ETV Bharat / state

মালদায় ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি দখলের অভিযোগে বিক্ষোভ শাসকদলের

author img

By

Published : Sep 5, 2020, 10:07 PM IST

আজ তৃণমূলের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পায়েল খাতুন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রতুয়া 1 পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী আবিদা বেগম, সহকারী সভাপতি হামিদা বানু, পঞ্চায়েত সমিতির দলনেতা শুভম সরকার ৷

TMC protests in Malda against mafia for taking possession of Waqf Board property
মালদায় ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি

মালদা, 5 সেপ্টেম্বর : ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি দখলমুক্ত করার দাবিতে থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করল খোদ শাসকদল ৷ মালদার রতুয়া থানার ঘটনা ৷ তৃণমূলের অভিযোগ, কংগ্রেস, CPI(M) ও BJP আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওয়াকফ বোর্ডের ওই সম্পত্তি দখল করে রেখেছে ৷ যদিও শাসকদলের এই বক্তব্য ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছে তিন শিবিরই ৷ এদিকে ওই সম্পত্তি দ্রুত দখলমুক্ত না করা হলে আগামীকাল থেকে থানার সামনে আমরণ অনশনে বসতে চলেছেন বলে জানান স্থানীয় বিধায়ক ৷

আজ তৃণমূলের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পায়েল খাতুন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রতুয়া 1 পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী আবিদা বেগম, সহকারী সভাপতি হামিদা বানু, পঞ্চায়েত সমিতির দলনেতা শুভম সরকার ৷ ব্লকের 8 টি গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধানসহ তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ৷ সকাল 8 টা থেকে শুরু হয় এই কর্মসূচি ৷ পুলিশি আশ্বাসে 11 টা নাগাদ অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয় ৷

রতুয়া 1 ব্লকের রুকুন্দিপুর মৌজায় রতুয়া-সামসী রাজ্য সড়কের ধারে, রতুয়া পাওয়ার হাউসের পাশে ওয়াকফ বোর্ডের 12.4 একরের একটি জমি রয়েছে ৷ ওই জমিতে বহু আগে আমবাগান তৈরি করা হয়েছিল ৷ সেখানে 137 টি আমগাছ ছিল ৷ গাছগুলি অনেক পুরানো ৷ ওই সম্পত্তি মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভিন্ন কাজের জন্য দান করেছে আমানাতুল্লা চৌধুরি ওয়াকফ স্টেট ৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে এলাকার কিছু দুষ্কৃতী ওই জমিতে থাকা প্রায় 42 টি গাছ কেটে নেয় ৷ সেই ঘটনার পর শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রবল দ্বন্দ্ব শুরু হয় ৷ ঘটনার প্রেক্ষিতে ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল গণি পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ৷ ঘটনার পুলিশি তদন্তও শুরু হয় ৷ পুলিশি তদন্ত শুরু হতেই এলাকার দুষ্কৃতীরা গা ঢাকা দেয় ৷ স্থানীয় তৃণমূলের পক্ষ থেকেও সেই সময় CPI(M) ও কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷ তবে তার আগেই দুষ্কৃতীরা কিছু কাটা গাছ নিয়ে চলে গেছিল ৷ পরে পুলিশ সেখান থেকে বাকি কাটা গাছের অংশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে ৷ এরপর গতকাল সন্ধেয় কিছু দুষ্কৃতী ওই বাগানটি দখল করার চেষ্টা করে ৷ গোটা বাগানকে তিনটি ভাগে ভাগ করে বাঁশের খুঁটি পুঁতে বাগান নিজেদের দখলে নেয় ৷

