মালদা, 29 জুন : চাকরি প্রতারণাচক্রের ফাঁদে পা দিয়ে প্রবল সমস্যায় পড়েছেন খোদ অঞ্চল যুব তৃণমূলের সভাপতি (TMC Leader Allegedly Lost Money in Teacher Recruitment Scam) । আপার প্রাইমারিতে চাকরি (Upper Primary Recruitment) দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকে সাড়ে 14 লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এক প্রতারক । ওই প্রতারকও তৃণমূল কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত । এনিয়ে তীব্র আলোড়ন পড়েছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর-2 ব্লক এলাকা জুড়ে । এই ঘটনায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে প্রতারিত তৃণমূল নেতার বাবা । গোটা ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্কও ।
প্রতারিতের নাম আরজাউল হক । তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর-2 ব্লকের সাদলিচক পঞ্চায়েতের যুব তৃণমূল সভাপতি । বাড়ি নতুন সাদলিচক গ্রামে । তাঁর অভিযোগ, “চাকরির জন্য আমি স্থানীয় সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডহরা গ্রামের বাসিন্দা মহিদুর রহমান ওরফে বাদলকে তিন কিস্তিতে সাড়ে 14 লাখ টাকা দিই । কিন্তু সে আমার চাকরি করে দিতে পারেনি । এখন টাকা ফেরত চাইলেও সে তা দিচ্ছে না । দুই কিস্তিতে মাত্র দু’লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে । তাই আমি বাবাকে দিয়ে ওর নামে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করিয়েছি । সে তৃণমূল করে । আমিও তৃণমূলের অঞ্চল যুব সভাপতি ।”
আরজাউলের বাবা মহম্মদ শাহজাহান বলেন, “2016 সালের আপার প্রাইমারি টেট (Primary TET) পরীক্ষার ভিত্তিতে চাকরি করে দেবে বলে ডহরা গ্রামের বাদল আমার ছেলের কাছ থেকে সাড়ে 14 লাখ টাকা নিয়েছিল । কিন্তু সে ছেলের চাকরি করে দিতে পারেনি । টাকা ফেরত চাইলেও সে ফেরত দিচ্ছে না । অনেক চেষ্টার পর দু’বার সে দু’লাখ টাকা ফেরত দেয় । তারপর টাকা চাইলে সে উলটে হুমকি দিচ্ছে । আমার এলাকায় আরও অনেকে ওকে চাকরির জন্য টাকা দিয়েছে । কিন্তু এখনও চাকরির আশায় তারা কেউ থানায় অভিযোগ জানাচ্ছে না ।”
এনিয়ে বিজেপির (BJP) মালদা জেলা মুখপাত্র অম্লান ভাদুড়ি বলেন, “চাকরি দেওয়ার নাম করে তৃণমূল গোটা রাজ্যে টাকা তোলার ইন্ডাস্ট্রি বানিয়েছে । মালদাতেও এই ইন্ডাস্ট্রি সক্রিয় । শুধু শিক্ষকের চাকরি নয়, বিভিন্ন সরকারি দফতরেও চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তোলা হচ্ছে । তৃণমূলের (Trinamool Congress) নীচু থেকে উঁচুতলার কর্মীরাও এতে জড়িত । এক্ষেত্রে প্রতারিত ও প্রতারক, দু’জনেই তৃণমূলের । টাকা আদায়ে এখন কাক কাকের মাংস খাচ্ছে ।”
এদিকে তৃণমূলের রাজ্যনেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর বক্তব্য, “চাকরির নাম করে টাকা নিলে দল কিংবা ধর্ম না দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । তবে টাকা দেওয়া ও টাকা নেওয়া, দু’টিই অপরাধ । এক্ষেত্রে দু’জনের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে । আর বিজেপি দিল্লি থেকে মালদা পর্যন্ত টাকা কামাচ্ছে । ওদের নিয়ে কিছু বলার নেই ।”
অভিযুক্তের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি ৷ তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন বলে খবর ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷
আরও পড়ুন : Human Rights Violations: তিনদিন ধরে জেলবন্দি, গোপালের নামে কপাল পুড়ল নিরপরাধ বৃদ্ধের