জঙ্গিপুর, 4 মার্চ: সাগরদিঘি উপনির্বাচনে শাসকদলকে পেছনে ফেলেছে বাম-কংগ্রেস জোট (Sagardighi Bye Poll Election) । তৃণমূলের হতাশাজনক ফলাফলকে সুপ্রিমো 'হার-জিত থাকেই' কিংবা 'বিজেপির ভোট জোটে গিয়েছে' বললেও হারের ময়নাতদন্ত শুরু হয়েছে দলের অভ্যন্তরে । তাতেই এবার উঠে এল অন্তর্ঘাতের তত্ত্ব (TMC review meeting on Sagardighi Defeat points Sabotage) ।
বৈঠকে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব অন্তর্ঘাতের দিকেই আঙুল তুলেছেন । একই সঙ্গে সাগরদিঘি কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক উঠে এসেছে বিশ্লেষণের কাটাছেঁড়ায় । তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের রাজ্য নেতৃত্ব অবিলম্বে সাগরদিঘিতে পরাজয়ের কারণ নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে । অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমরা রিপোর্ট দেখেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন । এই ফলাফলে মুর্শিদাবাদ জেলা নেতৃত্বের উপর ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও । ফলে তৃণমূলে এখন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি ।
ওয়াকিবহাল মহল বলছে, একটি উপ-নির্বাচনের ফলাফল সরকার বদলের ক্ষেত্রে কোনও অনুঘটক হতে পারে না । তবে সাগরদিঘির ফলাফল রাজ্য-রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে । নির্বাচন থেকে বাড়তি অক্সিজেন পেয়েছে বাম-কংগ্রেস জোট । পঞ্চায়েত নির্বাচনে এটাই জোটের ইউপিএস হতে চলেছে । তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটাও দেখতে শুরু করেছেন অনেকে ।
এই পরিস্থিতিতে জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে গোপন বৈঠকে বসেন শীর্ষ নেতৃত্ব । সংবাদমাধ্যমের প্রবেশাধিকার ছিল না সেখানে । তৃণমূল সূত্রে খবর, আলোচনায় সর্বপ্রথম উঠে এসেছে দলের অন্তর্ঘাতের প্রসঙ্গ । দলের একটা শ্রেণি দল এবং প্রার্থীর বিরুদ্ধেই প্রচার চালিয়েছে বলে অভিযোগ । অন্যদিকে শুরু থেকেই সাগরদিঘির তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে দলের একাংশ নিমরাজি ছিল । তাদের দাবি, 2016 সালে দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্য়ায় নির্দল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন । 2021 সালে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে প্রচার করেছিলেন । এবার স্রেফ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পারিবারিক আত্মীয় হিসাবে টিকিট পেয়েছিলেন । কিন্তু তা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি ।
আরও পড়ুন: মমতাকেও যে হারানো যায় দেখিয়ে দিল সাগরদিঘি, তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি অধীরের
জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, "দলের মধ্যে অন্তর্ঘাতের কিছু অভিযোগ আমরা পাচ্ছি । সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।" জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান কানাই মণ্ডলও এই অভিযোগ মেনে নিয়েছেন । তিনি বলেন, "বুথস্তরে দায়িত্বে থাকা নেতাদের ভুমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।"