ETV Bharat / state

NRC আতঙ্ক ! আধার সংশোধনে ব্যাঙ্কের সামনে কাটছে রাত - bank

আধার কার্ড সংশোধন করতে ভোর থেকে সন্ধে পর্যন্ত মালদার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও পোস্ট অফিসের সামনে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ । প্রতিটি সংশোধন কেন্দ্রে দিনে মাত্র কয়েকটি কার্ড ঠিক করা হচ্ছে । ফলে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককেই । তাই এবার ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিস চত্বরে রাত কাটাতে শুরু করেছেন কেউ কেউ ।

NRC আতঙ্ক
author img

By

Published : Sep 18, 2019, 9:53 AM IST

Updated : Sep 18, 2019, 10:02 AM IST

মালদা, 18 সেপ্টেম্বর : গুজব ছড়িয়েছে রাজ্যজুড়ে খুব শিগগিরই চালু হতে চলেছে NRC । তার জেরে দেশ ছাড়তে হবে নাকি অনেককেই । এরপরই আধার কার্ড সংশোধন করতে ভিড় উপচে পড়ছে জেলায় জেলায় । একই ছবি মালদাতেও । একটি কেন্দ্রে সারা দিনে মাত্র 17টি কার্ড সংশোধন করা হয় । এদিকে, আবেদনকারীর সংখ্যা কোথাও হাজার, কোথাও বা তারও বেশি । তাই কেউ রাত কাটাচ্ছেন ব্যাঙ্কের গেটের বাইরে, কেউ বা পোস্ট অফিসের বারান্দায় ।

আধার কার্ড সংশোধন করতে ভোর থেকে সন্ধে পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও পোস্ট অফিসের সামনে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ । কারোর আধার কার্ডে নাম ভুল, কারোর আবার বয়স ভুল । সমস্যা হচ্ছে, প্রতিটি সংশোধন কেন্দ্রে দিনে মাত্র কয়েকটি কার্ড ঠিক করা হচ্ছে । ফলে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককেই । তাই এবার ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিস চত্বরে রাত কাটাতে শুরু করেছেন অনেকেই । গতরাতে মালদা শহরের অতুল মার্কেটের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে দেখা গেল বন্ধ গেটের সামনে প্লাস্টিকের চাদর বিছিয়ে ঘুমিয়ে রয়েছেন বেশ কয়েকজন । সবাই আধার কার্ড সংশোধনের জন্য এসেছেন ।

nrc
ব্যাঙ্কের গেটের সামনেই কাটছে রাত

আধার কার্ড সংশোধন করতে এসেছেন রতুয়া থানার পরানপুর গ্রামের বাসিন্দা রানা ঘোষ । বলেন, "গতকাল থেকে এখানে রয়েছি । আধার কার্ডে আমার বয়স ভুল রয়েছে । সেটা সংশোধন করতেই এখানে আসা । NRC চালু হলে আধার কার্ডের তথ্যে যাতে কোনও ভুল না থাকে তার জন্যই সংশোধন করতে এসেছি । এখানে অনেকেই আধার কার্ড সংশোধন করাতে এসে ফিরে যাচ্ছেন । কারণ, দিনে 17টির বেশি কার্ড সংশোধন করা হয় না । তাই বাধ্য হয়ে এখানেই রাত কাটাতে হচ্ছে । NRC নিয়ে আতঙ্কিত হয়েই নিজেদের আধার কার্ড সংশোধন করাতে আসছে সবাই । ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি ।"

মানিকচকের বাসিন্দা দুলাল হক আবার NRC-র নাম মুখে আনতেই চাইলেন না । গতকাল সকালে তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মালদা শাখায় নিজের আধার কার্ড সংশোধনের জন্য এসেছেন । বলেন, "আমার আধার কার্ড এখনও সংশোধন হয়নি । ব্যাঙ্ক থেকে বলেছে, প্রতিদিন 17টি করে কার্ড সংশোধন করা হবে । দিনে প্রায় দেড়শো মানুষ কার্ড সংশোধন না করাতে পেরে ফিরে যাচ্ছেন । এদিকে, ব্যাঙ্ক থেকে বলা হয়েছে রাতে যারা থাকবেন, তাঁদের কার্ডই সংশোধন হবে । আমার কার্ডে বয়স ভুল আছে । সংশোধন করাতে হবে । আমি ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করি । এবার বাড়ি এসেছি । কার্ড সংশোধন করিয়ে ফের চলে যাব । তবে NRC-র জন্য আমি কার্ড সংশোধন করাতে আসিনি ।"

