ETV Bharat / state

Swasthya Sathi: কাজে এল না স্বাস্থ্যসাথী, এসএসকেএম থেকে ফিরতে হল অসুস্থ কন্যাকে

কাজে এল না সরকারি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasthya Sathi Card)। অভিযোগ, মালদার (Malda) বাসিন্দা এক কন্যার বিনামূল্যে চিকিৎসা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতাল ৷ চিকিৎসা করার মতো সামর্থ না থাকায় মেয়েকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে পরিবার ।

author img

By

Published : Aug 5, 2021, 4:10 PM IST

sskm hospital didn't accept Swasthya Sathi Card, malda girl taken back to home
কাজে এল না স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, এসএসকেএম থেকে ফিরতে হল অসুস্থ কন্যাকে

মালদা, 5 অগস্ট: সরকারি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasthya Sathi Card) হাতে ছিল । কিন্তু সেই কার্ডে নাকি বিনামূল্যে চিকিৎসা হবে না । কোনও বেসরকারি হাসপাতাল নয়, সে কথা জানিয়ে দিয়েছে কলকাতার সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । পঙ্গু মেয়ের চিকিৎসার জন্য খরচ করার মতো সামর্থ ছিল না দিনমজুর বাবার । এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতাল থেকে মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে আনেন তিনি । আপাতত ঘরেই রেখেছেন মেয়েকে ।

মালদার (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত ছত্রক গ্রাম । সেই গ্রামেরই বাসিন্দা নুর সালাম । তাঁর মেয়ে নুর ফতেমার বয়স ন’বছর । দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ । জটিল কোনও রোগে প্রায় পঙ্গু । চলাফেরা করা তো দূরের কথা, নিজের প্রয়োজনের কথা বলতেও পারে না সে । কয়েক মাস আগে সেই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল । ফতেমার জন্য সরকারি চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছিল প্রশাসন । সেই সময় তাঁর বাড়িতে যান তৎকালীন মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল । সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন বিডিও পার্থ দাস । তাঁরা উদ্যোগ নিয়ে ফতেমার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি করে দেন । ফতেমার সরকারি চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেন তাঁরা । প্রথমে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, সেখান থেকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, শেষে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয় ফতেমাকে । কিন্তু ওই কার্ডে সমস্ত চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেয় এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ । এমনই অভিযোগ নুর সালামের । ফলে মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হন তিনি ।

আরও পড়ুন: জন বার্লাকে রাষ্ট্রীয় মন্ত্রী করে কি বঙ্গভঙ্গের ভাবনাকেই সমর্থন মোদি সরকারের ?

নুর সালাম বলছেন, “মেয়েটার হাত-পা কাজ করে না । বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছিলাম । প্রশাসন আমাদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করে দিয়েছিল । কার্ড তৈরির পর চাঁচল সুপার স্পেশাল স্পেশালিটি হাসপাতালে মেয়ে ভর্তি হয় । সেখান থেকে ওকে মালদা মেডিক্যালে পাঠানো হয় । সেখানে ওর এমআরআই করা হয় । তারপর বিডিও জানান, মেয়েকে কলকাতা নিয়ে যেতে হবে । কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পরে সেখানকার হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান মেয়ের উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন । কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে সবকিছু বিনে পয়সায় হবে না । মেয়েকে সুস্থ করতে টানা 5-6 মাস সেখানে রেখে চিকিৎসা করাতে হবে । কিন্তু আমাদের সেই টাকা নেই । কলকাতার চিকিৎসকরা আরও বলেন, মালদার এমআরআই তাঁরা দেখবেন না । তাঁরা নিজেরা ফের এমআরআই করবেন । টাকা না থাকায় মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি ।”

আরও পড়ুন: প্রতারণায় টাকায় ভোটে জিতেছেন বিজেপি বিধায়ক, অভিযোগ পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীর

এই খবর পেয়ে নুর সালামের বাড়ি যান তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান । ফতেমার চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখেন তিনি । কেন কলকাতার সরকারি হাসপাতাল থেকে ফতেমাকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে হল, কেন সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বিনামূল্যে চিকিৎসা হল না, তা নিয়ে খোঁজখবর নেন তিনি । তিনি বলেন, “বাচ্চাটা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ । ভোটের আগে মহকুমাশাসক ও বিডিও এই বাড়িতে এসে পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করে দিয়েছিলেন । সেই কার্ড নিয়ে এরা মেয়েকে নিয়ে কলকাতা যায় । আমি কিছুদিন বাইরে ছিলাম । ফিরে এসে জানতে পারি, প্রশাসন মেয়েটিকে কলকাতায় পাঠালেও সেখানে তার চিকিৎসা হয়নি । সেখানে নাকি টাকার বিনিময়ে চিকিৎসার কথা বলা হয়েছে । কয়েক মাস থাকতেও হবে বলেছে । আমার মনে হচ্ছে, কোথাও কোনও একটা সমস্যা হয়েছে । এ নিয়ে মহকুমাশাসক ও বিডিওর সঙ্গে কথা বললাম । তাঁরা দুজনেই নতুন । তাঁরা আমাকে ডেকেছেন । আমি কাগজপত্র নিয়ে নিজেই তাঁদের কাছে যাব । আমরা দেখছি কী করা যায় । মেয়েটির চিকিৎসার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করব ।”

