মালদা, 16 অগাস্ট : মুখ্যমন্ত্রীর আগেই সাময়িকভাবে ব্রিজ উদ্বোধন করে বিতর্কে জড়ালেন মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি । সভাধিপতির এই পদক্ষেপকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলে মন্তব্য করলেন এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ।
মালদা জেলার মানিকচক ব্লকে গঙ্গা ও ফুলহর নদীর পারে ভূতনি চরে লাখ খানেক মানুষের বসবাস । নিত্য প্রয়োজনে ভূতনিবাসীর যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা । দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা ব্রিজ নির্মাণের দাবি তুলেছিলেন । ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভূতনিবাসীকে ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দেন । তৎকালীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব ও সাবিত্রী মিত্র ব্রিজের শিলান্যাস করেন । 2014 সালে শুরু হয় ব্রিজ নির্মাণের কাজ । বর্তমানে সেই ব্রিজের কাজ প্রায় শেষ । গতকাল সারা দেশ যখন 73 তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে ব্যস্ত, সেইসময় সাময়িকভাবে ভূতনি ব্রিজের উদ্বোধন করেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল । গতকাল গৌরবাবু বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভূতনিবাসীর জন্য ভূতনি ব্রিজ তৈরি করে দিয়েছেন ৷ বর্তমানে এই ব্রিজের 98 শতাংশ কাজ হয়ে গেছে । আগামী এক মাসের মধ্যে ব্রিজের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যাবে । আজ থেকে ভূতনি ব্রিজের শুভ সূচনা হল । এখন শুধুমাত্র সাইকেল, মোটরবাইক, অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশের যাতায়াতের জন্য খোলা হয়েছে । পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই ব্রিজের উদ্বোধন করবেন ।"
ব্রিজের সাময়িক উদ্বোধনের রাত পেরোতেই জেলা পরিষদের সভাধিপতির এই পদক্ষেপ নিয়ে সরব হলেন মানিকচকের প্রাক্তন বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র । তিনি বলেন, "গতকাল সারাদিন স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম । হঠাৎ সোশাল মিডিয়ায় ভূতনি ব্রিজের উদ্বোধনের ছবি দেখতে পাই । বিষয়টি আমার জানা ছিল না । কয়েকদিন আগে আমি জেলাশাসকের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চেয়েছিলাম । জেলাশাসক জানিয়েছিলেন, এখনও এবিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি । মন্ত্রী এখনও ব্রিজ উদ্বোধনের জন্য সময় দেননি । ব্রিজের কাজ এখনও শেষ হয়নি অথচ গতকাল জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল ব্রিজের উদ্বোধন করেছেন । ভূতনিবাসীর সুবিধার্থে আপাতত ব্রিজ দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে । তার জন্য ব্রিজের উদ্বোধন করার প্রয়োজন ছিল না । বিষয়টি জানতে পেরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, গৌরবাবুকে ফোন করে জানান, গৌরবাবুর এই কাজ করা উচিত হয়নি । মুখ্যমন্ত্রীর এই ব্রিজ উদ্বোধন করার কথা, তা সত্ত্বেও কেন তিনি এই ব্রিজের উদ্বোধন করেছেন, তাও জানতে চান রবিবাবু । আমার মতে গৌরবাবু ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, ওঁর ক্ষমতার গরম হয়েছে ।"