ETV Bharat / state

লকডাউনে বেতন দেননি মালিকপক্ষ, কারখানার সামনে বিক্ষোভ শ্রমিকদের - lockdown malda

লকডাউনের জেরে মালিকপক্ষ বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন । সেই কারণে কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা ৷

ছবি
ছবি
author img

By

Published : May 9, 2020, 10:42 AM IST

মালদা, 9 মে : লকডাউনে বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকপক্ষ ৷ এপ্রিল মাসের বেতন না পেয়ে আন্দোলনে শামিল হলেন পুরাতন মালদার নারায়ণপুরে অবস্থিত একটি কারখানার স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীরা ৷ গতকাল কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা ৷ শ্রমিকদের অভিযোগ, পরিস্থিতি বুঝে ওঠার আগেই কারখানার মূল গেটে তালা মেরে দেন মালিকপক্ষ ৷ এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে CITU ৷ দ্রুত সব শ্রমিককে বেতন না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনের নেতৃত্ব ৷ তবে এনিয়ে মালিকপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷

পুরাতন মালদার নারায়ণপুরে গড়ে ওঠা শিল্পতালুকে 2004 সালে ওই কারখানাটি নির্মিত হয় ৷ এখানে স্থায়ী, অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক মিলিয়ে প্রায় 550 জন শ্রমিক কাজ করেন ৷ লকডাউনের মধ্যেও এই কারখানা চালু রয়েছে ৷ তবে সরকারি নির্দেশিকা মেনে মাত্র 15 শতাংশ শ্রমিককে নিয়ে উৎপাদন চালু রাখা হয়েছে ৷ অভিযোগ, এপ্রিল মাসে যাঁরা কাজ করেননি, তাঁদের বেতন দেওয়া হয়নি ৷ তাঁদের সবার বেতন বন্ধের নির্দেশিকা জারি করেছেন মালিকপক্ষ ৷ এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন শ্রমিকরা ৷ কারখানার গেটে শুরু হয় বিক্ষোভ ৷ সেই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয় CITU ৷

কারখানার স্থায়ী কর্মী সুভাষচন্দ্র মণ্ডল বলেন, " কোরোনা আবহে এমনিতেই পরিবারের অন্ন সংস্থান করতে পারছি না ৷ আমরা সবাই মার্চের বেতন পেয়েছি ৷ কিন্তু এপ্রিল মাসের বেতন পাইনি ৷ শুনতে পাচ্ছি, মালিকপক্ষ যাঁদের কাজে লাগিয়েছেন, তাঁদের পুরো বেতন দেবেন। আর যাঁদের সরকারি নির্দেশিকা মেনে বসিয়ে রেখেছেন তাঁদের অর্ধেক বেতন দেবেন ৷ সেটাও যাঁরা স্থায়ী কর্মী, তাঁদেরই দেওয়া হবে ৷ ঠিকা শ্রমিকদের কিছুই দেওয়া হবে না৷ শুনতে পাচ্ছি। সামনের মাসে কাউকে বেতন দেওয়া হবে না ৷ অথচ একদিনও ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়নি ৷ আমরা সবাই কাজ করতে চাই ৷ আমাদের কাজ না দেওয়া হলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব ৷"

এক চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক রতন পাল বলেন, " লকডাউনের মধ্যে আমরা ভয়াবহ সমস্যায় পড়েছি ৷ ঘরে খাবার নেই ৷ দু’বেলা পেট ভরে খেতে পাচ্ছি না ৷ লকডাউন শুরুর পর থেকে ফ্যাক্টরি একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি ৷ কিন্তু কম্পানি আমাদের বসিয়ে রেখেছে ৷ এমাসে আমরা কোনও বেতন পাইনি ৷ বলা হচ্ছে নো ওয়ার্ক, নো পে ৷ আমরা চাই, আমাদের বেতন দিয়ে কাজে নিয়োগ করা হোক ৷ তা না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব ৷"

