আন্দি (মুর্শিদাবাদ), 6 জুন: ঘরের অবস্থা সঙ্গীন ৷ বৃষ্টির সময় খড়ের চাল বেয়ে জল পড়ে ঘরে ৷ কখনও কখনও বৃষ্টি হলে ঘরে সাপও ঢুকে যায় ৷ এমনই অবস্থা ৷ এই সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও উচ্চমাধ্যমিকে 95 শতাংশ নম্বর পেয়েছে সুস্মিতা চক্রবর্তী ৷ কিন্তু আর্থিক অবস্থা ও ঘরবাড়ি একদমই ভালো নয় ৷ বাবা উদয় চক্রবর্তী পুজো করার পাশাপাশি দিনমজুরের কাজ করেন ৷ সম্প্রতি তাঁর শরীরও অসুস্থ ৷ মা বাবলি চক্রবর্তী গৃহবধূ ৷
সুস্মিতার এখন একটাই চিন্তা, এত কষ্ট করে পড়াশোনা করে এত শতাংশ নম্বর পাওয়াটা কি বিফলে যাবে ? কে জোগাবে স্নাতকস্তরের পড়াশোনার খরচ ৷ অর্থের অভাবে কি সুস্মিতার শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে ? এই দুশ্চিন্তায় কুরে কুরে খাচ্ছে সুস্মিতা ও তাঁর বাবা-মাকে ।
মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞা থানার আন্দিতে এক চালের কুঁড়ে ঘরে একমাত্র মেয়ে নিয়ে বাস করেন উদয় ও বাবলি চক্রবর্তী । ছিটে বেড়ার দেওয়াল ভেঙে পড়েছে, টিনের ছাউনিটাও এবার বিরাম চাইছে তার দায়িত্ব থেকে । কোনও রকমে সেখানেই মাথা গুঁজে মেয়েকে নিয়ে রয়েছেন তাঁরা । আর্থিক অভাব, অল্প পরিসরে থেকেও আন্দি লাল চাঁদ ছাজের উচ্চ বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্রী সুস্মিতার উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর 473 । মেয়ের এহেন সাফল্যে আনন্দ হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু যা অর্থের অভাব কী করে মেয়ে এই সাফল্য ধরে রাখবে তা ভেবেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বাবা মায়ের কপালে ৷ মুর্শিদাবাদ জেলায় নম্বরের ভিত্তিতে সুস্মিতার স্থান সপ্তমে । তবে স্নাতকস্তরে পড়াশোনা শুরু করার জন্য কৃতী এই ছাত্রীর প্রয়োজন আর্থিক সহায়তা ।
আরও পড়ুন : বাবা পেশায় দর্জি, দারিদ্রতাকে জয় করে উচ্চমাধ্যমিকে দশম সুদীপ
এহেন অবস্থার খবর পেয়ে সোমবার আন্দি গ্রামে গিয়ে দুঃস্থ ও মেধাবী সুস্মিতাকে সংবর্ধনা জানিয়ে তার ভর্তি বাবদ আর্থিক সাহায্য ও আগামীতে পড়াশোনার খরচ চালানোর আশ্বাস দিয়েছেন বড়ঞা পঞ্চায়েত সমিতি পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা বড়ঞা ব্লক সহ সভাপতি মাহে আলম । বিষয়টি নিয়ে ব্লক প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলেও জানান তিনি ৷ এমনকী যত দ্রুত সম্ভব বাড়িঘর মেরামতির জন্য ব্যবস্থাও করবেন বলে জানিয়েছেন ৷