আবেদনকারী ও স্থানীয়রা কী বলছেন, শুনে নেব

অতুল মার্কেটে একটি হোটেলে কাজ করেন বেলেঘাটার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ দাস । তিনি বলেন, "প্রতিদিন ব্যাঙ্কে আধার কার্ড সংশোধনের জন্য প্রচণ্ড ভিড় হচ্ছে । আমি মাস দুয়েক ধরে একই ছবি দেখছি । আধার কার্ড ঠিক করাতে এসে অনেকে দু-তিনদিন ধরে ব্যাঙ্কের সামনেই রাত কাটাচ্ছেন । NRC নিয়ে বাংলার মানুষের মনে একটা ভয় তৈরি হয়েছে । কার কী হবে, কে কোথায় থাকবে, তার ঠিক নেই । তাই আগে আধার কার্ড, তারপর ভোটার কার্ড ঠিক করার ধুম পড়েছে ।"

অতুল মার্কেটের ব্যবসায়ী বলাই সাহা বলেন, "আধার কার্ড সংশোধনের জন্য মাস দুয়েক ধরে মানুষ আসছে । দিন-রাত ব্যাঙ্কে ভিড় । সারারাত ধরে মানুষ ব্যাঙ্কের সামনে থাকছে । মনে হয় NRC নিয়েই আতঙ্কিত । তার জন্যই তড়িঘড়ি আধার কার্ড সংশোধন করাতে আসছে ।"

মালদা, 18 সেপ্টেম্বর : গুজব ছড়িয়েছে রাজ্যজুড়ে খুব শিগগিরই চালু হতে চলেছে NRC । তার জেরে দেশ ছাড়তে হবে নাকি অনেককেই । এরপরই আধার কার্ড সংশোধন করতে ভিড় উপচে পড়ছে জেলায় জেলায় । একই ছবি মালদাতেও । একটি কেন্দ্রে সারা দিনে মাত্র 17টি কার্ড সংশোধন করা হয় । এদিকে, আবেদনকারীর সংখ্যা কোথাও হাজার, কোথাও বা তারও বেশি । তাই কেউ রাত কাটাচ্ছেন ব্যাঙ্কের গেটের বাইরে, কেউ বা পোস্ট অফিসের বারান্দায় ।

আধার কার্ড সংশোধন করতে ভোর থেকে সন্ধে পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও পোস্ট অফিসের সামনে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ । কারোর আধার কার্ডে নাম ভুল, কারোর আবার বয়স ভুল । সমস্যা হচ্ছে, প্রতিটি সংশোধন কেন্দ্রে দিনে মাত্র কয়েকটি কার্ড ঠিক করা হচ্ছে । ফলে ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককেই । তাই এবার ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিস চত্বরে রাত কাটাতে শুরু করেছেন অনেকেই । গতরাতে মালদা শহরের অতুল মার্কেটের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে দেখা গেল বন্ধ গেটের সামনে প্লাস্টিকের চাদর বিছিয়ে ঘুমিয়ে রয়েছেন বেশ কয়েকজন । সবাই আধার কার্ড সংশোধনের জন্য এসেছেন ।

nrc
ব্যাঙ্কের গেটের সামনেই কাটছে রাত

আধার কার্ড সংশোধন করতে এসেছেন রতুয়া থানার পরানপুর গ্রামের বাসিন্দা রানা ঘোষ । বলেন, "গতকাল থেকে এখানে রয়েছি । আধার কার্ডে আমার বয়স ভুল রয়েছে । সেটা সংশোধন করতেই এখানে আসা । NRC চালু হলে আধার কার্ডের তথ্যে যাতে কোনও ভুল না থাকে তার জন্যই সংশোধন করতে এসেছি । এখানে অনেকেই আধার কার্ড সংশোধন করাতে এসে ফিরে যাচ্ছেন । কারণ, দিনে 17টির বেশি কার্ড সংশোধন করা হয় না । তাই বাধ্য হয়ে এখানেই রাত কাটাতে হচ্ছে । NRC নিয়ে আতঙ্কিত হয়েই নিজেদের আধার কার্ড সংশোধন করাতে আসছে সবাই । ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি ।"

