মালদা, 21 নভেম্বর : চাকরিতে স্থায়ীকরণ সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী অশিক্ষক কর্মীরা ৷ গতকাল থেকে তাঁরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন ৷ উল্লেখ্য, শাসকদলের সংগঠন সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতি এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে ৷ মুখ্যমন্ত্রীর মালদা সফরের ঠিক পরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্মীদের এই আন্দোলন সাড়া ফেলেছে জেলার শিক্ষামহলে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানিয়েছেন, এই ব্যাপারে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন ৷ যদিও নিজেদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা ৷
সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিট সভাপতি শুভায়ু দাস বলেন, "2010 সালের পর থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও নিয়োগ হয়নি ৷ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালুর দাবিতে আমরা বহুবার উপাচার্যের দ্বারস্থ হয়েছি ৷ কিন্তু কখনও এক মাস, কখনও দু'মাস, কখনও বা এক বছর সময় নিয়েছেন তিনি ৷ কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের 122 জন অস্থায়ী কর্মী এখনও কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধা পান না ৷ স্বাস্থ্যসাথি, সমবেতন, তিন শতাংশ ইনক্রিমেন্ট কিংবা মেডিক্লেমের সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত ৷ অথচ মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষাকর্মীদের জন্য একাধিক সরকারি প্রকল্প চালু করেছেন ৷ এসব সুবিধা চালুর দাবিতেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার কর্মবিরতিতে নেমেছি ৷ যতদিন না আমাদের দাবিগুলো পূরণ হচ্ছে, ততদিন আমাদের এই আন্দোলন চলতে থাকবে ৷"
আন্দোলনকারীদের এক প্রতিনিধি প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, "গতকাল উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার আমাদের সঙ্গে একদফা আলোচনা করেছেন ৷ কিন্তু তাঁরা সমস্যা সমাধানের কোনও উপায় বাতলাতে পারেননি ৷ উলটে তাঁরা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন ৷ তাঁরা আমাদের আন্দোলনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন ৷ আমরা লক্ষ্য করেছি, উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার বিশ্ববিদ্যালয়ের BJP মদতপুষ্ট কর্মীদের নিয়ে কাজ করছেন ৷ কিন্তু আমাদের তৃণমূল ইউনিয়নকে তাঁরা গুরুত্ব দেন না ৷"
উপাচার্য স্বাগত সেন বলেন, "অস্থায়ী কর্মীদের দাবিগুলো নিয়ে সবার আগে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে ৷ তারপরেই এব্যাপারে পদক্ষেপ করা যাবে ৷ এজন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন ৷ কিন্তু আন্দোলনকারীরা কোনও সময় নিতে নারাজ ৷" বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, 118 জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে তাঁদের প্রত্যেককে মাসে সাড়ে 8 হাজার থেকে 14 হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয় ৷ স্থায়ী কর্মীদের বেতন দেওয়া হয় 16 হাজার টাকা করে ৷ কিন্তু সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী তাঁদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না ৷ অস্থায়ী কর্মীদের সমস্যা না মিটলে স্থায়ী কর্মীদেরও বেতন বৃদ্ধি হচ্ছে না ৷ তাই অস্থায়ী কর্মীদের এই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের 16 জন স্থায়ী কর্মীও ৷