জলঙ্গি, 30 অক্টোবর: সীমান্তের ওপারে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হিংসার রেশ টের পাওয়া যাচ্ছিল ক’দিন আগে পর্যন্তও ৷ কিন্তু একটি মৃত্যু ফের সকলকে একসুতোয় বেঁধে দিয়ে গেল মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে ৷ যাবতীয় সঙ্কীর্ণতা সরিয়ে রেখে ঝাঁপিয়ে পড়লেন হিন্দু-মুসলিম দুই পক্ষই ৷ মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া থেকে শবদাহ, সবেতেই একযোগে অংশ নিতে দেখা গেল সকলকে ৷
পুজোর সময় বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় কয়েক দিন আগে পর্যন্ত থমথমে পরিবেশ ছিল সীমান্ত লাগোয়া জলঙ্গির সাদিখান্দেয়া পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ইনাতপুর তাঁতিপাড়ায় ৷ কিন্তু পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক, পাড়ার বাসিন্দা অশোক প্রামাণিকের (45) অকস্মাৎ মৃত্যুতে সব কিছু পাল্টে গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন: Adhir Ranjan Chowdhury : পিকে-মমতাকে একফলায় বিঁধে আক্রমণ অধীরের
গত 15 বছর ধরে কেরালায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন অশোকবাবু ৷ রোজগার করে যা পাঠাতেন, তাতেই কোনও রকমে গ্রামে খেয়ে-পরে বাঁচতেন মা, স্ত্রী এবং দুই ছেলে ৷ দিন সাতেক আগে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কেরালায় মারা যান অশোকবাবু ৷ হাতে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায়, সেখান থেকে তাঁর দেহ ফেরাতে চরম সঙ্কটে পড়ে পরিবার ৷
এমন পরিস্থিতিতে ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ান গ্রামের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন ৷ বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা সংগ্রহ করা হয় ৷ তার পর ফিরিয়ে আনা হয় অশোকবাবুর দেহ ৷ তবে সেখানেই থেমে থাকেনি সহযোগিতা ৷ চাঁদা তুলেই শবদাহ করা হয় ৷ কাঁধে করে দেহ শ্মশানে নিয়ে যান মুসলিমরা ৷
আরও পড়ুন: Adhir Choudhury: বহরমপুর হাসপাতালের বাইরে গৃহহীনদের পুনর্বাসনের দাবিতে মমতাকে চিঠি অধীরের
মনুষ্যধর্ম পালনের এই নজিরবিহীন ঘটনায় ম্লান হয়ে গিয়েছে কয়েক দিন আগের টানটান উত্তেজনার পরিবেশ ৷ সম্প্রতি সামশেরগঞ্জেও একই ঘটনা চোখে পড়ে ৷ তবে এতে আশ্চর্যের কিছু নেই বলে মনে করছেন স্থানীয়রা ৷ তাঁদের মতে, মনুষ্যধর্মই সবচেয়ে বড় ধর্ম ৷