মানিকচক, 11 জানুয়ারি : বাইক কেনার জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা আনার চাপ দিয়েছিল শওহর ৷ সেই টাকা নিয়ে আসতে না পারায় বিবিকে শ্বাসরোধ করে খুন করার অভিযোগ উঠল ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৷ মৃতের নাম মানোয়ারা খাতুন (19) । ঘটনাটি মানিকচক ব্লকের নূরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মণ্ডলপাড়া এলাকার ৷ ঘটনায় আজ সন্ধেয় মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার আব্বার বাড়ির লোকজন ৷ মৃতার শওহর মহম্মদ রিংকুর খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে মানিকচক থানার পুলিশ৷
এলাকার যুবক মহম্মদ রিংকুর সঙ্গে মানোয়ারার দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল ৷ মাত্র আট মাস আগে দু’জনের নিকাহ হয় ৷ রিঙ্কু পেশায় ভিন রাজ্যের শ্রমিক ৷ কয়েকদিন আগেই দিল্লি থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফিরেছে সে ৷ অভিযোগ, নিকাহর পর থেকেই নানা আছিলায় শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য বিবিকে চাপ দিচ্ছিল রিঙ্কু ৷ এর আগে একবার মানোয়ারার আব্বা জামাইকে 10 হাজার টাকাও দেন ৷ কিন্তু টাকার লোভ মেটেনি তার ৷ গতকাল সে মানোয়ারাকে বাইক কেনার জন্য আরও 10 হাজার টাকা আনতে শ্বশুরবাড়ি পাঠায়৷ কিন্তু সেই টাকা নিয়ে আসতে পারেননি মানোয়ারা ৷ পরিবারের অভিযোগ, টাকা না পেয়ে বিবিকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে রিঙ্কু ৷
মানোয়ারার আম্মা মালা বিবি বলেন, "গতকাল দুপুরে মেয়ে আমার বাড়িতে আসে ৷ সে বলে, জামাই 10 হাজার টাকা চেয়েছে ৷ আমি তাকে বলি, এই মুহূর্তে আমার কাছে টাকা নেই ৷ আমি দু’দিন পর তাকে টাকা দেব ৷ ঠিক তখনই জামাই ফোন করে মেয়েকে ডেকে পাঠায় ৷ মেয়েও শ্বশুরবাড়ি চলে যায় ৷ আজ ভোর তিনটে নাগাদ গ্রামের একজন বাড়িতে এসে খবর দেয়, আমার মেয়ে নাকি শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছে ৷ সকালে গিয়ে দেখি, আমার মেয়ে মরে পড়ে রয়েছে ৷ আমার ধারণা, টাকা না পেয়ে শওহর, শাশুড়ি আর ননদ একজোট হয়ে আমার মেয়েকে খুন করেছে৷"
এলাকার বাসিন্দারাও রিঙ্কু ও তার আম্মার শাস্তি দাবি করছে ৷ স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ শেরু আলি বলেন, "রিঙ্কু ও মানোয়ারা প্রেম করেই নিকাহ করেছিল ৷ কিন্তু নিকাহর পর থেকেই রিঙ্কু শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য মানোয়ারাকে চাপ দিত ৷ মূলত রিঙ্কু ও তার আম্মাই এই কাজ করত ৷ তারা মানোয়ারাকে মারধরও করত ৷ আজ সকালে মানোয়ারাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়৷ তার গলায় দাগ রয়েছে৷ গলা ফুলেও আছে৷ এই ঘটনায় আমরা সবাই রিংকু ও তার আম্মার শাস্তি দাবি করছি৷"
এ-দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থান থেকে মানোয়ারার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায় মানিকচক থানার পুলিশ৷ থানার OC দেবব্রত চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "এই ঘটনায় আজ সন্ধেয় মৃতার আব্বার বাড়ির তরফে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে৷ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তও শুরু করা হয়েছে৷ তবে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি৷ তাদের খোঁজ চলছে৷"