ETV Bharat / state

River Embankment Damaged : বেড়েই চলেছে জলস্তর, আরও বিপন্ন গঙ্গার বাঁধ - River Embankment of Ganga

ভূতনি রিং বাঁধের প্রায় 50 মিটার গতকালই গঙ্গার জলের চাপে ভেঙে গিয়েছে । সেই বাঁধ এই পরিস্থিতিতে মেরামত সম্ভব নয় । 500 মিটার দূরে পুরানো একটি বাঁধ এখন কোনওরকমে জল আটকে রেখেছে । তবে সেই বাঁধ সংস্কারের অভাবে অনেকটাই দুর্বল ।

মালদায় গঙ্গার ভাঙন
মালদায় গঙ্গার ভাঙন
author img

By

Published : Aug 13, 2021, 10:37 PM IST

Updated : Aug 13, 2021, 10:47 PM IST

মালদা, 13 অগস্ট : আরও বিপদ ঘনিয়ে আসছে ভূতনিবাসীর । গতকাল রাতে কেশরপুরের যে এলাকায় গঙ্গার বাঁধের প্রায় 50 মিটার এলাকা ভেঙে গিয়েছে, তার থেকে এক কিলোমিটার দূরে কোশিঘাটেও বাঁধে ছোবল মারছে গঙ্গা । যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে সেখানে ফেলা হচ্ছে বালির বস্তা । এখনও পর্যন্ত পুরানো বাঁধ ভূতনিকে বাঁচিয়ে রাখলেও শেষ পর্যন্ত সেই বাঁধ গঙ্গাকে সামলাতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এলাকাবাসীর । এদিকে গঙ্গার জলস্তর বেড়েই চলেছে । আজ সন্ধে ছ’টায় চরম বিপদসীমা 25.30 মিটার ছাপিয়ে 25.51 মিটার উচ্চতায় বয়েছে নদী । সেচ দফতর জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে গঙ্গার জলস্তর স্থির হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে । বরং আরও কয়েকদিন জলস্তর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে । পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের কাছে 10 কোটি টাকা দাবি করেছেন সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ।

গতরাতে 1975 সালে তৈরি ভূতনি রিং বাঁধের প্রায় 50 মিটার এলাকা গঙ্গার জলের চাপে ভেঙে যায় । সেখানে এখন বাঁধ রক্ষার কাজ করা কিছুতেই সম্ভব নয় । এই মুহূর্তে সেচ দফতরেকে ভরসা জোগাচ্ছে ভেঙে পড়া বাঁধের প্রায় 500 মিটার ভিতরে থাকা পুরানো বাঁধ । তবে সেই বাঁধের অবস্থাও ভাল নয় । দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ওই বাঁধ দুর্বল হয়ে গিয়েছে । কিছু জায়গায় বাঁধ ভাঙাও রয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা । এদিকে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতে কেশরপুরের প্রায় এক কিলোমিটার উজানে কোশিঘাটেও রিং বাঁধে শুরু হয়েছে ভাঙন । কিন্তু এবার শুখা মরশুমে সেখানেই বাঁধ সংস্কারের কাজ করেছিল সেচ দফতর । গঙ্গার গ্রাস থেকে সেই কাজ বাঁচাতে সেচ দফতর নাইলনের ক্রেটে বালির বস্তা ভরে নদীতে ফেলতে শুরু করেছে ।

মালদায় গঙ্গার ভাঙন
সন্ধে ছ’টায় চরম বিপদসীমা 25.30 মিটার ছাপিয়ে 25.51 মিটার উচ্চতায় বয়েছে নদী

আজ বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে মানিকচকের বিডিও জয় আহমেদ বলেন, “গতকাল রাতে বাঁধ ভাঙার খবর পেয়েই সেচ দফতরের লোকজন ঘটনাস্থলে চলে আসেন । রাত থেকে বাঁধ বাঁচানোর লড়াই শুরু করেছেন তাঁরা । এখন গঙ্গা পুরানো বাঁধে ধাক্কা মারছে । ওই বাঁধের কয়েকটি অংশ দুর্বল রয়েছে । যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে সেসব মেরামত করা হচ্ছে । সেই কাজ করার পর ভাঙা বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হবে। আমার ধারনা, বাঁধের 20-30 মিটার ভেঙে গিয়েছে । কিন্তু পুরানো বাঁধের প্রায় 100 মিটার অংশ দুর্বল হয়ে রয়েছে । আমরা মানুষকে সতর্ক থাকার জন্য মাইকে প্রচার শুরু করেছি । এলাকার স্কুলগুলিতে ফ্লাড সেন্টার খোলা হচ্ছে । কেউ চাইলে সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন । নদীর জল চরের কিছু এলাকায় ঢুকে পড়েছে । তবে এখনও ক্ষয়ক্ষতির কোনও হিসাব আমরা এখনও তৈরি করিনি । আগে বাঁধ বাঁচানোই লক্ষ্য আমাদের ।”

