ETV Bharat / state

আর্থিক অনটন, সংসার খরচ দেন না স্বামীও; 18 দিনের সন্তানকে বিক্রি করলেন মা!

Mother Sells Newborn Baby: অভাবের তাড়নায় কোলের সন্তানকে বিক্রি করে দিলেন মা ! বিষয়টি জানাজানি হতেই সন্তানকে ফিরেও পেলেন। তবে সংশ্লিষ্ট পরিবারকে টাকা ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ, এক শাসক নেতা টাকা ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে টালবাহানা করছেন।

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 19, 2023, 7:01 AM IST

Updated : Nov 19, 2023, 7:25 AM IST

মালদা, 19 নভেম্বর: অভাবের তাড়নায় 18 দিনের নবজাতকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করলেন মা ! মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের এই ঘটনা জানাজানি হতেই সদ্যোজাতকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ তবে টাকা ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। অভিযোগ, মায়ের থেকে দেড় লাখ টাকা নিলেও সেটি নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ফিরিয়ে না দিয়ে নিজের কাছেই রেখে দেন তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা । পরে অবশ্য গ্রামবাসীদের চাপে 1 লাখ 20 হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। বাকি টাকা আগামী 10 দিনের মধ্যে ফিরিয়ে দেবেন বলেও কথাও দিয়েছেন। যদিও সংবাদমাধ্যমের সামনে এ কথা স্বীকার করতে চাননি পেশায় শিক্ষক ওই নেতা ৷ গোটা ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷

সংশ্লিষ্ট বিডিওকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমাশাসক ৷ জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর বয়স 20 বছরের আশপাশে। স্বামী ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করলেও সংসার খরচ পাঠান না। মা প্রতি মাসে হাজার পাঁচেক টাকা দেন তা দিয়েই সংসার চলে। তরুণীর আগে থেকেই একটি সন্তান ছিল। এরপর 1 নভেম্বর তিনি আবারও মা হন। দুই সন্তানকে প্রতিপালন করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব বুঝতে পেরে স্বামীর দ্বারস্থ হন তিনি । স্বামী টাকা দিতে অস্বীকার করেন। শুধু তাই নয়, তরুণীর দাবি স্বামী তাঁকে জানান টাকার দরকার হলে অন্য কাউকে বিয়ে করে নিতে। এরপরই সদ্যজাতকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি জানান, এলাকার এক অবাঙালি ওষুধ ব্যবসায়ীর শাশুড়ি ওই সন্তানটি কিনে নেন। তবে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য তথা শাসক নেতার তৎপরতায় শিশুটি মায়ের কাছে ফিরে আসে। এখানেই শাসক দলের ওই নেতার বিরুদ্ধে টাকা ফিরিয়ে দিতে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে। যদিও পেশায় শিক্ষক ওই নেতার বক্তব্য, "ওই বাচ্চাটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া অপরাধ হলে আমি সেই অপরাধ করেছি ৷ শিশু কেনা এবং বিক্রি আইনের চোখে অপরাধ ৷ বিভিন্ন সূত্রে আমি বাচ্চা বিক্রির খবর পেয়েছিলাম ৷ আমি গিয়ে ওই বাচ্চাটিকে তার মায়ের হাতে তুলে দিই ৷ বিক্রির টাকার সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই ৷ আমার শুধু দায়িত্ব ছিল, বাচ্চাটিকে মায়ের কোলে তুলে দেওয়া ৷" পাশাপাশি এই বেচাকেনায় যে ব্যবসায়ী পরিবারের নাম জড়িয়েছে তারাও কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চায়নি।

শিশু কেনাবেচা এবং তার সঙ্গে শাসক নেতার বিরুদ্ধে টাকা ফিরিয়ে দিতে দেরি করা নিয়ে স্বভাবতই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির উত্তর মালদা জেলা কমিটির সদস্য কিষান কেডিয়ার দাবি, সন্তান তাঁর মায়ের কাছে ফিরে গিয়েছে এটা আনন্দের কথা। কিন্তু এই ঘটনা থেকেই প্রমাণ হল টাকার জন্য তৃণমূল সব করতে পারে। অন্যদিকে দলীয় নেতার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে তৃণমূল । আইএনটিটিইউসির ব্লক সভাপতি সাহেব দাসের দাবি, "ঘটনাটি শুনেছি ৷ আমাদেরই এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য সালিশি করে বাচ্চাটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন ৷ তিনি টাকার লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নন ৷ বিরোধীরা ইচ্ছে করে তাঁর নামে কুৎসা করছে ৷ তবে শিশু কেনাবেচা অপরাধ ৷ আমি প্রশাসনকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আবেদন জানাচ্ছি ।"

আরও পড়ুন:

