মালদা, 3 নভেম্বর : বাড়ির ভিটার সীমানায় বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই প্রতিবেশীর বিবাদে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল চাঁচল থানার যদুপুর গ্রাম ৷ বিবাদকে কেন্দ্র করে চলল গুলি ৷ গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে ৷ ধারালো অস্ত্রের কোপে জখম হয়েছে আরও একজন ৷ তাঁকে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে ৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যদুপুর গ্রামে উত্তেজনা ছড়ায় ৷ গ্রামে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ ৷
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ যদুপুর গ্রামের মরবেজ আলি ও তাঁর ভাই মমরেজ আলি নিজেদের পৈতৃক বাড়ির ভিটের সীমানায় বেড়া দিচ্ছিলেন ৷ সেই সময় প্রতিবেশী সুকবর আলি তাঁদের জমি দিতে বাধা দেয় ৷ এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয় ৷ হঠাৎ সুকবরের ছেলে বাবলু আলি হাতে পিস্তল নিয়ে বেরিয়ে আসে ৷ কোনও কথা না বলে সে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে ৷ একটি গুলি লাগে মরবেজ আলির বুকে ৷ এদিকে সুকবর আলিও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মরবেজের ভাই মমরেজকে কোপাতে থাকে ৷ ততক্ষণে গ্রামের লোকজন ঘটনাস্থানে ছুটে আসে ৷ অত লোক দেখে সেখান থেকে সুকবর ও বাবলু পালিয়ে যায় ৷ গ্রামবাসীদের সঙ্গে পরিবারের লোকজন দ্রুত দু’জনকে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ মরবেজকে রেফার করে দেওয়া হয় মালদা মেডিকেলে ৷ কিন্তু রাস্তাতেই তাঁর মৃত্যু হয় ৷
মরবেজ আলির জামাই রহমান শেখ বলেন, “সুকবর আলি আমার শ্বশুরমশাইয়ের জায়গা দখল করার চেষ্টা করছিল৷ আজ সকালে সেই বিবাদ চরমে ওঠে ৷ সেই সময় তাঁরা আমার শ্বশুরমশাইকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ৷ ওরা দু’তিনটে পিস্তল নিয়ে ঘুরছিল ৷ বছরখানেক ধরেই এই অশান্তি চলছে ৷ সুকবররা বলছে, তারা নাকি জায়গাটা কিনেছে ৷ কিন্তু সেখানে আমার শ্বশুরমশাইরা প্রায় 25 বছর ধরে বসবাস করে আসছে ৷ সুকবরদের সঙ্গে আমাদের কোনও আত্মীয়তা নেই ৷"
এলাকার বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই এই জমি নিয়ে সুকবর আর মরবেজদের মধ্যে ঝামেলা চলছে ৷ আজ সকালে মরবেজের বুকে ওরা গুলি চালায় ৷ মমরেজের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত করে ৷ ওরা আজ পিস্তল দিয়েই গুলি চালায় ৷"
মরবেজের মেয়ে বলেন, "ওই জায়গাটা আমার বাবা আর দাদা কিনেছিল৷ এই জায়গা নিয়ে এক বছর ধরে সুকবরদের সঙ্গে ঝামেলা চলছে ৷ এর আগেও একবার মারামারি হয়েছিল ৷ সেই সময় মিটমাটও হয়ে যায় ৷ কিন্তু ওরা তলে তলে যে আরও বড় ঝামেলা পাকানোর চেষ্টায় ছিল, বুঝতে পারিনি ৷ আজ ওরা আমার ভাইকে গুলি করে মারতে চেয়েছিল ৷ কিন্ত সেই জায়গায় সুকবরের ছেলে বাবলু বাবাকে গুলি করে মেরে ফেলেছে ৷ সে চার রাউন্ড গুলি চালিয়েছে ৷"
এদিকে ঘটনার খবর পেয়েই গ্রামে যায় চাঁচল থানার পুলিশ ৷ থানার IC সুকুমার ঘোষ জানিয়েছেন, "গ্রামে উত্তেজনা কমাতে পুলিশি টহল চলছে ৷ মৃত ব্যক্তির দেহ মালদা মেডিকেলে পাঠিয়ে ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ৷ অভিযুক্তরা সবাই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে ৷ তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে ৷"