বেড়েই চলেছে জলস্তর, আরও বিপন্ন গঙ্গার বাঁধ

আরও পড়ুন : Flood Situation in Malda: চরম বিপদসীমা পেরোল গঙ্গা, জারি লাল সর্তকতা; বন্যা পরিস্থিতি মালদায়

এদিকে ভূতনি চরের কার্তিকটোলার বাসিন্দা বাসুদেব মণ্ডল বলেন, “কেশরপুরের পর এবার কোশিঘাটে বাঁধের একটা বড় অংশ ধসে পড়ছে । সেচ দফতরের উদাসীনতার জন্যই এটা ঘটল । 10 দিন আগে বিডিও এখানে এসেছিলেন । আমরা তখনই তাঁকে জানিয়েছিলাম, বাঁধের এই অংশে ধস নামতে পারে । তাঁরা বলেছিলেন, কাজ হবে । কিন্তু সেই কাজ আর হয়নি । গতকাল রাত থেকেই তীব্র আতঙ্কে রয়েছে ভূতনিবাসী । কারণ, এখনও আমরা আটানব্বইয়ের স্মৃতি ভুলতে পারিনি । এখন যে হারে ভূতনিতে গঙ্গার জল ঢুকছে, তাতে বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল । কারণ, পুরোনো বাঁধ খুবই দুর্বল । গঙ্গার জল ধারণ করার ক্ষমতা ওই বাঁধের নেই । এমনকি বেশ কিছু জায়গায় বাঁধ কেটে রয়েছে । অথচ এখনও সেই জায়গাগুলি ভরাট করার কাজ শুরু হয়নি ।”

কলকাতা থেকে সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, ভূতনিতে গঙ্গার রিং বাঁধ রক্ষা করার জন্য তিনি আজই রাজ্যের কাছে 10 কোটি টাকা দাবি করেছেন । যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে বন্যা রোধ করার জন্য সরকার সেই টাকার অনুমোদন দেবে বলে তাঁর ধারনা । আগামিকাল তাঁর মালদা ফিরে যাওয়ার কথা । জেলায় ফিরে তিনি সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন । বন্যার হাত থেকে ভূতনিবাসীকে বাঁচাতে যা করার তা করা হবে ।

মালদা, 13 অগস্ট : আরও বিপদ ঘনিয়ে আসছে ভূতনিবাসীর । গতকাল রাতে কেশরপুরের যে এলাকায় গঙ্গার বাঁধের প্রায় 50 মিটার এলাকা ভেঙে গিয়েছে, তার থেকে এক কিলোমিটার দূরে কোশিঘাটেও বাঁধে ছোবল মারছে গঙ্গা । যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে সেখানে ফেলা হচ্ছে বালির বস্তা । এখনও পর্যন্ত পুরানো বাঁধ ভূতনিকে বাঁচিয়ে রাখলেও শেষ পর্যন্ত সেই বাঁধ গঙ্গাকে সামলাতে পারবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এলাকাবাসীর । এদিকে গঙ্গার জলস্তর বেড়েই চলেছে । আজ সন্ধে ছ’টায় চরম বিপদসীমা 25.30 মিটার ছাপিয়ে 25.51 মিটার উচ্চতায় বয়েছে নদী । সেচ দফতর জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে গঙ্গার জলস্তর স্থির হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে । বরং আরও কয়েকদিন জলস্তর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে । পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের কাছে 10 কোটি টাকা দাবি করেছেন সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ।

গতরাতে 1975 সালে তৈরি ভূতনি রিং বাঁধের প্রায় 50 মিটার এলাকা গঙ্গার জলের চাপে ভেঙে যায় । সেখানে এখন বাঁধ রক্ষার কাজ করা কিছুতেই সম্ভব নয় । এই মুহূর্তে সেচ দফতরেকে ভরসা জোগাচ্ছে ভেঙে পড়া বাঁধের প্রায় 500 মিটার ভিতরে থাকা পুরানো বাঁধ । তবে সেই বাঁধের অবস্থাও ভাল নয় । দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ওই বাঁধ দুর্বল হয়ে গিয়েছে । কিছু জায়গায় বাঁধ ভাঙাও রয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা । এদিকে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতে কেশরপুরের প্রায় এক কিলোমিটার উজানে কোশিঘাটেও রিং বাঁধে শুরু হয়েছে ভাঙন । কিন্তু এবার শুখা মরশুমে সেখানেই বাঁধ সংস্কারের কাজ করেছিল সেচ দফতর । গঙ্গার গ্রাস থেকে সেই কাজ বাঁচাতে সেচ দফতর নাইলনের ক্রেটে বালির বস্তা ভরে নদীতে ফেলতে শুরু করেছে ।

