মালদা, 25 জুলাই : উদ্যোগ নিয়েছিলেন ইংরেজবাজার পৌরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর ৷ সেই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন জেলা প্রশাসনের দুই শীর্ষকর্তা, জেলাশাসক ও সদর মহকুমাশাসক। সমর্থন জানিয়েছিল জেলার বণিকসভাও । সব পক্ষের মেলবন্ধনে মালদা শহরের সৌন্দর্যায়নের নতুন ভিত্তিপ্রস্তর হল মালদা কলেজ অডিটোরিয়ামের সানাউল্লাহ্ মঞ্চে । আয়োজিত হল নাগরিক সভা । যেখানে উপস্থিত ছিলেন মালদা শহরের বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা, অধ্যাপক, ছোট ও বড় ব্যবসায়ী, কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক সবাই ৷ সভাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, মালদা শহরকে আরও সুন্দর করে গড়ে তুলতে দ্রুত বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে ৷
এই আয়োজনের উদ্যোক্তা ছিলেন ইংরেজবাজার পৌরসভার 18 নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর আশিস কুণ্ডু । শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া 12 নম্বর জাতীয় সড়কের (পূর্বে 34নং জাতীয় সড়ক) সৌন্দর্যায়নের জন্যই তিনি এই সভার উদ্যোগ নিয়েছিলেন । কিন্তু সভার মধ্যে এছাড়াও উঠে এসেছে আরও একাধিক বিষয় । আশিসবাবু বলেন, “মহানন্দা ব্রিজ থেকে রবীন্দ্র ভবন পর্যন্ত জাতীয় সড়ক এখন যন্ত্রণার সড়কে পরিণত হয়েছে । এর থেকে মুক্তি পেতে আমরা অনেকবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি, আন্দোলন করেছি । আমরা চাই, এই সড়কের দু’ধারে এবং মাঝখানে বুলেভার্ড করে গাছ লাগানো হোক । আলোয় মুড়ে ফেলা হোক উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে যোগাযোগকারী এই জাতীয় সড়ককে । বাজুক রবীন্দ্র সংগীত । তাতে সুস্থ হবে পরিবেশ । তার জন্য জাতীয় সড়ক দখল করে থাকা ব্যবসা এবং বেআইনি পার্কিং তুলে দেওয়া হোক । এ নিয়েই আজ নাগরিক সভার আয়োজন ।”
আজ মালদা ছেড়ে বাইরে যাওয়ার আগে মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু, আশিসবাবুর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “জাতীয় সড়ক পরিষ্কার করে সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি । আমরাও সেটাই চাই । কিন্তু, যেসব ব্যবসায়ী জাতীয় সড়কে ব্যবসা করেন, তাঁদের একটা বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে । এই মুহূর্তে শহরের অতুল মার্কেট অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে । সেখানে ওই ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে ।”
আরও পড়ুন : কংক্রিটের সৌন্দর্যায়ন, ঝুঁকির মুখে সোনাঝুরি
নাগরিকসভায় এক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা দীপশ্রী মজুমদার প্রস্তাব দেন, শহরের সৌন্দর্যায়নে শুধু জাতীয় সড়ক নয়, ওই সড়ক সংযোগকারী রাস্তাগুলিতেও নজরদারির প্রয়োজন ৷ বিশেষ করে যানজট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সবার ভাবা উচিত । নিয়মিত আবর্জনা সাফাই, নিকাশি ব্যবস্থা সঠিকভাবে তৈরি করা প্রয়োজন । এখন শহরের বেশিরভাগ রাস্তার অর্ধেক দখল হয়ে গিয়েছে । এতেই যানজট বাড়ছে শহরে । সভায় বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সম্পাদক সুনীল দাস, দীপশ্রী মজুমদারের বক্তব্যকে সমর্থন করার সঙ্গে আরও একাধিক প্রস্তাব দেন ।
আরও পড়ুন :নজরে সৌন্দর্যায়ন, গাছের গায়ের ফ্লেক্স খোলার কাজ শুরু বনগাঁয়
জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, “এদিনের সভায় একাধিক প্রস্তাব পাওয়া গিয়েছে । সেসব প্রস্তাব আমরা লিখে রেখেছি । তবে, নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে আমরা কাজ করছি । এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়েছে । তবে এই সমস্যা আর যাতে না হয় তার জন্য আরও একটি প্রকল্প বছরখানেকের মধ্যে করে ফেলা হবে । শহরের আবর্জনা সাফাইয়ের জন্য মহদিপুর এলাকায় একটি ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জায়গা পৌরসভা আগেই কিনেছিল । সেটি দ্রুত চালু করা হবে । এছাড়া সড়ক দখলদারদের আমরা দ্রুত উচ্ছেদ করতে চলেছি । জাতীয় সড়কে আলো বাড়ানো প্রয়োজন । সেটাও দেখা হচ্ছে ।”