মানিকচকের বাসিন্দা দুলাল হক আবার NRC-র নাম মুখে আনতেই চাইলেন না । গতকাল সকালে তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মালদা শাখায় নিজের আধার কার্ড সংশোধনের জন্য এসেছেন । বলেন, "আমার আধার কার্ড এখনও সংশোধন হয়নি । ব্যাঙ্ক থেকে বলেছে, প্রতিদিন 17টি করে কার্ড সংশোধন করা হবে । দিনে প্রায় দেড়শো মানুষ কার্ড সংশোধন না করাতে পেরে ফিরে যাচ্ছেন । এদিকে, ব্যাঙ্ক থেকে বলা হয়েছে রাতে যারা থাকবেন, তাঁদের কার্ডই সংশোধন হবে । আমার কার্ডে বয়স ভুল আছে । সংশোধন করাতে হবে । আমি ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করি । এবার বাড়ি এসেছি । কার্ড সংশোধন করিয়ে ফের চলে যাব । তবে NRC-র জন্য আমি কার্ড সংশোধন করাতে আসিনি ।"

আবেদনকারী ও স্থানীয়রা কী বলছেন, শুনে নেব

অতুল মার্কেটে একটি হোটেলে কাজ করেন বেলেঘাটার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ দাস । তিনি বলেন, "প্রতিদিন ব্যাঙ্কে আধার কার্ড সংশোধনের জন্য প্রচণ্ড ভিড় হচ্ছে । আমি মাস দুয়েক ধরে একই ছবি দেখছি । আধার কার্ড ঠিক করাতে এসে অনেকে দু-তিনদিন ধরে ব্যাঙ্কের সামনেই রাত কাটাচ্ছেন । NRC নিয়ে বাংলার মানুষের মনে একটা ভয় তৈরি হয়েছে । কার কী হবে, কে কোথায় থাকবে, তার ঠিক নেই । তাই আগে আধার কার্ড, তারপর ভোটার কার্ড ঠিক করার ধুম পড়েছে ।"

অতুল মার্কেটের ব্যবসায়ী বলাই সাহা বলেন, "আধার কার্ড সংশোধনের জন্য মাস দুয়েক ধরে মানুষ আসছে । দিন-রাত ব্যাঙ্কে ভিড় । সারারাত ধরে মানুষ ব্যাঙ্কের সামনে থাকছে । মনে হয় NRC নিয়েই আতঙ্কিত । তার জন্যই তড়িঘড়ি আধার কার্ড সংশোধন করাতে আসছে ।"

Intro:মালদা, 18 সেপ্টেম্বর : এনআরসি আতঙ্কে ভুগছে গোটা রাজ্য। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মেনে রাজ্য জুড়ে এখন আধার কার্ড সংশোধন করতে ভিড় উপচে পড়ছে। একই ছবি মালদা জেলা জুড়েও। আধার কার্ড সংশোধন করতে প্রতিদিন বিভিন্ন ব্যাংক ও পোস্ট অফিসে ভিড় জমাচ্ছে সাধারণ মানুষ। শুধু দিনে নয়, অনেকের রাত কাটছে আধার কার্ড সংশোধন কেন্দ্রের বন্ধ গেটের সামনে। কেউ কেউ আবার টানা কয়েক দিন রাত কাটাচ্ছে ঘরের বাইরে। সেই ছবি ধরা পড়েছে ইটিভি ভারতের ক্যামেরায়। আতঙ্কে মানুষ এনআরসি'র নামও মুখে আনতে চাইছে না।


