মালদা, ৫ জুন : মালদা জেলা সংশোধনাগারে বিচারাধীন এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল । মৃতের নাম রাজু মণ্ডল (27) । সংশোধনাগারের মধ্যে একটি নির্মীয়মাণ ভবন থেকে আজ দুপুরে তার দেহ উদ্ধার হয় । মৃতদেহের ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত শেষ করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । মৃত যুবকের পরিবারের অভিযোগ, অন্য বন্দীদের অত্যাচারেই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে রাজু ।
মৃত যুবকের বাড়ি মালদা শহরের কৃষ্ণপল্লি সংলগ্ন নেতাজি কলোনি এলাকায় । এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে মাস তিনেক আগে তাকে গ্রেপ্তার করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ । 17 মার্চ থেকে জেলা সংশোধনাগারে ছিল রাজু । মালদা জেলা আদালতেই তার মামলা চলছে । আজ দুপুরে সংশোধনাগারের ভিতরের নির্মীয়মাণ ভবনে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার হয় ।
রাজুর স্ত্রী রূপা মণ্ডল বলেন, "আজ দুপুরে থানা থেকে আমার বাড়িতে লোক আসে । বলে, আমাকে জেলখানায় ডাকা হয়েছে । আমি জেলখানায় এলে কয়েকটি কাগজে সই করানো হয় । তারপর আমাকে ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় । দেখি, আমার স্বামী গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় ঝুলে রয়েছে । এক নাবালিকাকে ধর্ষণ মামলায় আমার স্বামীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল । মাস তিনেক ধরে সে এই সংশোধনাগারে ছিল । আমি শনিবার স্বামীর সঙ্গে কথা বলে গেছি । আমাকে বলেছিল, তার উপর খুব অত্যাচার হচ্ছে । জেলখানায় তাকে খুব বিরক্ত করা হচ্ছে । জেলখানায় থাকা অন্য বন্দীরা তার উপর অত্যাচার চালাচ্ছিল । তারা আমার স্বামীকে মারধর করার পাশাপাশি ভয়ও দেখাত । আমি স্বামীকে চুপ করে থাকতে বলেছিলাম । কেন আমার স্বামী আত্মহত্যা করল বুঝতে পারছি না । আমার বাড়ির লোক আসলে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব ।"
এই ঘটনায় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়নি । মৃতদেহের তদন্তে আসা ম্যাজিস্ট্রেট লিটন সাহাও এনিয়ে বিশেষ কিছু বলতে রাজি হননি । তিনি শুধু বলেন, আজ সংশোধনাগারের ভিতরে একটি নির্মীয়মাণ ভবনে এক বন্দীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে । তিনি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত করেছেন । পরবর্তী পদক্ষেপ পুলিশ ও সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ নিয়েছে । তিনি এর বেশি কিছু বলতে পারবেন না । তবে গোটা ঘটনায় সংশোধনাগারের ভিতর বন্দীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ।