মুর্শিদাবাদ, 17 এপ্রিল: শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে টানা 65 ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হলেন বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা । সোমবার ভোর 5টা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার রাত আড়াইটা নাগাদ সিবিআইয়ের একটি কনভয় বড়ঞায় এসে পৌঁছয়। আধিকারিকদের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল এসে পৌঁছয় বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে। আর তারপরই ভোর 5টা নাগাদ তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্তে অসহযোগিতা ও তথ্য প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা, মূলত এই দুই অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ৷
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে শুক্রবার বেলা সাড়ে 12টা নাগাদ জীবনকৃষ্ণের বড়ঞার বাড়িতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি দল। তল্লাশি চালানো হয় তাঁর অফিস-সহ একাধিক জায়গায়। জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগও আনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সিবিআই সূত্রে খবর, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় শুক্রবার বিকেলের দিকে নিজের দু'টি মোবাইল বাড়ির পিছনের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেন তিনি। ছোড়েন দু'টি পেনড্রাইভ এবং একটি হার্ডডিস্কও।
সেগুলিরও খোঁজ চালানো হচ্ছিল। একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হলেও, এত পরিকল্পনার পরও মেলেনি অপর মোবাইলটি। সেইসঙ্গে 6টি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক নিয়োগ সংক্রান্ত নথি ৷ সিবিআইয়ের দাবি, জীবনকৃষ্ণ নিয়োগ দুর্নীতির এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। তাঁর মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতির বহু টাকার লেনদেন হত বলেও অনুমান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তকারীদের।
আরও পড়ুন: কাদা ঘেঁটে চলছে 'জীবনের ধন' উদ্ধারপর্ব, খোঁজ নেই দ্বিতীয় মোবাইলের
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই নিয়ে তিন তৃণমূল বিধায়ককে গ্রেফতার করা হল ৷ এর আগে বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। গ্রেফতারির সময় পার্থ রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও ছিলেন । এই দু'জনই এখন জেলে। সেই তালিকাতেই নতুন নাম জুড়ল বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণের। পাশাপাশি এই ঘটনাকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতি যে নতুন করে উত্তাল হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের উপর চাপ বাড়াতে এই গ্রেফতারিকে নয়া হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে বিরোধী শিবির ।