রঘুনাথগঞ্জ, 18 জুলাই: কনের ঠোঁটে লিপস্টিক পড়াকে কেন্দ্র করে তুলকালাম বিয়ে বাড়িতে। বিদায়ের আগে পাত্রপক্ষ পাত্রীপক্ষের সংঘর্ষে বর-সহ জখম মোট আট। মাথা ফাটল বরের ৷ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাত্র-সহ পাঁচজন ৷ ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের রঘুগঞ্জের সন্তোষপুরে ৷ ঘটনায় পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ৷
আক্রান্ত বর মনিরুল শেখ অভিযোগ করে বলেন, "বিয়েতে সবাই কনেকে সাজায় ৷ পাত্রীকেও সাজানো হয়েছিল ৷ কিন্তু আমরা একটু সাধারণ সাজ চেয়েছিলাম ৷ কিন্তু পাত্রীর বাড়ির লোকজন পাত্রীকে খুব বেশি সাজিয়েছিল ৷ আমরা শুধু লিপস্টিক পড়াতে আপত্তি জানিয়েছিলাম। তাতেই অগ্নিমূর্তি হয়ে আমাদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করে পাত্রীর বাড়ির লোকজন ৷
অন্যদিকে, পাত্রী পক্ষের পালটা অভিযোগ, "পাত্রীকে সাজানো নিয়ে বরপক্ষের সঙ্গে বচসা শুরু হয় ৷ বরযাত্রীরা অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করায় আমরা মেজাজ ঠিক রাখতে পারিনি। তবে ওরা পালটা হামলা চালিয়েছে।"
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ন'মাস আগে সাগরদিঘি থানার, শেখদিঘির মনিরুল শেখের সঙ্গে আইনি বিয়ে হয় সন্তোষপুরের এক যুবতীর। সোমবার ছিল আনুষ্ঠানিক বিয়ে। বরযাত্রীদের জন্য এলাহি আয়োজনও করা হয়েছিল। আপ্যায়নের কোনও ত্রুটি রাখেনি কনেপক্ষ। প্রায় শ'খানেক বরযাত্রীকে খাওয়ানোর পাটও চুকে যায় দুপুর একটা নাগাদ। কাজি দিয়ে নিকাহ হয় যথারীতি। কাজির সামনে বর-কনে সন্মতি দিলে বিয়ে সম্পন্ন হয়। কিন্তু তারপরই বিপত্তি ঘটে
বিকেলে বিদায়ের আগে কনে সাজানোর পালা চলছিল। আর সেখানেই আপত্তি তুলেছিল বর এবং বরপক্ষ। তাদের দাবি কনে সাজাতে লিপস্টিক আর টিপ ব্যবহার করা হবে না। এমন আপত্তি মানতে রাজি হয়নি কনেপক্ষ। শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। এরপর তা গড়ায় হাতাহাতিতে। চলে লাঠি, বাঁশ, লোহার রড নিয়ে সংঘর্ষ। তাতেই মাথা ফাটে বরপক্ষের বর-সহ পাঁচজনের। অল্পবিস্তর কনেপক্ষের বেশ কয়েকজনও জখম হয়। খবর যায় রঘুনাথগঞ্জ থানায়।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে প্রেমিকের সঙ্গে অভিসারে তরুণী, ধরা পড়তেই চলল গণধোলাই
পুলিশ পৌঁছে দু'পক্ষকে শান্ত করে। বর-সহ পাঁচজনকে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে। বরের মাথায় পাঁচটি সেলাই পড়েছে। এই ঘটনায় সোমবার কনের আর শ্বশুরবাড়ি যাওয়া হয়নি। রঘুনাথগঞ্জ থানার পুলিশ জানিয়েছে, কোন অভিযোগ দায়ের হয়নি। পরিস্থিতি দ্রুত সামাল দেওয়া হয়েছে। মনিরুলের কাকা ইসরাফিল শেখ জানান, এমনকিছু আপত্তিকর কথা বলা হয় ৷ শুধু বলা হয়েছিল, কনেকে টিপ ও লিপস্টিক না পড়াতে ৷ তাতেই ওরা ক্ষেপে যায়। মেয়ের বাড়ির এক আত্মীয় বদরুল হাজি জানান, মেয়ে সাজাতে সবাই টিপ, লিপস্টিক পড়ায়। হাদিশেও তার কোন বারণ নেই। তাহলে আপত্তি শোনা হবে কেন ? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রাম্য সালিশিসভা ডেকেই মীমাংসা করা হবে এই ঘটনার।