ঘটনাস্থানে উপস্থিত CITU নেতা অজয় খাঁ বলেন, " এই কারখানা প্রায় 16 বছর ধরে চলছে ৷ এখানে দুই ধরনের কর্মী রয়েছে ৷ CITU ইউনিয়ন রয়েছে ৷ দীর্ঘদিন ধরে দাবির পর এখানকার কিছু শ্রমিককে আমরা স্থায়ী করতে পেরেছি ৷ কিছু শ্রমিককে ঠিকাদারের অধীনে রেখে মালিকপক্ষ কাজ করাচ্ছেন ৷ লকডাউন ঘোষণার পর সরকার এবং মালিকপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল, যে শ্রমিকদের বসিয়ে রাখা হবে, তাঁদেরও পুরো বেতন দেওয়া হবে ৷ কিন্তু এই শ্রমিকরা এপ্রিল মাসের বেতন পাননি ৷ আমরা জানতে পেরেছি, মালিকপক্ষ স্থায়ী শ্রমিকদের 50 শতাংশ বেতন দেবেন ৷ কিন্তু চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের কোনও বেতন দেবেন না ৷ সংগঠনের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি, দ্রুত কারখানা খুলে দেওয়া হোক৷ সমস্ত শ্রমিককে কাজে লাগানো হোক ৷ তা যদি না হয় তবে যতদিন শ্রমিকরা বসে থাকবেন, ততদিন তাঁদের পুরো বেতন দিতে হবে ৷ অবিলম্বে সবাইকে এপ্রিল মাসের বেতন দিতে হবে ৷ লকডাউনে এই শ্রমিকদের ঘরে খাবার ফুরিয়ে গেছে ৷ প্রত্যেকেই চরম সমস্যা রয়েছে ৷"

এনিয়ে মালিকপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ তবে লকডাউনের মধ্যে শ্রমিক বিক্ষোভ আরও বড় আকার নিলে তা মাথাব্যথার কারণ হতে পারে বলেই মনে করছে পুরাতন মালদা ব্লক প্রশাসন ৷

মালদা, 9 মে : লকডাউনে বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকপক্ষ ৷ এপ্রিল মাসের বেতন না পেয়ে আন্দোলনে শামিল হলেন পুরাতন মালদার নারায়ণপুরে অবস্থিত একটি কারখানার স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীরা ৷ গতকাল কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা ৷ শ্রমিকদের অভিযোগ, পরিস্থিতি বুঝে ওঠার আগেই কারখানার মূল গেটে তালা মেরে দেন মালিকপক্ষ ৷ এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে CITU ৷ দ্রুত সব শ্রমিককে বেতন না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনের নেতৃত্ব ৷ তবে এনিয়ে মালিকপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ শেষ পর্যন্ত পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷

পুরাতন মালদার নারায়ণপুরে গড়ে ওঠা শিল্পতালুকে 2004 সালে ওই কারখানাটি নির্মিত হয় ৷ এখানে স্থায়ী, অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক মিলিয়ে প্রায় 550 জন শ্রমিক কাজ করেন ৷ লকডাউনের মধ্যেও এই কারখানা চালু রয়েছে ৷ তবে সরকারি নির্দেশিকা মেনে মাত্র 15 শতাংশ শ্রমিককে নিয়ে উৎপাদন চালু রাখা হয়েছে ৷ অভিযোগ, এপ্রিল মাসে যাঁরা কাজ করেননি, তাঁদের বেতন দেওয়া হয়নি ৷ তাঁদের সবার বেতন বন্ধের নির্দেশিকা জারি করেছেন মালিকপক্ষ ৷ এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন শ্রমিকরা ৷ কারখানার গেটে শুরু হয় বিক্ষোভ ৷ সেই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয় CITU ৷