গতরাতেই গোটা বিষয়টি রতুয়া থানার পুলিশকে জানান মালদা জেলা পরিষদের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পায়েল খাতুন ৷ কিন্তু রাতে পুলিশ এনিয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি ৷ তাই ওই জমি দখলমুক্ত করার দাবিতে আজ সকাল 8 টা থেকে 11 টা পর্যন্ত পায়েল খাতুনের নেতৃত্বে তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা ঝান্ডা হাতে রতুয়া থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হন ৷ সবার দাবি, ওয়াকফ বোর্ডের ওই সম্পত্তি পুলিশকে দখলমুক্ত করতে হবে ৷ পায়েলদেবী বলেন, " কয়েকমাস আগে CPI(M), কংগ্রেস ও BJP - র লোকজন ওয়াকফ বোর্ডের ওই জমি থেকে আমগাছ কেটে নিয়েছিল ৷ সেই সময় আমি রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলাম ৷ কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ৷ এবার ওই তিন দলের দুষ্কৃতীরা ওয়াকফ বোর্ডের ওই সম্পত্তির গোটাটাই দখল করে নিয়েছে ৷ এনিয়ে আবার আমি রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ ওই সম্পত্তি যেন দখলমুক্ত করা হয়, তার দাবি নিয়ে আজ আমরা থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছি ৷ "

রতুয়া 1 ব্লক ইমাম কাউন্সিলের সম্পাদক আবদুস সামাদ বলেন, " কয়েকমাস আগে ওয়াকফ বোর্ডের ওই জমি থেকে দুষ্কৃতীরা বেশ কিছু গাছ কেটে নেয় ৷ আমরা তা নিয়ে জেলাশাসকসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ জানাই ৷ প্রশাসনই সেই সময় গাছ কাটা বন্ধ করেছিল ৷ গতকাল আমরা ফের শুনতে পাই, ওই জমি দখল করা হচ্ছে ৷ জমিতে ঘর তৈরিও চলছে ৷ তাই আজ আমরা রতুয়া থানায় অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হয়েছি ৷ পুলিশকেই ওই জমি দখলমুক্ত করতে হবে ৷ "

যদিও নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে বিরোধীরা ৷ CPI(M) - এর জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, " আমরা কোথাও কোনও গাছ অন্যায়ভাবে কেটে বিক্রি করি না ৷ আমাদের দলের কোনও নেতা কিংবা কর্মী এসব কাজে যুক্ত থাকে না ৷ আমি অবাক হলাম, রাজ্যের শাসকদলকেও আজ থানায় গিয়ে বিক্ষোভ করতে হচ্ছে ৷ এরাজ্যে পুলিশ কিংবা প্রশাসন শাসকদলের দলদাস ৷ তৃণমূলের লোকজনের অঙ্গুলিহেলনে দিনকে রাত আর রাতকে দিন করা হয় ৷ তবে কি এখন পুলিশ শাসকদলের কথা শুনছে না ? এদিনের ঘটনাই প্রমাণ করছে, তৃণমূলের শেষের দিন একেবারে সামনে চলে এসেছে ৷ তাই তারা এখন এসব ভুয়ো অভিযোগ তুলছে ৷ "

কংগ্রেসের মালদা জেলার সহকারী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, " কিছুদিন আগে ওই জমি থেকে বেশ কিছু গাছ কাটা হয় ৷ আমরাই সেই সময় রাজ্যের সংখ্যালঘু দপ্তর ও ওয়াকফ বোর্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাই ৷ সবাই জানে, ওই জমির গাছ কেটেছে তৃণমূলের নেতারাই ৷ প্রশাসনকে সব কিছু জানিয়েই তারা এই কাজ করেছে ৷ প্রশাসনের হিম্মত হয়নি এনিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার ৷ সেই সময় এই ঘটনা নিয়ে শাসকদলের দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে আসে ৷ এসব ঘটনা বাম শাসনের শেষের দিকের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে ৷ নিজেদের আমলের শেষের দিকে পুলিশ কিংবা প্রশাসনের উপর বামফ্রন্টের কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না ৷ সেই একই অবস্থা এখনও দেখা যাচ্ছে ৷ শাসকদল এখন কার্যত লুটপাট শুরু করেছে ৷ প্রশাসন সব কিছু জেনেও নির্বিকার ৷ কিন্তু আজ রতুয়ায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই থানা ঘেরাও করছে ৷ এই ঘটনা প্রমাণ করছে, তৃণমূলের শেষের দিন শুরু হয়ে গেছে ৷ "

