মালদা, 19 ডিসেম্বর: সেলিম-মীনাক্ষীর সভায় গেলে মিলবে না প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (Pradhan Mantri Awas Yojana) ঘর ! স্থানীয় সিপিএমকর্মী ও সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ৷ প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান সিপিএমের স্থানীয় নেতা ও কর্মীরা ৷ যদিও তৃণমূলের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতেই মিথ্যা অভিযোগ করছে সিপিএম ৷ ঘটনা ঘিরে সোমবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত মালদার (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুর (Harishchandrapur) ৷
রবিবার থেকে হরিশ্চন্দ্রপুরে সিপিএমের যুব সংগঠন, ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন (Democratic Youth Federation of India) বা ডিওয়াইএফআই (DYFI)-এর দু'দিনের রাজ্য সম্মেলন (State Convention) ও কর্মশালা (Workshop) শুরু হয়েছে ৷ সোমবার বিকেলে এই অনুষ্ঠানের আওতাতেই প্রকাশ্য সভার আয়োজন করা হয় ৷ সেই সভায় বক্তব্য রাখতে আসেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম (Md Salim) ও ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় (Minakshi Mukherjee) ৷ হরিশ্চন্দ্রপুর বালিকা বিদ্যালয়ের পাশের মাঠেই এই সভা অনুষ্ঠিত হয় ৷ অভিযোগ, দলীয় কর্মী ও সমর্থকরা যাতে এই সভায় যোগ দিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে আগে থেকেই 'মাঠে নামে' তৃণমূল ৷ প্রতিবাদে সোমবার সকালে সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাইরা গ্রামে বিক্ষোভ দেখান বাম কর্মী ও সমর্থকরা ৷ যদিও (শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী) এতকিছুর পরও এদিন বিকেলের সভা হয় এবং সেখানে বক্তব্য রাখেন মীনাক্ষী ও সেলিম ৷
আরও পড়ুন: 'পুলিশে কামড়ানোর ওষুধ এখনও আবিষ্কার হয়নি, দূরে থাকুন', কটাক্ষ মীনাক্ষীর
বিক্ষোভকারীদের তরফে আনসারউল হক বলেন, "আমাদের অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধান থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতারা মানুষকে হুমকি দিচ্ছেন ৷ তাঁরা বলছেন, সভায় গেলে কারও নাম আবাস যোজনায় থাকবে না ৷ অনেকের নামই তৃণমূলের নেতারা, বিডিও ইতিমধ্যে কেটে দিয়েছেন ৷ বাড়ি বাড়ি গিয়ে পঞ্চায়েত সদস্য হুমকি দিচ্ছেন ৷ সভায় গেলে রাজ্য সরকারের সব সরকারি প্রকল্প থেকে নাম কেটে দেওয়া হবে বলছেন ৷"
একই বক্তব্য আর এক বামকর্মী মেহবুব আলমেরও ৷ তিনি বলেন, "সভায় যেতে আমাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে ৷ মিছিল বের করতে তৃণমূলের নেতারা বাধা দিচ্ছেন ৷ মিটিংয়ে গেলে সবাইকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন ৷ আজ ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সমাবেশ রয়েছে ৷ সেই মিটিং ভেস্তে দিতেই ওঁরা এমন করছেন ৷ তবে যতই বাধা দিক, আমরা মিটিংয়ে যাবই ৷"
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য ফিরদৌস আলম এই প্রসঙ্গে বলেন, "যতই বাধা দিক, বিপত্তি করুক, মানুষের ঢল ওরা আজ আটকাতে পারবে না ৷ তৃণমূলের সেই শক্তি নেই ৷ ওরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে ৷ বড় বড় নেতারা নেমে গিয়েছেন ৷ ওঁরা আসলে ভয় পেয়েছেন ৷ এত লোক আসবে বলেই ওঁদের ভয় ৷ এখানকার সমাবেশ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যে শোরগোল ফেলে দিতে পারে ৷ তাই ওঁদের এত ভয় ৷"
যদিও জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান বলছেন, "সাইরা আমারই এলাকার মধ্যে পড়ে ৷ ওখানে আমরা গত নির্বাচনে লিড পেয়েছি ৷ ওখানে সিপিএম-কংগ্রেসের কত লোক আছে, তা আমার জানা আছে ৷ এসব মিথ্যে প্রচার ৷ কী করে আমাদের দলকে বদনাম করা যায়, এটা তারই কৌশল ৷ আমরা বিরোধীদের সঙ্গে কখনও খারাপ আচরণ করি না ৷ আসলে ওঁদের সভায় লোক যে হবে না, তা ওরা জানে ৷ তাই মানুষের নজরে আসতেই এসব চক্রান্ত করছে ৷"