  1. আগ্রায় 20 হাজার টাকায় সদ্যোজাত বিক্রি ! অভিযোগ দায়ের চিকিৎসক-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে
  2. টাকার বিনিময়ে একমাসের মেয়েকে বিক্রির অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে
  3. টাকার অভাব 5 দিনের শিশুকে বিক্রির অভিযোগ বাবা-মার বিরুদ্ধে

মালদা, 19 নভেম্বর: অভাবের তাড়নায় 18 দিনের নবজাতকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করলেন মা ! মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের এই ঘটনা জানাজানি হতেই সদ্যোজাতকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ তবে টাকা ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। অভিযোগ, মায়ের থেকে দেড় লাখ টাকা নিলেও সেটি নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ফিরিয়ে না দিয়ে নিজের কাছেই রেখে দেন তৃণমূলের এক স্থানীয় নেতা । পরে অবশ্য গ্রামবাসীদের চাপে 1 লাখ 20 হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। বাকি টাকা আগামী 10 দিনের মধ্যে ফিরিয়ে দেবেন বলেও কথাও দিয়েছেন। যদিও সংবাদমাধ্যমের সামনে এ কথা স্বীকার করতে চাননি পেশায় শিক্ষক ওই নেতা ৷ গোটা ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷

সংশ্লিষ্ট বিডিওকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন মহকুমাশাসক ৷ জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর বয়স 20 বছরের আশপাশে। স্বামী ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করলেও সংসার খরচ পাঠান না। মা প্রতি মাসে হাজার পাঁচেক টাকা দেন তা দিয়েই সংসার চলে। তরুণীর আগে থেকেই একটি সন্তান ছিল। এরপর 1 নভেম্বর তিনি আবারও মা হন। দুই সন্তানকে প্রতিপালন করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব বুঝতে পেরে স্বামীর দ্বারস্থ হন তিনি । স্বামী টাকা দিতে অস্বীকার করেন। শুধু তাই নয়, তরুণীর দাবি স্বামী তাঁকে জানান টাকার দরকার হলে অন্য কাউকে বিয়ে করে নিতে। এরপরই সদ্যজাতকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি জানান, এলাকার এক অবাঙালি ওষুধ ব্যবসায়ীর শাশুড়ি ওই সন্তানটি কিনে নেন। তবে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য তথা শাসক নেতার তৎপরতায় শিশুটি মায়ের কাছে ফিরে আসে। এখানেই শাসক দলের ওই নেতার বিরুদ্ধে টাকা ফিরিয়ে দিতে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে। যদিও পেশায় শিক্ষক ওই নেতার বক্তব্য, "ওই বাচ্চাটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া অপরাধ হলে আমি সেই অপরাধ করেছি ৷ শিশু কেনা এবং বিক্রি আইনের চোখে অপরাধ ৷ বিভিন্ন সূত্রে আমি বাচ্চা বিক্রির খবর পেয়েছিলাম ৷ আমি গিয়ে ওই বাচ্চাটিকে তার মায়ের হাতে তুলে দিই ৷ বিক্রির টাকার সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই ৷ আমার শুধু দায়িত্ব ছিল, বাচ্চাটিকে মায়ের কোলে তুলে দেওয়া ৷" পাশাপাশি এই বেচাকেনায় যে ব্যবসায়ী পরিবারের নাম জড়িয়েছে তারাও কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চায়নি।

শিশু কেনাবেচা এবং তার সঙ্গে শাসক নেতার বিরুদ্ধে টাকা ফিরিয়ে দিতে দেরি করা নিয়ে স্বভাবতই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির উত্তর মালদা জেলা কমিটির সদস্য কিষান কেডিয়ার দাবি, সন্তান তাঁর মায়ের কাছে ফিরে গিয়েছে এটা আনন্দের কথা। কিন্তু এই ঘটনা থেকেই প্রমাণ হল টাকার জন্য তৃণমূল সব করতে পারে। অন্যদিকে দলীয় নেতার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে তৃণমূল । আইএনটিটিইউসির ব্লক সভাপতি সাহেব দাসের দাবি, "ঘটনাটি শুনেছি ৷ আমাদেরই এক প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য সালিশি করে বাচ্চাটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন ৷ তিনি টাকার লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নন ৷ বিরোধীরা ইচ্ছে করে তাঁর নামে কুৎসা করছে ৷ তবে শিশু কেনাবেচা অপরাধ ৷ আমি প্রশাসনকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আবেদন জানাচ্ছি ।"

আরও পড়ুন:

  1. আগ্রায় 20 হাজার টাকায় সদ্যোজাত বিক্রি ! অভিযোগ দায়ের চিকিৎসক-সহ তিনজনের বিরুদ্ধে
  2. টাকার বিনিময়ে একমাসের মেয়েকে বিক্রির অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে
  3. টাকার অভাব 5 দিনের শিশুকে বিক্রির অভিযোগ বাবা-মার বিরুদ্ধে
Last Updated : Nov 19, 2023, 7:25 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.