হরিহরপাড়া (মুর্শিদাবাদ), 20 জানুয়ারি: পুলিশের তৎপরতায় ভেস্তে গেল অপহরণের ছক ৷ মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ধরে উদ্ধার করা হল আক্রান্ত যুবককে ৷ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় তাঁরই পাঁচ বন্ধুকে (Five Friends Arrested for Kidnapping) ! আদালতের নির্দেশে আপাতত পাঁচদিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন ধৃতরা ৷ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) হরিহরপাড়ায় (Hariharpara) ৷
আক্রান্ত যুবকের নাম আলি আকবর ৷ তিনি আদতে মালদার কালিয়াচকের বাসিন্দা ৷ মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি ৷ তাঁর স্ত্রী জুলেখা বিবি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন, দিন কয়েক আগে ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি এসেছিলেন তিনি ৷ তাঁদের নিয়ে যেতে শ্বশুরবাড়ি আসেন আলি ৷ সেই সময় আলির পাঁচজন বন্ধুও জুলেখাদের বাড়িতে আসেন ৷ বন্ধুর শ্বশুরবাড়িতে খাওয়া-দাওয়ার সারেন তাঁরা ৷ তারপর ঘুরতে যাওয়ার নাম করে আলিকে একটি গাড়িতে তুলে জুলেখাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান ৷
আরও পড়ুন: ঘুড়ি কিনে দেওয়ার নামে শিশুকে অপহরণের অভিযোগ প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে
এই ঘটনার দীর্ঘক্ষণ পরও আলি ও তাঁর পাঁচ বন্ধু না ফেরায় চিন্তায় পড়ে যান তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ৷ উপরন্তু, আলি এবং তাঁর বন্ধুদের মোবাইলে লাগাতার ফোন করা হলেও কোনও সাড়া মেলে না ৷ সবক'টি ফোনই সেই সময় সুইচড অফ ছিল ! এতেই সন্দেহ হয় জুলেখার বাড়ির সদস্যদের ৷ তাঁরা স্থানীয় থানায় এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন ৷ আলি ও তাঁর পাঁচ বন্ধুর মোবাইল লোকেটশন ট্র্যাক করে পুলিশ তাঁদের অবস্থান বুঝতে পেরে যায় ৷ এরপর অভিযান চালিয়ে লালগোলা থেকে তাঁদের গাড়িটিকে আটকানো হয় ৷
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ঘুরতে যাওয়ার নাম করে আদতে আলিকে অপহরণ করতে চেয়েছিলেন তাঁর পাঁচ বন্ধু ! এরপরই অভিযুক্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয় ৷ এঁরা হলেন ওয়াসিফ আলি, মহম্মদ আলাউদ্দিন, অজিত শেখ, হাজিকুল শেখ ও হাবিবুর খান ৷ এঁরাও মালদার কালিয়াচকেরই বাসিন্দা ৷ ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, আলি আকবর ও ওয়াসিফ আলি আদতে দালাল ৷ ভিনরাজ্যে শ্রমিক পাঠানোর কাজ করেন তাঁরা ৷ এই ব্যবসা চলে দুই বন্ধুর অংশীদারিত্বে ৷ কিন্তু, সম্প্রতি ব্যবসায়িক বিষয় নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্য়ে মনোমালিন্য তৈরি হয় ৷ তার জেরেই আলি আকবরকে অপহরণ করার ছক কষেন ওয়াসিফ ৷ সেই কাজে তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন বাকি চারজন ৷
ধৃত পাঁচজনকে গ্রেফতারের পরই মুর্শিদাবাদের বহরমপুর আদালতে পেশ করা হয় ৷ বিচারক পাঁচজনকেই চারদিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন ৷ তবে, ঠিক কী কারণে আলি ও ওয়াসিফের মধ্যে ব্যবসায়িক সমস্যা শুরু হল, সেটা এখনও স্পষ্ট নয় ৷ ধৃতদের জেরা করে এই বিষয়ে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ ৷ এই ঘটনায় তাঁদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছেন কিনা, তারও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে ৷