BJP - র মালদা জেলার মুখপাত্র অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, " আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, এই রাজ্যে কেউ সুরক্ষিত নয় ৷ আজ রতুয়ায় ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছে মাফিয়া ও মস্তানরা ৷ পুলিশ প্রশাসন নির্বিকার ৷ একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করছিল, তারা সংখ্যালঘুদের পক্ষে ৷ কিন্তু এখানে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তিই দখল করছে তৃণমূলের লোকজন ৷ প্রশাসনের মদতেই এসব কাজ হচ্ছে ৷ তারই উদাহরণ মিলেছে রতুয়ায় ৷"

এদিকে ওয়াকফ বোর্ডের ওই সম্পত্তি দ্রুত দখলমুক্ত না হলে আগামীকাল থেকে রতুয়া থানার সামনে আমরণ অনশন শুরু করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন এলাকার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, " ওই সম্পত্তি ওয়াকফ বোর্ডের ৷ গত 14 ফেব্রুয়ারি ওয়াকফ বোর্ডের মোতুয়াল্লি আমানাতুল্লা চৌধুরির দায়িত্বে থাকা ওই জমির 24 টি গাছ সমাজবিরোধীরা কেটে নেয় ৷ সেই ঘটনায় আমি ওয়াকফ বোর্ডকে লিখিতভাবে নালিশ জানাই ৷ তার ভিত্তিতে ওয়াকফ বোর্ড একটি অভিযোগ দায়ের করে ৷ আজ সেই দুষ্কৃতীরাই ওই জমি দখল করে নিয়েছে ৷ আমি ফের ওয়াকফ বোর্ডকে বিষয়টি জানিয়েছি ৷ আমি পুলিশকেও সব জানিয়েছি ৷ যদি পুলিশ ও প্রশাসন এর কোনও সুরাহা না করতে পারে তবে আমি আগামীকাল থেকে রতুয়া থানার সামনে আমরণ অনশনে বসব ৷ "

মালদা, 5 সেপ্টেম্বর : ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি দখলমুক্ত করার দাবিতে থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করল খোদ শাসকদল ৷ মালদার রতুয়া থানার ঘটনা ৷ তৃণমূলের অভিযোগ, কংগ্রেস, CPI(M) ও BJP আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ওয়াকফ বোর্ডের ওই সম্পত্তি দখল করে রেখেছে ৷ যদিও শাসকদলের এই বক্তব্য ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছে তিন শিবিরই ৷ এদিকে ওই সম্পত্তি দ্রুত দখলমুক্ত না করা হলে আগামীকাল থেকে থানার সামনে আমরণ অনশনে বসতে চলেছেন বলে জানান স্থানীয় বিধায়ক ৷

আজ তৃণমূলের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পায়েল খাতুন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রতুয়া 1 পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী আবিদা বেগম, সহকারী সভাপতি হামিদা বানু, পঞ্চায়েত সমিতির দলনেতা শুভম সরকার ৷ ব্লকের 8 টি গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধানসহ তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ৷ সকাল 8 টা থেকে শুরু হয় এই কর্মসূচি ৷ পুলিশি আশ্বাসে 11 টা নাগাদ অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয় ৷