কারখানার স্থায়ী কর্মী সুভাষচন্দ্র মণ্ডল বলেন, " কোরোনা আবহে এমনিতেই পরিবারের অন্ন সংস্থান করতে পারছি না ৷ আমরা সবাই মার্চের বেতন পেয়েছি ৷ কিন্তু এপ্রিল মাসের বেতন পাইনি ৷ শুনতে পাচ্ছি, মালিকপক্ষ যাঁদের কাজে লাগিয়েছেন, তাঁদের পুরো বেতন দেবেন। আর যাঁদের সরকারি নির্দেশিকা মেনে বসিয়ে রেখেছেন তাঁদের অর্ধেক বেতন দেবেন ৷ সেটাও যাঁরা স্থায়ী কর্মী, তাঁদেরই দেওয়া হবে ৷ ঠিকা শ্রমিকদের কিছুই দেওয়া হবে না৷ শুনতে পাচ্ছি। সামনের মাসে কাউকে বেতন দেওয়া হবে না ৷ অথচ একদিনও ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়নি ৷ আমরা সবাই কাজ করতে চাই ৷ আমাদের কাজ না দেওয়া হলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব ৷"

এক চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক রতন পাল বলেন, " লকডাউনের মধ্যে আমরা ভয়াবহ সমস্যায় পড়েছি ৷ ঘরে খাবার নেই ৷ দু’বেলা পেট ভরে খেতে পাচ্ছি না ৷ লকডাউন শুরুর পর থেকে ফ্যাক্টরি একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি ৷ কিন্তু কম্পানি আমাদের বসিয়ে রেখেছে ৷ এমাসে আমরা কোনও বেতন পাইনি ৷ বলা হচ্ছে নো ওয়ার্ক, নো পে ৷ আমরা চাই, আমাদের বেতন দিয়ে কাজে নিয়োগ করা হোক ৷ তা না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব ৷"

ঘটনাস্থানে উপস্থিত CITU নেতা অজয় খাঁ বলেন, " এই কারখানা প্রায় 16 বছর ধরে চলছে ৷ এখানে দুই ধরনের কর্মী রয়েছে ৷ CITU ইউনিয়ন রয়েছে ৷ দীর্ঘদিন ধরে দাবির পর এখানকার কিছু শ্রমিককে আমরা স্থায়ী করতে পেরেছি ৷ কিছু শ্রমিককে ঠিকাদারের অধীনে রেখে মালিকপক্ষ কাজ করাচ্ছেন ৷ লকডাউন ঘোষণার পর সরকার এবং মালিকপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল, যে শ্রমিকদের বসিয়ে রাখা হবে, তাঁদেরও পুরো বেতন দেওয়া হবে ৷ কিন্তু এই শ্রমিকরা এপ্রিল মাসের বেতন পাননি ৷ আমরা জানতে পেরেছি, মালিকপক্ষ স্থায়ী শ্রমিকদের 50 শতাংশ বেতন দেবেন ৷ কিন্তু চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের কোনও বেতন দেবেন না ৷ সংগঠনের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি, দ্রুত কারখানা খুলে দেওয়া হোক৷ সমস্ত শ্রমিককে কাজে লাগানো হোক ৷ তা যদি না হয় তবে যতদিন শ্রমিকরা বসে থাকবেন, ততদিন তাঁদের পুরো বেতন দিতে হবে ৷ অবিলম্বে সবাইকে এপ্রিল মাসের বেতন দিতে হবে ৷ লকডাউনে এই শ্রমিকদের ঘরে খাবার ফুরিয়ে গেছে ৷ প্রত্যেকেই চরম সমস্যা রয়েছে ৷"

এনিয়ে মালিকপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ তবে লকডাউনের মধ্যে শ্রমিক বিক্ষোভ আরও বড় আকার নিলে তা মাথাব্যথার কারণ হতে পারে বলেই মনে করছে পুরাতন মালদা ব্লক প্রশাসন ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.