জঙ্গিপুর, 3 মার্চ: সাগরদিঘি উপ-নির্বাচনে তিনবারের জেতা আসন হাতছাড়া হয়েছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ৷ তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের হারের এই কারণ নিয়ে পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসছে জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ উপ-নির্বাচনে প্রায় 23 হাজার ভোটের ব্যবধানে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের কাছে হারতে হয়েছে তৃণমূল প্রার্থীকে (TMC loses in Sagardighi) ৷
ভোটে দলের এই ফল নিয়ে সন্তুষ্ট নন প্রার্থী থেকে শুরু করে তৃণমূলের কোনও মহলই । হারের কারণ খতিয়ে দেখতে শুক্রবার প্রথম দফার আলোচনায় বসছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ প্রথম দিনের আলোচনায় ডাকা হয়েছে সাগরদিঘির এগারোটি অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা নেতাদের । তৃণমূল সূত্রে খবর, নির্বাচন পরিচালনায় এই অঞ্চলগুলির দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতাদের কাছে হারের কারণ জানতে চাওয়া হবে ৷ জেলার বিধায়ক তথা রাজ্যের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামানেরও এদিনের বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা ।
এই বৈঠক প্রসঙ্গে জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি তথা জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান জানান, এই পরাজয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনার দরকার রয়েছে । তাই এদিন প্রথম দফায় আলোচনায় বসা হবে ৷ একইসঙ্গে তৈরি করা হবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ব্লু-প্রিন্টও ৷ তবে রাজ্য নেতৃত্বের তরফে এই বিষয়ে কিছু নির্দেশ দিয়েছেন কি না সে বিষয়ে মুখ খোলেননি জেলার তৃণমূল নেতারা ।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ভোট গণনার তৃতীয় রাউন্ড থেকেই জঙ্গিপুর ও বহরমপুরে তৃণমূলের কার্যালয় ফাঁকা হতে শুরু করেছিল ৷ বৃহস্পতিবার দিনভর খাঁ খাঁ করছে এই দুই কার্যালয় । শুক্রবার সকালেও প্রায় একইরকম অবস্থা ছিল তৃণমূল কার্যালয়ের ৷ দু-একজন কর্মীর দেখা মিললেও নেতাদের দেখা সেভাবে মেলেনি ৷
আরও পড়ুন: 'দলের কিছু মন্ত্রীর অপকর্মের কারণে লাল কার্ড দেখতে হয়েছে', সাগরদিঘির পরাজয়র পর মন্তব্য সাংসদ অপরূপার
তবে সাগরদিঘির ফলাফল এখন তৃণমূল নেতাদের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের নিরিখে দেখলে এই উপ-নির্বাচনে এগারোটি অঞ্চলের মধ্যে কেবলমাত্র বাড়ালা অঞ্চলে লিড পেয়েছে ঘাসফুল শিবির । বাকি অঞ্চলগুলিতে পিছিয়ে গিয়েছে তারা । সাগরদিঘি এলাকায় গত বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল 13 হাজার 71 ভোট । এবার সেই অঞ্চল দিয়েছে মাত্র 6 হাজার 816 ভোট । তৃণমূল সূত্রে খবর, বৈঠকে এলাকা ধরে ধরেই দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে এই ফলের ব্যাখ্যা চাওয়া হবে ৷
এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা মন্ত্রী আখরুজ্জামান, জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান তথা নবগ্রামের বিধায়ক কানাই মণ্ডল, জঙ্গিপুরের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেন, লালগোলার বিধায়ক মহম্মদ আলি, বহরমপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়-সহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের ৷ এই ফল প্রসঙ্গে নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, "দল যেমন নির্দেশ দিয়ে দায়িত্ব দিয়েছিল সেই নির্দেশ মেনেই কাজ করেছি । প্রচারে নেমে যে সাড়া পেয়েছিলাম তাতে আশাবাদী ছিলাম । কোন সমীকরণে এই ফল হল বুঝতে পারছি না ।" তবে জেলা তৃণমূলের একাংশ এই খারাপ ফলের জন্য দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেও অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন ৷