রতুয়া 1 ব্লকের রুকুন্দিপুর মৌজায় রতুয়া-সামসী রাজ্য সড়কের ধারে, রতুয়া পাওয়ার হাউসের পাশে ওয়াকফ বোর্ডের 12.4 একরের একটি জমি রয়েছে ৷ ওই জমিতে বহু আগে আমবাগান তৈরি করা হয়েছিল ৷ সেখানে 137 টি আমগাছ ছিল ৷ গাছগুলি অনেক পুরানো ৷ ওই সম্পত্তি মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভিন্ন কাজের জন্য দান করেছে আমানাতুল্লা চৌধুরি ওয়াকফ স্টেট ৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে এলাকার কিছু দুষ্কৃতী ওই জমিতে থাকা প্রায় 42 টি গাছ কেটে নেয় ৷ সেই ঘটনার পর শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রবল দ্বন্দ্ব শুরু হয় ৷ ঘটনার প্রেক্ষিতে ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুল গণি পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ৷ ঘটনার পুলিশি তদন্তও শুরু হয় ৷ পুলিশি তদন্ত শুরু হতেই এলাকার দুষ্কৃতীরা গা ঢাকা দেয় ৷ স্থানীয় তৃণমূলের পক্ষ থেকেও সেই সময় CPI(M) ও কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷ তবে তার আগেই দুষ্কৃতীরা কিছু কাটা গাছ নিয়ে চলে গেছিল ৷ পরে পুলিশ সেখান থেকে বাকি কাটা গাছের অংশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে ৷ এরপর গতকাল সন্ধেয় কিছু দুষ্কৃতী ওই বাগানটি দখল করার চেষ্টা করে ৷ গোটা বাগানকে তিনটি ভাগে ভাগ করে বাঁশের খুঁটি পুঁতে বাগান নিজেদের দখলে নেয় ৷

গতরাতেই গোটা বিষয়টি রতুয়া থানার পুলিশকে জানান মালদা জেলা পরিষদের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পায়েল খাতুন ৷ কিন্তু রাতে পুলিশ এনিয়ে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি ৷ তাই ওই জমি দখলমুক্ত করার দাবিতে আজ সকাল 8 টা থেকে 11 টা পর্যন্ত পায়েল খাতুনের নেতৃত্বে তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা ঝান্ডা হাতে রতুয়া থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হন ৷ সবার দাবি, ওয়াকফ বোর্ডের ওই সম্পত্তি পুলিশকে দখলমুক্ত করতে হবে ৷ পায়েলদেবী বলেন, " কয়েকমাস আগে CPI(M), কংগ্রেস ও BJP - র লোকজন ওয়াকফ বোর্ডের ওই জমি থেকে আমগাছ কেটে নিয়েছিল ৷ সেই সময় আমি রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলাম ৷ কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ৷ এবার ওই তিন দলের দুষ্কৃতীরা ওয়াকফ বোর্ডের ওই সম্পত্তির গোটাটাই দখল করে নিয়েছে ৷ এনিয়ে আবার আমি রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ ওই সম্পত্তি যেন দখলমুক্ত করা হয়, তার দাবি নিয়ে আজ আমরা থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছি ৷ "

রতুয়া 1 ব্লক ইমাম কাউন্সিলের সম্পাদক আবদুস সামাদ বলেন, " কয়েকমাস আগে ওয়াকফ বোর্ডের ওই জমি থেকে দুষ্কৃতীরা বেশ কিছু গাছ কেটে নেয় ৷ আমরা তা নিয়ে জেলাশাসকসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ জানাই ৷ প্রশাসনই সেই সময় গাছ কাটা বন্ধ করেছিল ৷ গতকাল আমরা ফের শুনতে পাই, ওই জমি দখল করা হচ্ছে ৷ জমিতে ঘর তৈরিও চলছে ৷ তাই আজ আমরা রতুয়া থানায় অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হয়েছি ৷ পুলিশকেই ওই জমি দখলমুক্ত করতে হবে ৷ "

