মালদা, 23 এপ্রিল : লকডাউনে বন্ধ রয়েছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৷ কিন্তু পড়ুয়াদের পড়াশোনা থেমে থাকলে চলবে না ৷ ইতিমধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে পড়ুয়াদের পাঠদান শুরু করেছে ৷ গৃহশিক্ষকদের অনেকেও এই পদ্ধতির প্রয়োগ শুরু করে দিয়েছেন ৷ এবার একই পথে পা বাড়িয়েছে মালদা মেডিকেল কলেজ ৷ কোরোনার জেরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত হস্টেল ৷ পড়ুয়ারা সবাই নিজেদের বাড়িতে ৷ দীর্ঘদিন কলেজ বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের পড়াশোনায় যাতে তেমন কোনও প্রভাব না পড়ে তার জন্য শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস ৷ জানা গেছে, প্রায় 90 শতাংশ পড়ুয়া এই ক্লাসে ইতিমধ্যে যোগ দিয়েছে ৷ এই ক্লাসে ব্যবহার করা হচ্ছে জুম অ্যাপ ৷
মালদা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, " দীর্ঘদিন ধরে কলেজ বন্ধ থাকায় তার প্রভাব পড়ছিল পড়াশোনায় ৷ কলেজের পড়ুয়ারা পিছিয়ে পড়ছিল ৷ সেকারণেই আমরা অনলাইন ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত নিই ৷ এতে পড়ুয়াদেরও ভালো সাড়া মিলেছে ৷ প্রায় 90 শতাংশ পড়ুয়া ইতিমধ্যে এই ক্লাসে যোগ দিয়েছে ৷ লকডাউন শুরুর আগেই পড়ুয়াদের হস্টেল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ৷ তারা বাড়িও চলে যায় ৷ এতদিন ফোনে অধ্যাপকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা পড়াশোনা চালাচ্ছিল ৷ এবার তাদের সরাসরি পাঠদান করা হচ্ছে ৷"
আপাতত মেডিকেলের প্রথম ও দ্বিতীয় সেমেস্টারের সঙ্গে তৃতীয় সেমেস্টারের পার্ট 2-এর ক্লাস পুরোপুরি অনলাইনে শুরু হয়েছে ৷ তৃতীয় সেমেস্টারের পার্ট 1-এর ক্লাস এখনও তেমনভাবে শুরু হয়নি ৷ কারণ, এখানে এখনও পর্যন্ত পড়ুয়াদের তেমন একটা সাড়া পাওয়া যায়নি ৷ গোটা বিষয়টি চলছে কলেজের ডিন নির্মল মণ্ডলের তত্ত্বাবধানে ৷ প্রতিটি ক্লাস হচ্ছে এক ঘণ্টার ৷ এর মধ্যে 45 মিনিট শিক্ষকরা পাঠদান করছেন ৷ বাকি 15 মিনিট পড়ুয়ারা নিজেদের প্রশ্ন নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করছে ৷ প্রত্যেক পড়ুয়াকে হোয়াটস্ অ্যাপ গ্রুপে নিয়ে আসা হয়েছে ৷ ক্লাস শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে সেই গ্রুপে পড়ুয়াদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে ৷ নির্দিষ্ট সময়ে নিজেদের জুম অ্যাপের মাধ্যমে পড়ুয়ারা ক্লাসে অংশ নিচ্ছে ৷ তার জন্য প্রত্যেক পড়ুয়াকে ID ও পাসওয়ার্ড দিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ নির্মলবাবু বলেন, " আপাতত থিওরি ক্লাস করা হচ্ছে ৷ পরবর্তীতে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসও শুরু করার চিন্তাভাবনা রয়েছে ৷ হয়ত এই পদ্ধতিতে 100 শতাংশ প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করা সম্ভব হবে না ৷ কিন্তু ভিডিয়ো দেখে পড়ুয়ারা অনেকটাই শিখতে পারবে বলে আমরা মনে করছি ৷"
জানা যাচ্ছে, জুম অ্যাপ ব্যবহার নিয়ে প্রথমে পড়ুয়াদের তরফেও নিরাপত্তাজনিত প্রশ্ন উঠেছিল ৷ সেদিকটা মাথায় রেখে কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রায় প্রতিটি ক্লাসের আগেই সবাই ID ও পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে দিচ্ছে ৷ এতে পড়ুয়াদের তরফেও আর কোনও প্রশ্ন ওঠেনি ৷ তারা সাগ্রহে অনলাইন ক্লাসে যোগ দিয়েছে ৷