Body:আধার কার্ড সংশোধন করতে প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধে পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন ব্যাংক ও পোস্ট অফিসের সামনে ভিড় করছে সাধারণ মানুষ। কারোর আধার কার্ডে নাম ভুল, কারোর আবার বয়স ভুল। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, প্রতিটি সংশোধন কেন্দ্রে দিনে মাত্র কয়েকটি কার্ড ঠিক করা হচ্ছে। ফলে ঘুরে যেতে হচ্ছে অনেক মানুষকে। তাই তারা এবার ব্যাংক বা পোস্ট অফিসেই রাত কাটাতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার রাতে মালদা শহরের অতুল মার্কেটে ইউকো ব্যাংকে দেখা গেল, বন্ধ গেটের সামনে প্লাস্টিকের চাদর বিছিয়ে ঘুমিয়ে রয়েছেন বেশ কয়েকজন। সবাই আধার কার্ড সংশোধনের জন্য এসেছেন। কিন্তু তাঁরা যে এনআরসি নিয়ে আতঙ্কিত, সেটা ক্যামেরার সামনে প্রকাশ করতে রাজি নন। তাতে যদি কেন্দ্রের নজরে পড়ে যান! নিজের আধার কার্ড সংশোধন করতে সেখানে এসেছেন রতুয়া থানার পরানপুর গ্রামের বাসিন্দা রানা ঘোষ। বললেন, "আমি গতকাল থেকে এখানে হত্যে দিয়ে পড়ে আছি। আধার কার্ডে আমার বয়স ভুল রয়েছে। সেটা সংশোধন করতেই এখানে আসা। এনআরসি চালু হলে আমার আধার কার্ডের কোনও তথ্যে যাতে কোনও ভুল না থাকে তার জন্যই কার্ড সংশোধন করতে এসেছি। এখানে অনেক মানুষ প্রতিদিন আধার কার্ড সংশোধন করাতে এসে ঘুরে যাচ্ছে। কারণ দিনে মাত্র 17টির বেশি কার্ড এখানে সংশোধন করা হয় না। তাই বাধ্য হয়ে এখানে রাত কাটাতে হচ্ছে। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। আমার মনে হয়, এনআরসি নিয়ে আতঙ্কিত মানুষ নিজেদের আধার কার্ড সংশোধন করাতে এখানে প্রতিদিন ভিড় করছে।"
মানিকচকের বাসিন্দা দুলাল হক আতঙ্কে এনআরসি'র নামই মুখে আনতে রাজি নন। মঙ্গলবার সকালে তিনি ইউকো ব্যাংকের মালদা শাখায় নিজের আধার কার্ড সংশোধনের জন্য এসেছেন। তিনি বলেন, "আমার আধার কার্ড এখনও সংশোধন হয়নি। ব্যাংক থেকে বলেছে, প্রতিদিন 17টি করে কার্ড সংশোধন করা হবে। দিনে প্রায় দেড়শো মানুষ কার্ড সংশোধন না করাতে পেরে ঘুরে যাচ্ছে। ব্যাংক থেকে বলে দেওয়া হয়েছে, রাতে যারা থাকবে, তাদের কার্ডই সংশোধন হবে। আমার কার্ডে বয়স ভুল আছে। ঠিক করাতে হবে। আমি ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করি। বাড়ি এসেছি। কার্ড ঠিক করিয়ে ফের বাইরে চলে যাব। তবে এনআরসি'র জন্য আমি কার্ড সংশোধন করাতে আসিনি।"


Conclusion:অতুল মার্কেটে একটি হোটেলে কাজ করেন কলকাতার বেলেঘাটার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ দাস। তিনি বলেন, "প্রতিদিন ব্যাংকে আধার কার্ড সংশোধনের জন্য প্রচণ্ড ভিড় হচ্ছে। আমি মাস দুয়েক ধরে একই ছবি দেখছি। মানুষ আধার কার্ড ঠিক করাতে এসে 2-3 দিন ধরে ব্যাংকের সামনেই রাত কাটাচ্ছে। আমি অনেককে থাকার জায়গা, জল, কাপড় ইত্যাদি দিয়েছি। আধার কার্ড নিয়ে কেন এত কড়াকড়ি, তা আমি জানি না। তবে এনআরসি নিয়ে বাংলার মানুষের মনে একটা ভয় তৈরি হয়েছে। কার কী হবে, কে কোথায় থাকবে, তার ঠিক নেই। তাই আগে আধার কার্ড, তারপর ভোটার কার্ড ঠিক করার ধুম পড়েছে।" ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী বলাই সাহা বলেন, "মানুষ আধার কার্ড সংশোধনের জন্য মাস দুয়েক ধরে আসছে। দিন-রাত ব্যাংকে ভিড়। সারারাত ধরে মানুষ ব্যাংকের সামনে থাকছে। তাদের দেখে আমাদেরই কষ্ট হয়। তাদের যতটা সম্ভব সাহায্য করি। আমি জানি না কেন মানুষের এই আতঙ্ক। তবে মনে হয় এনআরসি নিয়েই মানুষ আতঙ্কিত। আমি সেটাই শুনেছি। তার জন্যই মানুষ তড়িঘড়ি আধার কার্ড সংশোধন করাতে আসছে।"
Last Updated : Sep 18, 2019, 10:02 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.