মুর্শিদাবাদ, 8 এপ্রিল: নিজের গড়েই কি জোট গড়তে ব্যর্থ অধীর ? এনিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে ৷ তিন দফা নির্বাচন সম্পন্ন ৷ বাকি আরও পাঁচ দফা ৷ এখনও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর গড় মুর্শিদাবাদেই দু'টি আসনে সংযুক্ত মোর্চার জোট-জট কাটেনি ৷ আসন দু'টি হল সামশেরগঞ্জ ও ফরাক্কা ৷ তার ওপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সামশেরগঞ্জের সভায় অধীরের গলা একবারের জন্যও জোট প্রসঙ্গ শোনা না যাওয়া বাম নেতাদের গোঁসার কারণ হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷ আবার সংবাদ মাধ্যমের সামনে মইনুল হকের বিরুদ্ধ সুর শোনা গেল আইএসএফের মেরাজ শরিফের গলায় ৷ এর প্রভাব পড়তে পারে জেলার বাকি আসনগুলিতেও ৷ আর এতেই অধীরের নেতৃত্বের বিশ্বাসযোগ্যতার নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন ৷
22 আসনের মুর্শিদাবাদ জেলায় সামশেরগঞ্জ বিধানসভায় শুরু থেকেই বাম-কংগ্রেসে মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল । এই আসনে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত বাম প্রার্থীর বিরুদ্ধে কংগ্রেস আলাদা প্রার্থী খাড়া করে নির্বাচনে লড়ছে । এই জটিলতা কাটিয়ে ওঠার আগেই ফরাক্কায় পাঁচবারের কংগ্রেস বিধায়কের বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন আইএসএফ প্রার্থী মহম্মদ মেরাজ শরিফ । ফলে অধীর চৌধুরীর নিজের গড়েই দু'টি আসনে ভোট ভাগাভাগির খেসারত দিতে হতে পারে সংযুক্ত মোর্চাকে । এর প্রভাব বাকি আসনগুলিতে পড়তে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
2016 বিধানসভা নির্বাচনে সামশেরগঞ্জে দ্বিতীয় স্থানে ছিল সিপিএম । কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের নিরিখি এই কেন্দ্রে এগিয়ে ছিলেন দক্ষিণ মালদার কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী । অধীর চৌধুরীর দাবি, লোকসভা ভোটের নিরিখে এই আসনের দাবিদার কংগ্রেস । অপরদিকে শেষ বিধানসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনা করে এই আসনে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী মোদাস্বর হোসেন মনোনয়ন দাখিল করেছেন । অন্যদিকে কংগ্রেসের প্রতীকে লড়ছেন মন্টু বিশ্বাস । এমনকি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে সামশেরগঞ্জে সভাও করেন অধীর চৌধুরী । মঞ্চ থেকে জোটের প্রসঙ্গ না তোলায় ক্ষুব্ধ বাম নেতৃত্ব ।
পাশেই ফরাক্কা বিধানসভা কেন্দ্রটিতেও জোট-জটিলতা তুঙ্গে । ব্রিগেড সভা থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল আইএসএফ প্রধান আদ্দাস সিদ্দিকির সঙ্গে অধীরের সম্পর্ক মধুর নয় । এবার জোটতত্ত্ব খারিজ করে ফরাক্কার পাঁঁচবারের কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হকের বিরুদ্ধে মনোনয়ন দাখিল করেছেন আইএসএফ প্রার্থী মহম্মদ মেরাজ শরিফ । পেশায় আইনজীবী মেরাজ শরিফের দাবি, 25 বছরে ফরাক্কার উন্নয়ন করেননি মইনুল হক । উন্নয়নের প্রশ্নে মানুষ সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থীকেই সমর্থন করবেন । স্বাভাবিকভাবেই নিজের গড়েই জোট জটিলতার দায় পড়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কাঁধে ৷
মুর্শিদাবাদের ফলের উপরেই অনেকটা নির্ভর করবে অধীরের ভবিষ্যৎ ৷