মুর্শিদাবাদ, 12 জুন : সবে লকডাউন শিথিল হয়েছে৷ তার মাঝে 5 জুন কেরালার নানুর জেলায় রেল লাইন থেকে উদ্ধার হয় মুর্শিবাদের জলঙ্গির বাসিন্দা আসাদুল ইসলামের দেহ ৷ আসাদুল পেশায় শ্রমিক ৷ কেরালার নানুরে কাজ করত ৷ কিন্তু লকডাউন শুরু হওয়ায় সেখানেই আটকে পড়েছিল সে৷ তারপরই আজ ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় বাড়ি ফিরল আসাদুলের দেহ ৷ আসাদুল কী ট্রেনে কাটা পড়েছিল? নাকি আত্মহত্যা? জানা নেই কারোর ৷ কিন্তু পরিবারের লোকেদের দাবি দীর্ঘ লকডাউন, টাকা-পয়সা না থাকায় রেল লাইন ধরে বাড়ি ফেরার পথে ট্রেন দূর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তার ৷ ট্রেনে কাটা পড়ুক বা আত্মহত্যা একটা বিষয় তো নিশ্চিত, যে লকডাউনের হতাশা পিছু ছাড়েনি আসাদুলের ৷
দীর্ঘ লকডাউনে ভিনরাজ্য কর্মরত অধিকাংশ শ্রমিকদের গ্রাস করে হতাশা ৷ বাড়ি ফেরার তাগিদে বাস, ট্রাক, আবার কেউ কেউ রেল লাইন ধরে নিজ রাজ্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ৷ শুধুমাত্র বাড়ি ফিরতে, পরিবার, বাচ্চার মুখ দেখার তাগিয়ে রাত-দিন এক করে কয়েকশো কিলোমিটার হেঁটে হাজারে হাজারে শ্রমিক ৷ অনেক কষ্টে যারা রাজ্যের সীমান্ত অবদি পৌঁছাতে পেরেছিলেন তাদের বেশির ভাগের ঠাঁই হয়েছিল সীমান্ত লাগোয়া কোয়ারানটিনে ৷ কিন্তু অনেকেই সেই রাস্তা টুকুও পৌঁছাতে পারেননি ৷ খাবার না পেয়ে রাস্তায় শেষ নিশ্বাস ছেড়েছেন অনেকেই ৷ আর যারা অনাহার থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন তাঁদের প্রাণ কেরেছে রেল, বা সরকারি বাসের চাকা৷
এই সংগ্রামে যারা জয়ী হয়েছিলেন তাদের অনেকেই আজ হয়তো বাড়িতে বা স্থানীয় কোয়ারানটিনে ৷কিন্তু যাদের প্রাণ গিয়েছিল রাস্তা বা সেই ট্রেন লাইনে তাদের কী হল? প্রাণ ছাড়াই ভালো ৷ দেহটার কী বাড়ি ফেরা হল? সকলের কথা জানানেই ৷ কিন্তু জলঙ্গি ব্লক কংগ্রেস ও বহরমপুরের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরির সহযোগিতায় জলঙ্গি ব্লকের ফরিদপুর অঞ্চলের রথপাড়ায় নিজ বাড়িতে নিথর দেহ এসে পৌঁছেছে আসাদুলের । আসাদুলকে শেষ বারের মতো দেখতে পারায় অধীররঞ্জন চৌধুরিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা ।