মালদা, 23 নভেম্বর: হাসপাতালের সামনে ও পিছনে রমরমিয়ে চলছিল ডায়াগনেস্টিক সেন্টার৷ এমন তিনটি সেন্টার নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ আসছিল প্রশাসনের কাছে ৷ বৃহস্পতিবার ওই তিন সেন্টারে আচমকা হানা দেয় জেলা প্রশাসনের সার্ভিল্যান্স টিম ৷ সঠিক নথিপত্র তো দূরের কথা, রোগীদের শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করার জন্য কোনও প্রশিক্ষিত কর্মীও নেই ৷ কোথাও নেই অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ৷ সব দেখে চোখ কপালে ওঠে প্রশাসনিক কর্তাদের ৷ তিনটি ডায়াগনেস্টিক সেন্টারই প্রশাসনের তরফে সিল করে দেওয়া হয় ৷ এই ঘটনা ঘিরে বৃহস্পতিবার বিকেলে শোরগোল পড়ে যায় সুজাপুর এলাকায় ৷
সিল হওয়া তিনটি ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের মধ্যে দুটি সুজাপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সামনে 12 নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে, একটি হাসপাতালের পিছনে৷ এই গ্রামীণ হাসপাতালে মাতৃমা বিভাগ রয়েছে ৷ এলাকাটিও ঘন জনবসতিপূর্ণ ৷ প্রতিদিন অসংখ্য রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন ৷ ফলে তিনটি ডাগায়নেস্টিক সেন্টারের ব্যবসাই ফুলেফেঁপে উঠেছিল ৷ এর মধ্যে একটি সেন্টারে আবার বড় বড় করে লেখা রয়েছে, তারা মালদা শহরের দুটি বড় নার্সিং হোম থেকে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে আনে৷ কিন্তু এই সেন্টারগুলির পরিষেবা দেখে স্থানীয় কিছু মানুষের সন্দেহ হয়৷ তাঁরাই নিজেদের সন্দেহের কথা প্রশাসনকে জানান৷
অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) পীযূষ সালুঙ্কে বলেন, “নার্সিং হোম ও ডায়াগনেস্টিক সেন্টারগুলির পরিকাঠামো ঠিক রয়েছে কি না, সেসব সরকারি নিয়ম মেনে চলছে কি না, সমস্ত নথিপত্র ঠিক রয়েছে কি না, মানুষ সেখান থেকে সঠিক পরিষেবা পাচ্ছে কি না, সেসব খতিয়ে দেখার জন্য জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের যৌথ সার্ভিল্যান্স টিম রয়েছে ৷ সেই টিম আজ কালিয়াচকের সুজাপুরে তিনটি ডায়াগনেস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করে৷ তিনটিতেই ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়েছে৷ একটি সেন্টারের লাইসেন্স পর্যন্ত নেই৷ অগ্নি নির্বাপণ দফতর কিংবা পরিবেশ দফতরের কোনও শংসাপত্র নেই৷ এমনকি সেখানে প্রশিক্ষিত কর্মী কিংবা চিকিৎসকও নেই৷ সেন্টারটির ভিতরের পরিবেশও অস্বাস্থ্যকর৷ যেখানে সেখানে ব্যবহৃত ইনজেকশনের নিডল, তুলো পড়ে রয়েছে৷ এসব থেকে রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনাও থাকে৷ আরেকটি সেন্টার এক মৃত চিকিৎসকের নামে চালানো হচ্ছিল৷ সেখানেও কোনও প্রশিক্ষিত কর্মীর দেখা মেলেনি৷ তিনটি সেন্টারের বিরুদ্ধেই আইনমাফিক পদক্ষেপ করা হবে৷”
আরও পড়ুন