প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে অসুস্থ কন্যার পরিবার

তবে এই ঘটনা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি সদ্য কাজে যোগ দেওয়া হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের বিডিও বিজয় গিরি । এখন ফতেমার চিকিৎসার জন্য প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে তার পরিবার ৷

মালদা, 5 অগস্ট: সরকারি স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasthya Sathi Card) হাতে ছিল । কিন্তু সেই কার্ডে নাকি বিনামূল্যে চিকিৎসা হবে না । কোনও বেসরকারি হাসপাতাল নয়, সে কথা জানিয়ে দিয়েছে কলকাতার সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । পঙ্গু মেয়ের চিকিৎসার জন্য খরচ করার মতো সামর্থ ছিল না দিনমজুর বাবার । এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতাল থেকে মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে আনেন তিনি । আপাতত ঘরেই রেখেছেন মেয়েকে ।

মালদার (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত ছত্রক গ্রাম । সেই গ্রামেরই বাসিন্দা নুর সালাম । তাঁর মেয়ে নুর ফতেমার বয়স ন’বছর । দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ । জটিল কোনও রোগে প্রায় পঙ্গু । চলাফেরা করা তো দূরের কথা, নিজের প্রয়োজনের কথা বলতেও পারে না সে । কয়েক মাস আগে সেই খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল । ফতেমার জন্য সরকারি চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছিল প্রশাসন । সেই সময় তাঁর বাড়িতে যান তৎকালীন মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল । সঙ্গে ছিলেন তৎকালীন বিডিও পার্থ দাস । তাঁরা উদ্যোগ নিয়ে ফতেমার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি করে দেন । ফতেমার সরকারি চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেন তাঁরা । প্রথমে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, সেখান থেকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, শেষে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয় ফতেমাকে । কিন্তু ওই কার্ডে সমস্ত চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেয় এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ । এমনই অভিযোগ নুর সালামের । ফলে মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হন তিনি ।

আরও পড়ুন: জন বার্লাকে রাষ্ট্রীয় মন্ত্রী করে কি বঙ্গভঙ্গের ভাবনাকেই সমর্থন মোদি সরকারের ?

নুর সালাম বলছেন, “মেয়েটার হাত-পা কাজ করে না । বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছিলাম । প্রশাসন আমাদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করে দিয়েছিল । কার্ড তৈরির পর চাঁচল সুপার স্পেশাল স্পেশালিটি হাসপাতালে মেয়ে ভর্তি হয় । সেখান থেকে ওকে মালদা মেডিক্যালে পাঠানো হয় । সেখানে ওর এমআরআই করা হয় । তারপর বিডিও জানান, মেয়েকে কলকাতা নিয়ে যেতে হবে । কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পরে সেখানকার হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান মেয়ের উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন । কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে সবকিছু বিনে পয়সায় হবে না । মেয়েকে সুস্থ করতে টানা 5-6 মাস সেখানে রেখে চিকিৎসা করাতে হবে । কিন্তু আমাদের সেই টাকা নেই । কলকাতার চিকিৎসকরা আরও বলেন, মালদার এমআরআই তাঁরা দেখবেন না । তাঁরা নিজেরা ফের এমআরআই করবেন । টাকা না থাকায় মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি ।”

আরও পড়ুন: প্রতারণায় টাকায় ভোটে জিতেছেন বিজেপি বিধায়ক, অভিযোগ পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীর

এই খবর পেয়ে নুর সালামের বাড়ি যান তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান । ফতেমার চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি খতিয়ে দেখেন তিনি । কেন কলকাতার সরকারি হাসপাতাল থেকে ফতেমাকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে হল, কেন সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বিনামূল্যে চিকিৎসা হল না, তা নিয়ে খোঁজখবর নেন তিনি । তিনি বলেন, “বাচ্চাটা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ । ভোটের আগে মহকুমাশাসক ও বিডিও এই বাড়িতে এসে পরিবারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করে দিয়েছিলেন । সেই কার্ড নিয়ে এরা মেয়েকে নিয়ে কলকাতা যায় । আমি কিছুদিন বাইরে ছিলাম । ফিরে এসে জানতে পারি, প্রশাসন মেয়েটিকে কলকাতায় পাঠালেও সেখানে তার চিকিৎসা হয়নি । সেখানে নাকি টাকার বিনিময়ে চিকিৎসার কথা বলা হয়েছে । কয়েক মাস থাকতেও হবে বলেছে । আমার মনে হচ্ছে, কোথাও কোনও একটা সমস্যা হয়েছে । এ নিয়ে মহকুমাশাসক ও বিডিওর সঙ্গে কথা বললাম । তাঁরা দুজনেই নতুন । তাঁরা আমাকে ডেকেছেন । আমি কাগজপত্র নিয়ে নিজেই তাঁদের কাছে যাব । আমরা দেখছি কী করা যায় । মেয়েটির চিকিৎসার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করব ।”

প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে অসুস্থ কন্যার পরিবার

তবে এই ঘটনা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি সদ্য কাজে যোগ দেওয়া হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের বিডিও বিজয় গিরি । এখন ফতেমার চিকিৎসার জন্য প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে রয়েছে তার পরিবার ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.