বহরমপুর, 14 সেপ্টেম্বর: ছোট থেকেই গিটার তাকে টানে ৷ গিটারের তারে সুর তুলে বছর দুই আগেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নাম তোলে অষ্টম শ্রেণির কিশোর ৷ আর এ বার তার মুকুটে জুড়ল আরও একটি পালক ৷ 2023 সালে চোখ বেঁধে গিটারে সুরের ঝংকার তুলে এশিয়া বুক অফ রেকর্ডসের সম্মান এল কিশোরের মুর্শিদাবাদের বাড়িতে ৷
বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থের বাসিন্দা স্বসৃক কর্মকার ৷ 2021 সালে মাত্র 30 মিনিটে 15টি গানের সুর গিটারে বাজিয়ে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের সম্মান পায় কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের এই পড়ুয়া ৷ এ বার চলতি বছরে সে এশিয়া বুক অফ রেকর্ডসে নাম তুলে ফেলেছে ৷ এক ঘণ্টা আট মিনিটে 25টি গানের সুর গিটারে বাজিয়েছে এই কিশোর । তাও আবার চোখ বেঁধে ৷
বাবা দিব্যেন্দু কর্মকার একটি বেসরকারি ফার্মে কাজ করলেও, তাঁর নেশা তবলা বাজানো ৷ তাঁরই অনুপ্রেরণায় ছোটবেলা থেকে সঙ্গীতের আবহে বড় হয়ে ওঠা স্বসৃকের ৷ ছেলের সঙ্গে গিটারে তবলায় সঙ্গত করে উৎসাহ দেন দিব্যেন্দু । ছেলের নয়া সাফল্যে তিনি দারুণ খুশি ৷ তবে সঙ্গীতের পাশাপাশি ছেলের পড়াশোনার উপরও জোর দিতে চান দিব্যেন্দু কর্মকার ৷
স্বসৃকের মা সৃজিতা সিনহা কর্মকার একজন গৃহবধূ । তিনি বলেন, "এই মধ্যবিত্ত পরিবারে ছেলের এই সাফল্যে আমি খুব খুশি ৷ ছোট থেকেই কোনও তার বা সুতো হাতের কাছে পেলেই তা দিয়ে নিজের মনে গুনগুন করে সেই তারে সুর তোলার চেষ্টা করত ও । ছেলের এই কর্মকাণ্ড দেখে তার হাতে গিটার তুলে দিই ৷ এরপর থেকেই স্কুল থেকে ফিরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলত ওর গিটারে মনোনিবেশ । 2021 সালে যখন দেখলাম স্বসৃক গিটারের মাধ্যমে খুব তাড়াতাড়ি গানের সুর তুলতে পারছে, তখনই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে আবেদন করি ৷"
আরও পড়ুন: ডিগ্রি 5, পিজি 3, পিএইচডি, 10 দেশে উপস্থাপনা; বাড়িতে বসে পড়েই গিনেস রেকর্ড যুবতীর
পরবর্তীতে জানানো হয় স্বসৃক কর্মকার ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের জন্য মনোনীত হয়েছে । পরবর্তীতে বাড়িতেও এসে পৌঁছয় সাফল্যের স্বীকৃতি, পদক, শংসাপত্র ও নানাবিধ উপহার । এরপর এ বছর অর্থাৎ 2023 সালে সৃজিতা সিনহা কর্মকার তাঁর পুত্রের গিটার বাজানোর এক এক অভিনব দিক লক্ষ্য করেন । তিনি দেখেন, স্বসৃক গিটারের দিকে না তাকিয়েই সেটি বাজাচ্ছে ৷ তখনই সৃজিতার মাথায় আসে চোখ বন্ধ করে গিটার বাজানোর বিষয়টি ৷ এ জন্য তিনি ছেলের হয়ে এশিয়া বুক অফ রেকর্ডসে আবেদন করেন । সেই আবেদন মঞ্জুর হওয়ায় স্বসৃক এক ঘণ্টা আট মিনিটে চোখ বন্ধ করে 25টি গানের সুর গিটারে বাজিয়ে তার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে পাঠায় । পরে তার কাছে খবর আসে, স্বসৃক এশিয়া বুক অব রেকর্ডেসে মনোনীত হয়েছে ৷ তার বাড়িতে এসে পৌঁছয় পদক, শংসাপত্র ও উপহার ৷
স্বসৃক কর্মকার জানিয়েছে, ছোট থেকেই তার শখ ছিল এই তারের বাজনা । পরবর্তীতে একটু বড় হওয়ার পর তার মা তার হাতে তুলে দেন গিটার । "ছোটবেলায় গিটারের তারে হাত দিয়ে নানা রকম শব্দ শুনে খুব আনন্দ পেতাম ৷ সেই থেকে শুরু গিটারে মনোনিবেশ ।" স্বসৃকের এই সাফল্যে খুশি তার বাবা-মা ৷ ছেলে পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে গিটার নিয়ে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাক, এটাই প্রার্থনা তাঁদের ।