যদিও নিজেদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে বিরোধীরা ৷ CPI(M) - এর জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, " আমরা কোথাও কোনও গাছ অন্যায়ভাবে কেটে বিক্রি করি না ৷ আমাদের দলের কোনও নেতা কিংবা কর্মী এসব কাজে যুক্ত থাকে না ৷ আমি অবাক হলাম, রাজ্যের শাসকদলকেও আজ থানায় গিয়ে বিক্ষোভ করতে হচ্ছে ৷ এরাজ্যে পুলিশ কিংবা প্রশাসন শাসকদলের দলদাস ৷ তৃণমূলের লোকজনের অঙ্গুলিহেলনে দিনকে রাত আর রাতকে দিন করা হয় ৷ তবে কি এখন পুলিশ শাসকদলের কথা শুনছে না ? এদিনের ঘটনাই প্রমাণ করছে, তৃণমূলের শেষের দিন একেবারে সামনে চলে এসেছে ৷ তাই তারা এখন এসব ভুয়ো অভিযোগ তুলছে ৷ "

কংগ্রেসের মালদা জেলার সহকারী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, " কিছুদিন আগে ওই জমি থেকে বেশ কিছু গাছ কাটা হয় ৷ আমরাই সেই সময় রাজ্যের সংখ্যালঘু দপ্তর ও ওয়াকফ বোর্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাই ৷ সবাই জানে, ওই জমির গাছ কেটেছে তৃণমূলের নেতারাই ৷ প্রশাসনকে সব কিছু জানিয়েই তারা এই কাজ করেছে ৷ প্রশাসনের হিম্মত হয়নি এনিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার ৷ সেই সময় এই ঘটনা নিয়ে শাসকদলের দ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে আসে ৷ এসব ঘটনা বাম শাসনের শেষের দিকের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে ৷ নিজেদের আমলের শেষের দিকে পুলিশ কিংবা প্রশাসনের উপর বামফ্রন্টের কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না ৷ সেই একই অবস্থা এখনও দেখা যাচ্ছে ৷ শাসকদল এখন কার্যত লুটপাট শুরু করেছে ৷ প্রশাসন সব কিছু জেনেও নির্বিকার ৷ কিন্তু আজ রতুয়ায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরাই থানা ঘেরাও করছে ৷ এই ঘটনা প্রমাণ করছে, তৃণমূলের শেষের দিন শুরু হয়ে গেছে ৷ "

BJP - র মালদা জেলার মুখপাত্র অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, " আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, এই রাজ্যে কেউ সুরক্ষিত নয় ৷ আজ রতুয়ায় ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছে মাফিয়া ও মস্তানরা ৷ পুলিশ প্রশাসন নির্বিকার ৷ একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচার করছিল, তারা সংখ্যালঘুদের পক্ষে ৷ কিন্তু এখানে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তিই দখল করছে তৃণমূলের লোকজন ৷ প্রশাসনের মদতেই এসব কাজ হচ্ছে ৷ তারই উদাহরণ মিলেছে রতুয়ায় ৷"

এদিকে ওয়াকফ বোর্ডের ওই সম্পত্তি দ্রুত দখলমুক্ত না হলে আগামীকাল থেকে রতুয়া থানার সামনে আমরণ অনশন শুরু করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন এলাকার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি বলেন, " ওই সম্পত্তি ওয়াকফ বোর্ডের ৷ গত 14 ফেব্রুয়ারি ওয়াকফ বোর্ডের মোতুয়াল্লি আমানাতুল্লা চৌধুরির দায়িত্বে থাকা ওই জমির 24 টি গাছ সমাজবিরোধীরা কেটে নেয় ৷ সেই ঘটনায় আমি ওয়াকফ বোর্ডকে লিখিতভাবে নালিশ জানাই ৷ তার ভিত্তিতে ওয়াকফ বোর্ড একটি অভিযোগ দায়ের করে ৷ আজ সেই দুষ্কৃতীরাই ওই জমি দখল করে নিয়েছে ৷ আমি ফের ওয়াকফ বোর্ডকে বিষয়টি জানিয়েছি ৷ আমি পুলিশকেও সব জানিয়েছি ৷ যদি পুলিশ ও প্রশাসন এর কোনও সুরাহা না করতে পারে তবে আমি আগামীকাল থেকে রতুয়া থানার সামনে আমরণ অনশনে বসব ৷ "

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.