সাগরদিঘি (মুর্শিদাবাদ), 16 জানুয়ারি: গত সপ্তাহে জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেনের বাড়িতে আয়কর হানার (IT Raid at House of TMC MLA Jakir Hossain) ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় । রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বর্তমানে এই বিধায়কের বাড়ি থেকে 15 কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে । ইতিমধ্যেই এই নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি তৃণমূল কংগ্রেসকে (Trinamool Congress) কাঠগড়ায় তুলেছে । এই অবস্থায় সোমবার সাগর দিঘিতে সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে জাকির হোসেনের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) । এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জাকির একজন বিড়ি শিল্পপতি । তাঁর যদি দোষ থাকে, তুমি নিশ্চয়ই আইনত তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে । জাকির শুধুমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস করে বলে তাকে টার্গেট করা হচ্ছে ।’’
মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন, ‘‘জাকিরের 20 হাজার যে বিড়ি-শ্রমিক আছে, সেদিকে তোমাদের নজর পড়ে না । তাঁদের মাইনেটা কি ব্যাংকে দেবে ? ক'জন বিড়ি শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে ! ক’টা গ্রামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে ? জাকির তৃণমূল করে বলে এই অবস্থা । বেছে বেছে তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে এজেন্সি পাঠাচ্ছে । জাকিরকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছিল । জাকিরকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে । জাকির বুঝে নেবে ওরটা ।’’
এই মঞ্চ থেকে নাম না করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও (Suvendu Adhikari) এদিন আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি । বলেন, ‘‘আমার দুর্ভাগ্য, কোনও একজনকে এখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দলের পক্ষ থেকে কাজ করার জন্য । তিনি লাইন করে কোন লোকটা শক্তিশালী তাঁর বাড়িতে এজেন্সি পাঠিয়ে দিচ্ছেন । আমি বলি পরের বাড়িতে পাঠানোর আগে আয়নায় নিজের মুখটা তো দেখুন ।’’ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, বিজেপি নেতাদের বাড়িতে কেন ইডি, সিবিআই, আইটি রেড হয় না ? তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী দলের নেতাদের হেনস্তা করতে বারবার কেন্দ্রীয় সংস্থাদের কাজে লাগানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি ৷
এই দিন এই মঞ্চ থেকেই তৃণমূল মুখপাত্র সাকেত গোখলের গ্রেফতারি নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ার কর্মীকে বঙ্গভবন থেকে গ্রেফতার করে নিয়েছে । আমি আমার মুখ্যসচিবকে বলব, বঙ্গভবন রাজ্য সরকারের সম্পত্তি । কেউ যদি বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে আমাদেরও আইনত ব্যবস্থা নিতে হবে । গুজরাত পুলিশ সঙ্গে দিল্লি পুলিশকে এনে বঙ্গভবনের সমস্ত সিসিটিভি খুলে নিয়েছে । এই প্রশ্ন কেউ তুলবেন না ।’’
মমতার কথায়, ‘‘আমি বুলডোজারের পক্ষে নেই । কিন্তু গণতন্ত্রে যাঁরা বুলডোজার চালায়, তাদের আমি বলে দিই বুলডোজারের পরিবর্তে তোমাদের ক্লোজার হবে । সমস্যা তো মানুষের থাকে । একটা সমস্যা হলে আরেকটা সমস্যা চলে আসে । কারও কথা শুনে কোনও কুত্সা অপপ্রচারে পা দেবেন না ।’’
আরও পড়ুন: বুলডোজারের পরিবর্তে তোমাদের ক্লোজার হবে, বিজেপিকে তোপ মমতার