মালদায় গঙ্গার ভাঙন
সন্ধে ছ’টায় চরম বিপদসীমা 25.30 মিটার ছাপিয়ে 25.51 মিটার উচ্চতায় বয়েছে নদী

আজ বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে মানিকচকের বিডিও জয় আহমেদ বলেন, “গতকাল রাতে বাঁধ ভাঙার খবর পেয়েই সেচ দফতরের লোকজন ঘটনাস্থলে চলে আসেন । রাত থেকে বাঁধ বাঁচানোর লড়াই শুরু করেছেন তাঁরা । এখন গঙ্গা পুরানো বাঁধে ধাক্কা মারছে । ওই বাঁধের কয়েকটি অংশ দুর্বল রয়েছে । যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে সেসব মেরামত করা হচ্ছে । সেই কাজ করার পর ভাঙা বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হবে। আমার ধারনা, বাঁধের 20-30 মিটার ভেঙে গিয়েছে । কিন্তু পুরানো বাঁধের প্রায় 100 মিটার অংশ দুর্বল হয়ে রয়েছে । আমরা মানুষকে সতর্ক থাকার জন্য মাইকে প্রচার শুরু করেছি । এলাকার স্কুলগুলিতে ফ্লাড সেন্টার খোলা হচ্ছে । কেউ চাইলে সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন । নদীর জল চরের কিছু এলাকায় ঢুকে পড়েছে । তবে এখনও ক্ষয়ক্ষতির কোনও হিসাব আমরা এখনও তৈরি করিনি । আগে বাঁধ বাঁচানোই লক্ষ্য আমাদের ।”

বেড়েই চলেছে জলস্তর, আরও বিপন্ন গঙ্গার বাঁধ

আরও পড়ুন : Flood Situation in Malda: চরম বিপদসীমা পেরোল গঙ্গা, জারি লাল সর্তকতা; বন্যা পরিস্থিতি মালদায়

এদিকে ভূতনি চরের কার্তিকটোলার বাসিন্দা বাসুদেব মণ্ডল বলেন, “কেশরপুরের পর এবার কোশিঘাটে বাঁধের একটা বড় অংশ ধসে পড়ছে । সেচ দফতরের উদাসীনতার জন্যই এটা ঘটল । 10 দিন আগে বিডিও এখানে এসেছিলেন । আমরা তখনই তাঁকে জানিয়েছিলাম, বাঁধের এই অংশে ধস নামতে পারে । তাঁরা বলেছিলেন, কাজ হবে । কিন্তু সেই কাজ আর হয়নি । গতকাল রাত থেকেই তীব্র আতঙ্কে রয়েছে ভূতনিবাসী । কারণ, এখনও আমরা আটানব্বইয়ের স্মৃতি ভুলতে পারিনি । এখন যে হারে ভূতনিতে গঙ্গার জল ঢুকছে, তাতে বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল । কারণ, পুরোনো বাঁধ খুবই দুর্বল । গঙ্গার জল ধারণ করার ক্ষমতা ওই বাঁধের নেই । এমনকি বেশ কিছু জায়গায় বাঁধ কেটে রয়েছে । অথচ এখনও সেই জায়গাগুলি ভরাট করার কাজ শুরু হয়নি ।”

কলকাতা থেকে সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, ভূতনিতে গঙ্গার রিং বাঁধ রক্ষা করার জন্য তিনি আজই রাজ্যের কাছে 10 কোটি টাকা দাবি করেছেন । যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে বন্যা রোধ করার জন্য সরকার সেই টাকার অনুমোদন দেবে বলে তাঁর ধারনা । আগামিকাল তাঁর মালদা ফিরে যাওয়ার কথা । জেলায় ফিরে তিনি সেচ দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন । বন্যার হাত থেকে ভূতনিবাসীকে বাঁচাতে যা করার তা করা হবে ।

Last Updated : Aug 13, 2021, 10:47 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.