মুর্শিদাবাদ, 21 মে: পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলের কর্মীদের চাঙ্গা করা এবং নীচু তলার কর্মীদের কাছে পৌঁছনো দলের লক্ষ্য ৷ নির্বাচনের আগে সাধারণকর্মী থেকে দলীয় সমর্থক এবং আমজনতার মধ্যে জনসংযোগ তৈরি করতে নবজোয়ার কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ৷ ঠিক সে সময় প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ৷ শনিবার সন্ধেয় মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে বিধায়ক কার্যালয়ের বাইরে বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের অনুগামীদের মারধর করার অভিযোগ উঠল ব্লক তৃণমূল সভাপতি নজরুল ইসলাম ওরফে টার্জেনের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, এদিন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর দলীয় কর্মীদের নিয়ে নিজ কার্যালয়ে একটি বৈঠক করছিলেন ৷ সেই সময়ে স্থানীয় ব্লক তৃণমূল সভাপতি নজরুল ইসলামের অনুগামীরা হঠাৎই এসে হামলা চালায় । অতর্কিত হামলায় কার্যালয়ের বাইরে থাকা একাধিক তৃণমূলের কর্মী আহত হন । গুরুতর আহত অবস্থায় সকলকেই প্রথমে ভরতপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা ।
শুক্রবার ভরতপুর এলাকায় বিধায়কের কার্যালয়ের কাছে একটি জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেই সভাতেই ব্লক তৃণমূল সভাপতি নজরুল ইসলামকে আলাদা দল গঠন ও দলবিরোধী কার্যকলাপ নিয়ে তীক্ষ্ণ মন্তব্য করে ছিলেন বিধায়ক হুমায়ুন কবির । বিধায়কের এমন মন্তব্য যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল। সেই কারণেই তৃণমূলের দু-পক্ষের মধ্যে এমন সংঘর্ষ বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনায় জখম হন অনেকেই । রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ।
এ প্রসঙ্গেই বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, "আমার প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়েছে । আজ আমি বিনা সিকিউরিটিতে এসেছি জেনেই হয়তো এমন পদক্ষেপ নিয়েছে । পুলিশ সুপারকে বলার পরও বাড়ানো হয়নি নিরাপত্তা । যারা এইভাবে অতর্কিতে হামলা করে তারা কাপুরুষ ছাড়া আর কিছু নয় । তাদের যোগ্য জবাব সময় মত দেওয়া হবে ।"
হুমায়ুনের অনুগামী ইমতাজ আলী জানায়, বিধায়কের সঙ্গে তাদের ঘরে বৈঠক চলছিল ৷ সে সময় শামিম শেখ নামে এক কর্মীকে বাইরে ডাকে এক ব্য়ক্তি ৷ শামিম শেখ ও আরও কয়েকজন ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে এলে জনাষাটেক লোকজন লাঠি ও রড নিয়ে আক্রমণ চালায় তাদের উপর ৷ বিধায়কের বেশ কয়েকজন অনুগামী আহত হন ৷ মেহবুব নামে এক ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে ।
আরও পড়ুন: পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূলের অন্দরের কোন্দলে বিরক্ত অভিষেক, দিলেন কড়া বার্তা
যার বিরুদ্ধে এই হামলার অভিযোগ, সেই ব্লক সভাপতি নজরুল ইসলাম অবশ্য হামলার দায় বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের উপর চাপিয়েছেন ৷ তিনি জানান, বিধায়কের নির্দেশেই কয়েকজন এসে তাঁর অনুগামীদের উপর হামলা করেন। তাতে 3-4 জন দলীয় কর্মী আহত হয়েছেন । ঘটনাটিকে নিন্দনীয় বলে আখ্যা দিয়েছেন নজরুল।