মালদা, ২৫ এপ্রিল : গরু, ছাগলেরও ‘আধার কার্ড’! এ দেশের নাগরিকদের আধার নম্বর এবং তার প্রয়োজনীয়তার কথা আমাদের সকলেরই জানা । এই আধার কার্ডের আদলে গরু, ছাগলের মতো গবাদি পশুদের জন্যও নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র চালুর সিদ্ধান্ত নেয়েছে কেন্দ্র (special identity card for cow and goats) । যাকে বলা হচ্ছে পশুর আধার কার্ড । মালদা জেলাজুড়ে সেই কাজ চলছে জোরকদমে । তবে এই কার্ড গোয়ালে রাখার নিয়ম নেই । কার্ড থাকবে গবাদি পশুর কানে । 12 নম্বর বিশিষ্ট সেই এই বিশেষ পরিচয়পত্র দেখে গরু বা ছাগলের ঠিকুজি-কুষ্ঠি জানতে পারবে প্রশাসন (Pashu Aadhaar for cow and goats) । এর ফলে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এই জেলায় গরু পাচারেও লাগাম পরানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে ।
এই প্রসঙ্গে জেলা প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর উৎপলকুমার কর্মকার বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে মানুষের মতো পশুদেরও আধার কার্ড হয়েছে । 12 সংখ্যা বিশিষ্ট একটি সংখ্যার ট্যাগ কার্ড গরু ও ছাগলের কানে পরিয়ে দেওয়া হয় । আমরা চার বছর ধরে এই কাজ করে আসছি । এই বিশেষ ট্যাগের মাধ্যমে গরু ও ছাগলের বিস্তৃত বিবরণ সরকারি পোর্টালে দেওয়া থাকে । এই ট্যাগ দেখে আমরা গরু-ছাগলের প্রকৃত মালিক কে, তা জানতে পারি । মালিকের যাবতীয় তথ্যও আমরা জানতে পারি । শুধু তাই নয়, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধে পেতে গেলে এখন গবাদি পশুর এই পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে । গত মাসেই গবাদি পশুর টিকাকরণ হয়েছে । চার থেকে আটমাস বয়সি 37 হাজার বাছুরকে সেই টিকা বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে । সেপ্টেম্বর থেকে 70 হাজারের বেশি বাছুরকে সেই টিকা দেওয়া হয়েছে । প্রতিটি বাছুরের কানে আধার ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে । প্রায় দেড় লাখ গরুকেও আমরা সেই ট্যাগ পরিয়েছি ।”
আরও পড়ুন : ডুয়ার্সের চা বাগানে জোড়া বাইসন, জঙ্গলে ফেরাতে মাঠে নামল বন দফতর
প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন গোপালকরা । ইন্দো-বাংলা সীমান্তের মহদিপুরের বাসিন্দা বিক্রম মণ্ডল বলেন, “প্রাণী চিকিৎসকরা আমাদের বাড়ি এসেছেন । গরুর কানে ট্যাগ পরানোর জন্য । আমাদের গরু মাঝে মধ্যেই চড়তে চড়তে বাংলাদেশের দিকে চলে যায় । তখন গরু ফিরিয়ে আনতে আমাদেরও খুব সমস্যা হয় । কিন্তু কানে এই ট্যাগ থাকলে বিএসএফ সহজেই আমাদের গরুকে ফিরিয়ে দিতে পারবে । তাছাড়া এই ট্যাগ থাকলে সরকারিভাবে গবাদি পশুর সমস্ত ওষুধপত্র আমরা বিনামূল্যে পাব । এতে আমাদের উপকারই হবে ।”