রেজিনগর, 6 জুলাই : দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে হারিয়েছেন কর্মক্ষমতা । ছ'জনের সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী তিনিই । চিকিৎসার খরচা কুলিয়ে উঠতে পারছেন না । চার ছেলেমেয়ে সহ ছ'জনের সংসার চলে বিবির বিড়ি বাঁধার উপার্জনে । দিন কাটছে একবেলা খেয়ে, কখনও অনাহারে । বন্ধ ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা । রোগ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে আত্মহত্যার অনুমতি চেয়ে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি পাঠালেন রেজিনগর থানার কাশীপুরের ষাটোর্ধ্ব ইয়াসিন শেখ । চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যের রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে । রাষ্ট্রপতির চিঠির উত্তরের অপেক্ষায় দিন কাটছে পরিবারের ।
পেশায় ক্ষেতমজুর ইয়াসিন শেখের বিবাহযোগ্যা দুই মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে । একচালার ফুটোফাটা এক চিলতে বসত বাটি ছাড়া নিজের বলতে কোনও জমিজমা নেই । পরের জমিতে খেটেই অভাবের সংসার কোনওরকমে চলত । বছর দেড়েক আগে কলকাতার NRS হাসপাতালে চিকিৎসা করতে গিয়ে ধরা পড়ে ফুসফুসের ক্যানসার । দুমাস অন্তর চিকিৎসার জন্য যেতে হত ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতালে । লকডাউনের সময় থেকে তাও বন্ধ রয়েছে । সংসার চলে স্ত্রী রহিমা বিবির বিড়ি বাঁধা রোজগারে । দৈনিক আয় 50-60 টাকা । চিকিৎসার খরচ আসবে কোথা থেকে? এদিকে শারীরিক যন্ত্রণা ক্রমশই অসহ্য হয়ে উঠছে ইয়াসিন শেখের কাছে । ভগ্ন শরীরে বিছানায় শুয়ে সংসারের কথা, ছেলেমেয়েদের কথা ভাবেন । কোনও দিকে কোনও রাস্তা খোলা না পেয়ে অবশেষে ইচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি পাঠালেন ইয়াসিন শেখ ।
তিনি বলেন, "এছাড়া আর কোনও উপায় নেই । আমার জন্য সংসার ভেসে যাবে তা আমি মানতে পারব না ।" আক্ষেপ দুই মেয়ের বিয়ে দিতে না পারা আর দুই ছেলেকে স্বাবলম্বী করে তুলতে না পারা । স্বামীর অসহায় অবস্থা দেখে আড়ালে চোখের জল ফেলা ছাড়া কিছুই করণীয় নেই বিবি রহিমা বিবির । সামান্য উপার্জনে এখন তিনিই ছেলেমেয়ের মুখে একবেলার খাবার অন্তত তুলে দিতে পারছেন ।