মালদা, 13 মে : বহরমপুরে কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরী হত্যা মামলার বীজ যে অনেক আগেই বপন হয়েছিল, তা এতদিনে স্পষ্ট ৷ এবার পুলিশি-তদন্তে সামনে এল নয়া তথ্য (New information arises in Berhampore college student murder investigation) ৷ যাতে জানা গিয়েছে 2017 অর্থাৎ, পাঁচ বছর আগে মৃত কলেজ ছাত্রীর বাবা স্বাধীন চৌধুরী ইংরেজবাজার মহিলা থানায় একটি জেনারেল ডায়েরি করেছিলেন ঘাতক সুশান্ত চৌধুরীর নামে ৷ মেয়েকে উত্যক্ত করার অভিযোগে সুশান্তর বিরুদ্ধে এই ডায়েরি করেছিলেন সুতপার বাবা ৷ সুশান্ত এবং সুতপা যে অতীতে সম্পর্কে ছিল বলে দুই পরিবারের তরফেই মেনে নেওয়া হয়েছিল, নয়া তথ্য এর বিরুদ্ধে জোরালো সওয়াল তুলে দিল ৷
পাশাপাশি খুনে ব্যবহৃত ছুরি এবং খেলনা বন্দুক কোথা থেকে কিনেছিল সুশান্ত, তাও জানতে পেরেছেন তদন্তকারী অফিসাররা ৷ এই দুই সূত্রকে সঙ্গে করে বৃহস্পতিবার সুশান্তকে নিয়ে মালদায় তদন্ত আসেন তারা ৷ গত 2 মে বহরমপুরের শহীদ সূর্য সেন রোডে কুপিয়ে খুন করা হয় তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে ৷ অভিযুক্ত প্রাক্তন প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরীকে কয়েকঘণ্টার মধ্যেই সনাক্ত করে গ্রেফতার করে পুলিশ। সম্প্রতি জিজ্ঞাসাবাদে সুশান্ত পুলিশকে জানায়, সে মালদা শহরের নেতাজি পৌরবাজার এলাকা থেকে খুনে ব্যবহৃত ছুরি কিনেছিল ৷ এর ভয় দেখানোর জন্য ব্যবহৃত খেলনা বন্দুক কিনেছিল অনলাইন থেকে। সুশান্ত জেরায় আরও জানায়, তাঁর এবং সুতপার সম্পর্কের জটিলতার বিষয়টি এলাকায় মীমাংসা হওয়ার পরেও তাঁকে মারধর করা হয়েছিল। সেই থেকেই তাঁর মধ্যে ক্ষোভের উদ্রেগ হয়।
বৃহস্পতিবার রাত আটটা নাগাদ বহরমপুর থানার পুলিশ সুশান্তকে নিয়ে ইংরেজবাজার এসে পৌঁছয় (Main accused in Berhampore college student murder taken to Englishbazar by investigating officers)। রাত ন'টা নাগাদ সুশান্তকে নিয়ে যাওয়া হয় নেতাজি পৌরবাজারে। ভিড় এড়াতে এবং নিরাপত্তার খাতিরে দোকান সনাক্তকরণের জন্য রাতের দিককে বেছে নেওয়া হয় ৷ দোকান সনাক্তকরণের পর বহরমপুর থানার পুলিশ মালদা শহরে সুতপার বাড়ি এয়ারভিউ কমপ্লেক্সের দিকে রওনা দেয়। সেখানে সুতপার পিসির সঙ্গে দেখা করা না-গেলেও সুতপার বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারী অফিসারেরা ৷
আরও পড়ুন : সুতপার বান্ধবীকে সোর্স করেই প্রেমিকার উপর নজরদারি চালাত সুশান্ত
2017 সুশান্তর বিরুদ্ধে জেনারেল ডায়েরি প্রসঙ্গে সুতপার বাবা বলেন, "ওই বছর মার্চ-এপ্রিল নাগাদ আমি ইংরেজবাজার মহিলা থানায় জেনারেল ডায়েরি করেছিলাম। সে সময় ডায়েরিতে জানিয়েছিলাম, আমার মেয়েকে রাস্তাঘাটে উত্যক্ত করত সুশান্ত । এরপর পুলিশের কী ভূমিকা ছিল, তা আমার জানা নেই ৷ কারণ, আমি নিজেও এ নিয়ে আর বেশি দূর এগোইনি ৷ তখন যদি পুলিশের দ্বারস্থ হতাম তবে হয়ত মেয়েকে এভাবে খুন হতে হত না ৷"