মালদা, 15 জানুয়ারি: "পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) আগে বিরোধীরা তৃণমূলের ভুল ধরালে নেতাদের চোখে লঙ্কাগুঁড়ো ছিটিয়ে দেবেন। গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত প্রকল্প চণ্ডীপাঠের মতো বোঝাবেন।" পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভা থেকে এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর (বি) ব্লকের মহিলা সভানেত্রী সুজাতা সাহা। তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে জেলায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূল প্রচারে বেরোলে মানুষ, তৃণমূলের খেলা-মেলা-ঠেলা বুঝিয়ে দেবে, তাদের গাছে বেঁধে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটাবে, পালটা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল।
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখে আগামী 18 তারিখ মালদায় সভা করতে আসছেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর সভার প্রস্তুতি হিসেবে (Before Chandrima Bhattacharya Visit) আজ, অর্থাৎ রবিবার হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর (বি) ব্লকের বড়ুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের সাংগঠনিক কর্মসূচি ছিল। এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৃণালিনী মাইতি, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদিকা শর্মিষ্ঠা ভট্টাচার্য, হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর (বি) ব্লক মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী সুজাতা সাহা, হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর (বি) ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস, মহিলা জেলা সদস্যা পপি চক্রবর্তী-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। সভামঞ্চ থেকে বিরোধীদের কাটাক্ষ করে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য চলতে থাকে।
সভামঞ্চ থেকে সুজাতা বলেন, "সামনে পঞ্চায়েত ভোট। বিরোধীরা আসবে ৷ তারা নিজের মতো উলটো-পালটা কথা বলবে। বাম আমলে সোশাল মিডিয়ার এত দাপট ছিল না। সেই কারণে ওদের ভুলভ্রান্তি মানুষের চোখে সেভাবে পড়েনি। তবে এখন সামান্য কিছুতেই সোশাল মিডিয়া কিংবা সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সমস্ত প্রকল্প স্বচ্ছ। তিনি বা দল কখনও কাউকে দুর্নীতি করতে বলেননি। তবে একটু ভুলভ্রান্তি হতেই পারে। কাজ করলেই ভুল হয়। কাজ না-করলে ভুল হবে না। ভোটের আগে বিরোধীরা আমাদের ভুল ধরিয়ে সকলকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে। সেই সময় ওই নেতাদের চোখে লাল মরিচ গুঁড়ো ছিটিয়ে দেবেন। গাছের সঙ্গে বেঁধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত প্রকল্প চণ্ডীপাঠের মতো বলবেন। বাম আমলের প্রশ্ন তুলবেন। বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস কেউই কিন্তু বলতে ছাড়বে না। তবে আপনারা দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে দিদির প্রকল্পের কথা বলবেন।"
আরও পড়ুন: 'সুরক্ষা কবচ' চাইতে গিয়ে 'দিদির দূতে'র হাতে চড় খেলেন যুবক !
এনিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনাসামনি হয়ে সুজাতাদেবীর বক্তব্য, "যা বলেছি ঠিক বলেছি। দিদির এত উন্নয়ন, এত কাজ করার পরেও বিরোধীরা যদি ভুল বোঝাতে আসে, তবে জনগণ লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে গাছে বেঁধে রাখবে। এটা হুমকি নয়। যা সত্যি তাই বলেছি। বিরোধীরা পায়ের তলার মাটি হারিয়ে তৃণমূলকে হিংসা করছে।"
ঘটনাপ্রসঙ্গে বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, "আগামী দিনে যখনই তৃণমূল প্রচারে বেরোবে তখনই মানুষ সব বুঝিয়ে দেবে। এরা বিজেপির নেতা কর্মীদের চোখে লঙ্কা গুঁড়ো ছিটিয়ে গাছে বেঁধে রাখার কথা বলছে। তৃণমূল যখনই নিজেদের প্রকল্প বলতে শুরু করবে তার বেশিরভাগই কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প মানুষ তা বুঝিয়ে দেবে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা সব প্রকল্পের নাম বদলে যাচ্ছে। তৃণমূলের খেলা-মেলা-ঠেলা ছাড়া কিছুই নেই। সমব্যথীর টাকা পেতে মানুষকে কমপক্ষে 2 বছর অপেক্ষা করতে হয়। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ভোট চাইতে গেলে তারাই জনসাধারণের হাতে মার খাবে।"