মালদা, 30 সেপ্টেম্বর : পুনর্ভবার বাঁধভাঙা জলে প্লাবিত হয়েছে বামনগোলা ব্লকের বিস্তীর্ণ অংশ৷ নতুন করে জল ঢুকেছে আরও কয়েকটি গ্রামে ৷ গতকাল ওই এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ পিংকি সরকার মাহাত ৷ যান এলাকার সাংসদ খগেন মুর্মুও ৷ তাঁরা দু’জনেই দুর্গত মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন ৷ পিংকিদেবী জানিয়েছেন, নদীর জলস্তর কমলেই তিনি সেচ দপ্তরকে নদীর পাড় ঠিক করার আর্জি জানাবেন ৷ অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে সরব হয়েছেন সাংসদ ৷
গত রবিবার রাতে বামনগোলা ব্লকের মদনাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁশিপাড়ায় ভেঙে যায় পুনর্ভবার বাঁধ ৷ প্রায় 100 মিটার ভাঙা বাঁধের অংশ দিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে গ্রামে ৷ ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে বাঁশিপাড়া, শুকদেবপুর, নবাবনগর, ময়নাফলা, কুপাদহ, গাড়াপাড়া, ভোলামাসনা, আইসানি, বাদিয়াপাড়া, গোয়াপাড়া, সাপমারিসহ একাধিক গ্রাম ৷ জলের তলায় চলে গিয়েছে কয়েক হাজার বিঘা জমির আমনচাষ ৷ বেশ কিছু বাড়ি জলবন্দি হয়ে পড়েছে ৷ গতকালও ভাঙা বাঁধের অংশ দিয়ে হু হু করে জল ঢুকছে গ্রামগুলিতে ৷ গত সোমবারই সেচ দপ্তর দাবি করেছিল, ওই এলাকায় নদীর কোনও বাঁধ নেই ৷ মানুষের চলাচলের জন্য উঁচু রাস্তা বানানো হয়েছিল নদীর পাড় দিয়ে ৷ সেই রাস্তাকেই বাঁধ ভেবে ভুল করে গ্রামবাসীরা ৷ তবে জেলা সেচ দপ্তরের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন, পুনর্ভবার জলস্তর কমলে তাঁরা নদীর পাড় ঠিক করে দেবেন ৷
গতকাল বাঁশিপাড়া গ্রামে ভাঙা বাঁধের অংশ পরিদর্শন করেন জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ পিংকি সরকার মাহাত ৷ তিনি বলেন, "আজ আমরা বন্যা পরিস্থিতি দেখতে বাঁশিপাড়া এসেছিলাম ৷ এর আগেও আমি এখানে এসেছি ৷ সেই সময় রাস্তার কিছু জায়গায় ভাঙন দেখা যাচ্ছিল ৷ আজ দেখলাম, গোটা রাস্তাটাই জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে ৷ অনেক গ্রামের সঙ্গে বামনগোলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ৷ এখন যেভাবে নদীর জল বাড়ছে, তাতে বন্যা পরিস্থিতি রোধে কিছু করা যাবে না ৷ জল খানিকটা কমলে এনিয়ে সেচ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলব ৷ তাঁদের সঙ্গে কথা বলে এই রাস্তা ঠিক করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ এখানে পুনর্ভবার বাঁধ নির্মাণের জন্যও আমরা সেচ দপ্তরের কাছে আর্জি জানাব ৷"
এদিকে সাংসদ খগেন মুর্মু জানিয়েছেন, "পুনর্ভবার জলে বামনগোলা ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত অন্তত 15টি গ্রামে জল ঢুকেছে ৷ হাজার হাজার বিঘা কৃষিজমি নদীর জলের তলায় ৷ অনেক বাড়িতেও জল ঢুকে গিয়েছে ৷ এই বন্যায় এখনও পর্যন্ত কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ৷ আমার দাবি, অবিলম্বে প্রশাসনকে এই ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে গরিব কৃষকদের সরকারি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে ৷ যেসব বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে, সেই পরিবারগুলিকে ত্রাণসামগ্রী দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণেরও ব্যবস্থা করতে হবে ৷"