মালদা, 3 এপ্রিল: ডিএ নিয়ে আন্দোলনকারীদের চোখ উপড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বিতর্কে মালতিপুরের বিধায়ক তথা মালদা জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি ৷ তাঁর এই মন্তব্যকে তীব্র ধিক্কার জানিয়েছে বিরোধী শিবির ৷ সাধারণ মানুষ তৃণমূলকে পশ্চিমবঙ্গ থেকেই উপড়ে ফেলবে বলে পালটা মন্তব্য বিজেপির ৷ এই ধরনের কথা বলায় মামলা হওয়া উচিত বলে দাবি বামেদের ৷
সোমবার দুপুরে মালদা কলেজ অডিটোরিয়ামের দুর্গা কিংকর সদনে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সাংগঠনিক সভা ছিল ৷ উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, মালতিপুরের বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি, দলের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়, ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী-সহ অন্যান্যরা ৷ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রহিম বক্সি বলেন, "যারা সরকারি কর্মচারীর নাম করে, যুক্ত মঞ্চের নাম করে, অফিসে ঢুকে সরকারি কর্মচারীদের চোর বলে পঙ্গু করার চেষ্টা করছেন, তারা যে চোখ দিয়ে কর্মীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছেন তাঁদের সেই চোখ দুটো উপড়ে নেওয়া হবে ৷"
এই বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তাঁর অভিযোগ, "যৌথমঞ্চের নামে একটা ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল ৷ আমাদের সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সদস্য যারা অফিসে গিয়েছিলেন, তাঁদের জোর করে বের করার চেষ্টা করা হয়েছে ৷ চোর বলে কটূক্তি করা হয়েছে ৷ এই ঘটনার সঙ্গে দলীয় লোকজন ঢুকে গিয়েছে ৷ দাদাগিরির যুগ এখন শেষ হয়েছে ৷ সংবিধানকে মান্যতা দিয়ে আন্দোলন করলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই ৷ কিন্তু যদি মস্তানি করেন, সরকারি কর্মচারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে ফেডারেশন ছেড়ে কথা বলবে না ৷ যে চোখ দেখিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, প্রয়োজনে মানুষ সেই চোখ দুটো উপড়ে নেবে ৷"
ঘটনা প্রসঙ্গে উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, "রাস্তায় নেমে মানুষ প্রতিবাদ করছে ৷ সরকারি কর্মীরা নিজেদের দাবি নিয়ে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন ৷ আন্দোলন করলে উনি চোখ উপড়ে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন ৷ তৃণমূলকে মানুষ পশ্চিমবঙ্গ থেকে উপড়ে ফেলবে ৷ একটা চুল উপড়ে দেখাক, তারপরে কত ধানে কত চাল তা দেখা যাবে ৷"
আরও পড়ুন: তীব্র হচ্ছে ডিএ'র দাবি, রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতি পালন সরকারি কর্মীদের
সিপিএমের জেলা আহ্বায়ক অম্বর মিত্র বলেন, "এসব কথা বলার জন্য ওঁনার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া দরকার ৷ কারও চোখ উপড়ে দেবে, হাত-পা কেটে দেবে, এসব বললে মামলা হওয়া উচিত ৷ দল পালটে উনি তৃণমূলি হয়েছেন ৷ বাজারে ভেসে থাকার জন্য উনি এসব লম্বা-চওড়া কথা বলে বেড়াচ্ছেন ৷ তৃণমূল মাথা থেকে পা পর্যন্ত চুরি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ৷ গোটা বাংলার মানুষের পাশাপাশি ভারতবর্ষের সমস্ত মানুষ জেনে গিয়েছে তৃণমূল মানে চোর ৷ রাজ্যে একের পর এক মন্ত্রী, নেতা, জেলে চলে যাচ্ছেন ৷ মানুষ সময়ের অপেক্ষায় রয়েছে ৷ সময় আসলে মানুষ এই সরকারকে বদলে দেবে ৷"