ETV Bharat / state

Govt Hospital: জমা জলে মশার লার্ভা, ওয়ার্ডে কুকুর-বিড়াল! সরকারি হাসপাতালের দুর্দশায় ক্ষুব্ধ রোগীদের পরিবার

Govt Hospital Situation in Malda: ডেঙ্গি সতর্কতা বোর্ডের পাশেই জমা জলে মশার লার্ভা ৷ ওয়ার্ডে নির্দ্বিধায় ঘুরে বেড়াচ্ছে চারপেয়েরা ৷ সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 17, 2023, 6:29 PM IST

Govt Hospital Situation in Malda
আড়াইডাঙা গ্রামীণ হাসপাতাল
সরকারি হাসপাতালের পরিষেবায় ক্ষুব্ধ রোগীদের পরিবার

মালদা, 17 অক্টোবর: দেওয়ালে ডেঙ্গি সতর্কতার পোস্টার ৷ পাশে জমা জলে থিকথিক করছে মশা ৷ কিলবিল করছে মশার লার্ভাও ৷ এই দৃশ্য খোদ সরকারি হাসপাতালে ৷ এখানেই অবশ্য শেষ নয় ৷ ওয়ার্ডের ভিতরে মেঝেতে শুয়ে রয়েছেন রোগী, সঙ্গী কুকুর-বিড়াল, এমনকী ছাগলও ৷ যদি কোনও রোগী মেঝেতে বসে খাবার খান, মুহূর্তে চলে আসে বিড়ালের দল ৷ সুযোগ পেলে রোগীর থালা থেকেই খাবার তুলে নিয়ে যায় ৷ এসব নিয়ে রোগী ও পরিজনরা ক্ষুব্ধ ৷ তবে পুজোর আগে হাসপাতালের জমা জল সাফাই করার কাজে হাত পড়েছে ৷ কিন্তু ভিতরের পরিস্থিতি এখনও একইরকম ৷ ঘটনাটি রতুয়া-2 নম্বর ব্লকের আড়াইডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালের ৷ জেলার স্বাস্থ্যকর্তা অবশ্য ছবি বদলের আশ্বাস দিয়েছেন ৷

Govt Hospital Situation in Malda
আড়াইডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালের ভেতরে ঘুরে বেড়াচ্ছে ছাগল

অসুস্থ মেয়ে হাসপাতালে ভরতি ৷ মেয়েকে পাশেই রয়েছেন পরাণপুর লালবাথানি গ্রামের সাগরি সরকার বলেন, "এখানে চিকিৎসা ভালোই হয় ৷ ডাক্তারবাবুরা ভালো চিকিৎসা করেন ৷ কিন্তু ওয়ার্ডের মধ্যে কুকুর-বিড়াল থেকে ছাগল পর্যন্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ খাবারে মুখ দিচ্ছে ৷ কেউ দায়িত্ব নিয়ে এই পশুগুলোকে সরায় না ৷ রোগী কিংবা বাড়ির লোকজনরাই ওদের তাড়াচ্ছে ৷ কিন্তু আমরাও তো সবসময় রোগীর পাশে থাকতে পারছি না ৷ বিভিন্ন কাজে আমাদের বাইরে যেতে হচ্ছে ৷ এথেকে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যায় ৷ ডাক্তারবাবু কিংবা স্বাস্থ্যকর্মীরা সবই দেখছেন ৷ কিন্তু কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না ৷"

জ্বর হয়েছে ছেলের ৷ তাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন রাজাপুর গ্রামের মহম্মদ ধুলু শেখ ৷ সরকারি হাসপাতালের এই দশা দেখে ক্ষুব্ধ তিনি ৷ জানালেন, হাসপাতালে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব রয়েছে ৷ পানীয় জল, শৌচাগারের ব্যবস্থাও খুব ভালো নয় ৷ রোগীদের বাইরে যেতে হচ্ছে ৷ এখন জেলা জুড়ে ডেঙ্গি হচ্ছে ৷ অথচ এখানে ডেঙ্গি আক্রান্তদের মশারি ছাড়াই রাখা হয়েছে ৷ এই হাসপাতালে রোগীর তুলনায় বেডের সংখ্যা কম ৷ তাই রোগীরা মাটিতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন ৷ অনেক রোগী বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ৷ তিনি বলেন, "আমরা চাই, হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুক ৷ কিন্তু এর জন্য রোগী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এলাকার মানুষজনকেও এগিয়ে আসতে হবে ৷ শুধু চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর ভরসা করে থাকলে চলবে না ৷ এখানকার মানুষই যদি হাসপাতালের সমস্যা দূর করতে এগিয়ে না আসে, তবে আমরা কী করতে পারি !"

