মালদা, 7 ডিসেম্বর : রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের উপস্থিতিতেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল (TMC Inner Clash In Malda)। বিরোধীদের হাত ধরে দলীয় প্রধানকে অপসারণ করতে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এলেন তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যরা ৷ সোমবার আনা সেই অনাস্থার যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ। আজ সেই প্রস্তাবে স্বাক্ষর হয়ে গিয়েছে। এবার শুধু তলবি সভার দিনক্ষণ ঘোষণাই বাকি। দলনেত্রীর উপস্থিতিতে এমন ঘটনায় বিব্রত শাসকদলের নেতৃত্ব। কোন্দল ধামাচাপা দিতে তারা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচল-1 ব্লকের মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে।
মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট সদস্য সংখ্যা 19। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে এখানে তৃণমূলের 7 জন, কংগ্রেসের 8 জন ও সিপিএমের 4 জন নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে কংগ্রেসের 4 সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। 11 জন সদস্যের সমর্থনে পঞ্চায়েতের দখল নেয় শাসকদল। প্রধান করা হয় কংগ্রেস থেকে আসা পপি দাসকে। উপ-প্রধান হন তৃণমূলের পিঙ্কি খাতুন। এতদিন পঞ্চায়েত ভালই চলছিল। কিন্তু মাস কয়েক ধরে পপিদেবীর সঙ্গে বেশকিছু সদস্যের বিরোধ দেখা দেয়। বিরোধীদের সঙ্গে সেই দলে রয়েছেন তৃণমূলের সদস্যরাও। অবশেষে গতকাল তৃণমূলের পাঁচ, কংগ্রেসের চার ও সিপিএমের তিন সদস্য একজোট হয়ে বিডিওর কাছে পপিদেবীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে যান। অনাস্থা প্রস্তাবে স্বাক্ষর করা তৃণমূলের সদস্য সাকির মহম্মদ বলেন, "প্রধান আমাদের অন্ধকারে রেখে নিজের অনুগামী কিছু ঠিকাদার নিয়ে পঞ্চায়েত পরিচালনা করছেন। গত তিন বছরে এলাকার কোনও উন্নয়ন হয়নি। তাই আমরা 12 জন সদস্য একজোট হয়ে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এসেছি।" যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে পপিদেবী বলেন, "এটা বিরোধীদের চক্রান্ত । আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। এলাকায় প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। গোটা বিষয়টি আমি দলকে জানিয়েছি। "
আরও পড়ুন: মালদায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে ব্রাত্য বিজেপির সাংসদ- বিধায়করা, ক্ষোভ পদ্মশিবিরের
গোটা ঘটনায় দৃশ্যতই বিব্রত চাঁচল 1 নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি সচ্চিদানন্দ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, " ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে যে অনাস্থা নিয়ে আসা হয়েছে তা সঠিক। এর আগেও অনেকবার দলীয় প্রধানদের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসা হয়েছিল। এনিয়ে দলের মধ্যে ঝামেলাও হয়েছে। আমরা দলীয়ভাবে সেই ঘটনার সমাধান করতে পেরেছি। মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেও সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। তবে জেলা থেকে নির্দেশ রয়েছে, দলীয় পঞ্চায়েত প্রধান কিংবা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের বিরুদ্ধে কোনওভাবেই অনাস্থা নিয়ে আসা যাবে না। "