না ৷ চলছে ভোটভিক্ষা ৷ জিজ্ঞাসা করলে বলেন, "আবেদন করা দোষের কোথায় ?"
মথুরা কর্মকার বিশ্বাস করেন অতীতে শুধু এই ওয়ার্ড নয়, গোটা শান্তিপুরের মাটিই কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি ছিল ৷ কয়েক বছর আগেও জেলায় তৃণমূলের দাপটের মধ্যেও রানাঘাট শান্তিপুরে কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন বিধায়ক । এবছরও পাশের কৃষ্ণনগর পৌরসভায় তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে ঘরে ফেরা শুরু হয়েছে । মথুরার বিশ্বাস, এবার হয়তো শান্তিপুর পৌরসভায় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিনিধি পৌঁছতে চলেছেন ।
মথুরা জানান, একমাত্র সিপিআইএম কাউন্সিলর সৌমেন মাহাতো এই 11 নম্বর ওয়ার্ডে পর পর টানা তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন ৷ মহিলা সংরক্ষিত হওয়ার কারণে এবারে তাঁর স্ত্রী প্রার্থী হয়েছেন । কংগ্রেসকে পরিবারতন্ত্রের দোষ দেওয়া সিপিআইএম কীভাবে একই পরিবার থেকে দু'জন প্রার্থী করলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ৷ তবে জয়ের বিষয়ে তিনি আশাবাদী ৷ কারণ হিসাবে তাঁর যুক্তি, বর্তমান শাসকদলের স্বজনপোষণ দুর্নীতির জবাব দিতে মানুষ প্রস্তুত ।
আরও পড়ুন : CMC Election 2022 : চন্দননগরের 5 ও 6 নম্বর ওয়ার্ডে অশান্তি