আরও পড়ুন: বেশিরভাগ রোগীরই সেলাই শুকোচ্ছে না, হচ্ছে সংক্রমণ; সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় ক্ষোভ

50 শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ভরতি থাকেন 125 জন রোগী ৷ এতে পরিকাঠামোরগত অভাব প্রকট হয়ে ওঠে ৷ এসব নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ৷ তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি জানান, "ওই হাসপাতাল চত্বরে জমা জল-সহ আবর্জনা সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ তবে ওয়ার্ডের ভিতরে কুকুর-বিড়ালের প্রবেশ রুখতে মানুষকেই সচেতন হতে হবে ৷ কারণ, গ্রামীণ হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করার কোনও নির্দেশ আমাদের নেই ৷ অন্যান্য অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমি বিএমওএইচের সঙ্গে কথা বলছি ৷"

সরকারি হাসপাতালের পরিষেবায় ক্ষুব্ধ রোগীদের পরিবার

মালদা, 17 অক্টোবর: দেওয়ালে ডেঙ্গি সতর্কতার পোস্টার ৷ পাশে জমা জলে থিকথিক করছে মশা ৷ কিলবিল করছে মশার লার্ভাও ৷ এই দৃশ্য খোদ সরকারি হাসপাতালে ৷ এখানেই অবশ্য শেষ নয় ৷ ওয়ার্ডের ভিতরে মেঝেতে শুয়ে রয়েছেন রোগী, সঙ্গী কুকুর-বিড়াল, এমনকী ছাগলও ৷ যদি কোনও রোগী মেঝেতে বসে খাবার খান, মুহূর্তে চলে আসে বিড়ালের দল ৷ সুযোগ পেলে রোগীর থালা থেকেই খাবার তুলে নিয়ে যায় ৷ এসব নিয়ে রোগী ও পরিজনরা ক্ষুব্ধ ৷ তবে পুজোর আগে হাসপাতালের জমা জল সাফাই করার কাজে হাত পড়েছে ৷ কিন্তু ভিতরের পরিস্থিতি এখনও একইরকম ৷ ঘটনাটি রতুয়া-2 নম্বর ব্লকের আড়াইডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালের ৷ জেলার স্বাস্থ্যকর্তা অবশ্য ছবি বদলের আশ্বাস দিয়েছেন ৷

Govt Hospital Situation in Malda
আড়াইডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালের ভেতরে ঘুরে বেড়াচ্ছে ছাগল

অসুস্থ মেয়ে হাসপাতালে ভরতি ৷ মেয়েকে পাশেই রয়েছেন পরাণপুর লালবাথানি গ্রামের সাগরি সরকার বলেন, "এখানে চিকিৎসা ভালোই হয় ৷ ডাক্তারবাবুরা ভালো চিকিৎসা করেন ৷ কিন্তু ওয়ার্ডের মধ্যে কুকুর-বিড়াল থেকে ছাগল পর্যন্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ খাবারে মুখ দিচ্ছে ৷ কেউ দায়িত্ব নিয়ে এই পশুগুলোকে সরায় না ৷ রোগী কিংবা বাড়ির লোকজনরাই ওদের তাড়াচ্ছে ৷ কিন্তু আমরাও তো সবসময় রোগীর পাশে থাকতে পারছি না ৷ বিভিন্ন কাজে আমাদের বাইরে যেতে হচ্ছে ৷ এথেকে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকেই যায় ৷ ডাক্তারবাবু কিংবা স্বাস্থ্যকর্মীরা সবই দেখছেন ৷ কিন্তু কেউ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না ৷"

জ্বর হয়েছে ছেলের ৷ তাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন রাজাপুর গ্রামের মহম্মদ ধুলু শেখ ৷ সরকারি হাসপাতালের এই দশা দেখে ক্ষুব্ধ তিনি ৷ জানালেন, হাসপাতালে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব রয়েছে ৷ পানীয় জল, শৌচাগারের ব্যবস্থাও খুব ভালো নয় ৷ রোগীদের বাইরে যেতে হচ্ছে ৷ এখন জেলা জুড়ে ডেঙ্গি হচ্ছে ৷ অথচ এখানে ডেঙ্গি আক্রান্তদের মশারি ছাড়াই রাখা হয়েছে ৷ এই হাসপাতালে রোগীর তুলনায় বেডের সংখ্যা কম ৷ তাই রোগীরা মাটিতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন ৷ অনেক রোগী বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ৷ তিনি বলেন, "আমরা চাই, হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুক ৷ কিন্তু এর জন্য রোগী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এলাকার মানুষজনকেও এগিয়ে আসতে হবে ৷ শুধু চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর ভরসা করে থাকলে চলবে না ৷ এখানকার মানুষই যদি হাসপাতালের সমস্যা দূর করতে এগিয়ে না আসে, তবে আমরা কী করতে পারি !"

আরও পড়ুন: বেশিরভাগ রোগীরই সেলাই শুকোচ্ছে না, হচ্ছে সংক্রমণ; সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসায় ক্ষোভ

50 শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ভরতি থাকেন 125 জন রোগী ৷ এতে পরিকাঠামোরগত অভাব প্রকট হয়ে ওঠে ৷ এসব নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ৷ তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি জানান, "ওই হাসপাতাল চত্বরে জমা জল-সহ আবর্জনা সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ তবে ওয়ার্ডের ভিতরে কুকুর-বিড়ালের প্রবেশ রুখতে মানুষকেই সচেতন হতে হবে ৷ কারণ, গ্রামীণ হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করার কোনও নির্দেশ আমাদের নেই ৷ অন্যান্য অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমি বিএমওএইচের সঙ্গে কথা বলছি ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.