আসানসোল ও মুর্শিদাবাদ, 9 জুলাই : চারদিন আগে হওয়া একটি বোমা বিস্ফোরণের (bomb blast) এফআইআর (FIR) নম্বর আছে তাঁর কাছে, দাবি করলেন জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন (National Commission for Minorities)-এর ভাইস-চেয়ারম্যান আতিফ রশিদ (Atif Rasheed) ৷ আর তখন নির্বাচন কমিশন (Election Commission) ছিল না সেখানে ৷ ঘটনাটি মুর্শিদাবাদের ৷ ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনার তদন্তে এসে বৃহস্পতিবার এই উদাহরণ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের চোখে অবস্থা দেখে আসার পরামর্শ দিলেন তিনি ৷
ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনার তদন্তে 6 জুলাই রাজ্যে এসেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (National Human Rights Commission)-এর একটি দল ৷ নেতৃত্বে রয়েছেন জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন (National Commission for Minorities)-এর ভাইস-চেয়ারম্যান আতিফ রশিদ (Atif Rasheed) ৷
পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জে সুভাষ দাসের বাড়িতে আসে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের 4 সদস্যের বিশেষ দল । সুভাষ দাস এগারা পঞ্চায়েত এলাকার রুইদাস পাড়ার বাসিন্দা ৷ রাজ্য পুলিশের অনুপস্থিতিতে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে বিশেষ দলটি । এছাড়া এলাকার অন্যান্য বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতেও যান তাঁরা । খতিয়ে দেখেন বিধানসভা ভোটের পরে কী সন্ত্রাস চালানো হয়েছিল ওই পরিবার-সহ অঞ্চলে । স্থানীয় বাসিন্দাদের কথাও শোনেন তাঁরা । তবে পরিদর্শনের পর এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি দলের প্রতিনিধিরা ৷
সূত্রের খবর, রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়া এলাকায় যাঁরা নির্বাচনের ফল বেরনোর পর থেকে ঘরছাড়া, তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে প্রতিনিধি দল । তবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে বা পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের গতিবিধি সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল পৌঁছায় দক্ষিণ 24 পরগনার ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে ৷ প্রথমে তাঁরা ক্যানিং থানায় যান ৷ তারপর ক্যানিং পূর্ত বিভাগে আসেন । সেখান থেকে ক্যানিং হাসপাতাল মোড়ে বিজেপির পার্টি অফিসে যান । 2 মে ভোট গণনার পর রাতে বিজেপির এই কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা । এদিন সেখানে তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ক্যানিং পশ্চিম কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অর্ণব রায় । এর পর তাঁরা ক্যানিং সেচ বিভাগের বাংলোয় ভোটের পরে বিজেপির আক্রান্ত কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন ।
আরও পড়ুন : শুভেন্দু-দিলীপের বিরুদ্ধে বলেও শৃঙ্খলা ভাঙেননি সৌমিত্র, সাফাই বঙ্গ বিজেপির সহসভাপতির
ভোট-পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা । এখানে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে । বৃহস্পতিবার এখানে এসে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের আক্রান্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন ৷ তারপর কুলবির সিং-এর নেতৃত্বে চোপড়ার ঘিরনিগাঁও গ্রামপঞ্চায়েতের গুয়াবাড়ি-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন তাঁরা ৷ সঙ্গে ছিলেন চোপড়া থানার পুলিশ আধিকারিকেরাও ।
হাওড়ায় উলুবেড়িয়া 1 নং ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসে দীর্ঘ আলোচনার পর বাগনানের নাচক, তামুলতলা ও জলপাই এলাকা পরিদর্শন করলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা । সেখানে অত্যাচারিত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা । এই প্রসঙ্গে মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা জানান তাঁদের কাছে যাঁরা অত্যাচারের অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের এফআইআর নেওয়া থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পদক্ষেপ করেছে কি না এবং ভবিষ্যতে পুলিশ কী পরিকল্পনা নেবে সেই সব বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে । পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা হয়েছে । এই সব তথ্য অনুযায়ী আগামী পদক্ষেপ করবে মানবাধিকার কমিশন, জানিয়েছেন সদস্যরা ।
এই জেলাগুলি ছাড়া মালদা ও মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় যায় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, মালদার তুলনায় মুর্শিদাবাদ থেকে অনেক বেশি অভিযোগ পেয়েছেন তাঁরা ৷
আরও পড়ুন : দলবিরোধিতায় এবার কড়া পদক্ষেপ বিজেপির, প্রথমেই নজরে রাজীব-সব্যসাচী