মালদা, 1 সেপ্টেম্বর : চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর ৷ খবর পেয়ে সেখানে যান হাসপাতালের ডেপুটি সুপার৷ ঘটনাস্থানে যায় ইংরেজবাজার থানার পুলিশও ৷ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ জমা না পড়লেও বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷
মৃত রোগীর নাম সরস্বতী সরকার (৫৪)৷ তিনি হবিবপুর ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাইবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার তলপেটে ব্যথা নিয়ে মালদা মেডিকেলে ভরতি হন সরস্বতীদেবী ৷ অভিযোগ, গতকাল সন্ধেয় চিকিৎসকরা সরস্বতীদেবীকে একটি ইনজেকশন দেন ৷ রাতে সরস্বতীদেবীর যন্ত্রণা আরও বাড়তে থাকে ৷ তখন পরিবারের লোকজন একাধিকবার নার্সদের ডাকাডাকি করলেও নার্সরা রোগীকে দেখতে যায়নি ৷
আজ সকালে মৃত্যু হয় সরস্বতীদেবীর ৷ এরপরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে পরিবারের লোকজন ৷ ঘটনার প্রতিবাদ জানান তাঁরা ৷ খবর পেয়ে সেখানে যান ডেপুটি সুপার তাপস ঘোষ৷ সকাল আটটা নাগাদ ডাক্তাররা এসে সরস্বতীদেবীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷
সরস্বতীদেবীর আত্মীয় বিউটি মণ্ডল জানান, " রাতে নার্সদের ডাকতে যাওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু তারা কেউ রোগীকে দেখতে আসেনি ৷ রাত আটটায় একবার এসেছিল, তারপরে বারবার ডাকা হলেও কেউ আসেনি ৷ শুধুমাত্র চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয়েছে তাঁর৷ সকালে মৃত্যুর পরে ডাক্তাররা যন্ত্রপাতি নিয়ে চিকিৎসা করতে এসেছিল ৷ মৃত রোগীর কিভাবে চিকিৎসা হয়? না, মৃত রোগীকে জীবিত করা যায়? এভাবেই কি হাসপাতালের পরিষেবা চলতে থাকবে? "
আরও পড়ুন :RG কর হাসপাতাল থেকে উধাও রোগী
সরস্বতীদেবীর ছেলে তপন বলেন, " মাকে ভরতি করার পর তিনদিন ধরে শুধুমাত্র স্যালাইন মধ্যে দিয়ে ব্যথার ওষুধ দেওয়া হয়েছে ৷ গতকাল সন্ধে থেকে মায়ের প্রচণ্ড যন্ত্রণা হতে থাকে৷ রাতে ডাক্তার এসে চিকিৎসা না করেই জানায় যে মায়ের চিকিৎসা সঠিকভাবে চলছে৷ ভোরে আমাকে হাসপাতালের ভেতরে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেই সময় আমাকে জানানো হয় মায়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ ৷ মাকে কলকাতায় নিয়ে যেতে হবে ৷ তারপরেই মৃত্যু হয় তাঁর ৷ চিকিৎসার গাফিলতিতেই মায়ের মৃত্যু হয়েছে ৷ খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ আসে৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ডাক্তার ও নার্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাব ৷ "
হাসপাতালের ডেপুটি সুপার তাপন ঘোষ জানান, " দুঃখজনক ঘটনা ৷ মালদা মেডিকেলের মাতৃ-মা বিভাগে একজন মারা গিয়েছেন ৷ সমস্ত ঘটনা রোগীর পরিবারের মুখ থেকে শুনেছি৷ একটি কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্ত করা হবে ৷ রোগীর পরিবারের তরফ থেকে মৌখিকভাবে বেশ কিছু অভিযোগ করা হয়েছে ৷ আমরা তদন্ত করে রিপোর্ট উপর মহলে পাঠিয়ে দেব ৷ "