মালদা, 9 মে : চাষিদের স্বার্থে এক হল কংগ্রেস-তৃণমূল-BJP ৷ সেই ছবি ধরা পড়েছে পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৷ টাঙনের ওপারে থাকা হাজার বিঘা কৃষিজমির ফসল ঘরে তুলতে চাষিদের পাশে একজোট হয়ে দাঁড়িয়েছে সব দলের প্রতিনিধিরা ৷ কয়েকদিন আগে তাদের চেষ্টাতেই তৈরি হয়েছিল টাঙন নদীর উপর বাঁশের সাঁকো ৷ সেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল ৷ এবার জমি থেকে ফসল ঘরে আনতে রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন BJP পরিচালিত সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান উকিল মণ্ডল ৷
পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোরগ্রাম, মাধাইপুর, ভাটরা, সুজাপুর গ্রামের বাসিন্দাদের প্রায় সবাই পেশায় চাষি ৷ এই গ্রামগুলির পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে টাঙন নদী ৷ নদীর ওপারে হবিবপুর ব্লকের 3 টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ৷ নদীর ওপারে এক হাজারেরও বেশি বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে ৷ এই জমিগুলির মালিক পুরাতন মালদা ব্লকের চাষিরা ৷ নদীর পলিমিশ্রিত জমি আর আবহাওয়ার সৌজন্যে এবার ধানের ফলন খুব ভালো ৷ কিন্তু জমিতে যাতায়াতের জন্য নদীতে কোনও সাঁকো ছিল না ৷ এখন ধান পেকে গেছে ৷ নিয়মিত বৃষ্টিও হচ্ছে ৷ কয়েকদিনের মধ্যে পাকা ধান না কাটলে বৃষ্টিতে শিস থেকে ধান ঝরে পড়বে ৷ তাই যত তাড়াতাড়ি ধান কেটে ঘরে তুলতে পারা যায়, ততই মঙ্গল ৷
এরপর চাষিরা নিজেদের সমস্যার কথা জানায় মাধাইপুর যুব সমাজকে ৷ এই সমাজে রয়েছে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাই ৷ তাদের আর্জিতে সাড়া দিয়ে টাঙনের উপর বাঁশের সাঁকো তৈরির উদ্যোগ নেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি ৷ গ্রামবাসীরাই তৈরি করে সেই সাঁকো ৷ কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় অন্য জায়গায় ৷ জমি থেকে ফসল আনার রাস্তা পুরোপুরি বেহাল ৷ কাদায় ট্র্যাক্টরের চাকা আটকে যায় ৷ ফের চাষিদের ত্রাতা হয়ে দাঁড়ায় মাধাইপুর যুব সমাজই ৷ এবার আর জেলা পরিষদ নয় ৷ যোগাযোগ করা হয় সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের সঙ্গে ৷ সঙ্গে সঙ্গে প্রধান পঞ্চায়েত ফান্ড থেকে কিছু টাকা রাস্তা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ করেন ৷ আজ থেকে গ্রামবাসীরা সেই রাস্তা সংস্কারের কাজে নেমে পড়েছে৷
মাধাইপুর যুব সমাজের এক সদস্য হাসান রাজা বলেন, “প্রবল বৃষ্টিতে নদীর ওপারে থাকা হাজার হাজার বিঘা জমি থেকে ফসল আনার রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে ৷ গোটা রাস্তায় গর্ত ৷ কাদা জমে রয়েছে ৷ ফলে চাষিরা জমি থেকে ধান বাড়ি নিয়ে যেতে পারছে না ৷ গতকাল মাধাইপুর যুব সমাজের উদ্যোগে এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য নুরুল শেখ, BJP-র পরিমল মুর্মু ও কংগ্রেসের নেপাল রামকে নিয়ে আমরা এই সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যাবে তা নিয়ে আলোচনা করি ৷ আলোচনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি পঞ্চায়েত প্রধান উকিল মণ্ডলকে জানাই ৷ তিনি কিছু টাকা পঞ্চায়েত থেকে বরাদ্দ করেন ৷ আজ থেকেই কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন ৷ আজ এলাকার তিন পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে গ্রামবাসীরা রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করেছে ৷ তারা খুব খুশি ৷ ”